শুক্রবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা
সহযোগী সংগঠনে বেহাল দুই দল

সম্মেলনের ১০ মাসেও কমিটি পায়নি ৬ সহযোগী সংগঠন

রফিকুল ইসলাম রনি

সম্মেলনের ১০ মাসেও কমিটি পায়নি ৬ সহযোগী সংগঠন

আওয়ামী লীগের ছয়টি সহযোগী সংগঠনের সম্মেলনের ১০ মাস পার হলেও এখনো পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন হয়নি। ফলে পদপ্রত্যাশীদেরও অপেক্ষা শেষ হচ্ছে না। কবে নাগাদ কমিটি ঘোষণা করা হবে তাও কেউ জানে না। সহযোগী সংগঠন ছয়টি হলো- যুবলীগ, কৃষক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, মৎস্যজীবী লীগ ও মহিলা শ্রমিক লীগ। কমিটি গঠনে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ডের দফায় দফায় আলটিমেটামের পর পাঁচ সহযোগী সংগঠন কৃষক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, মৎস্যজীবী লীগ ও মহিলা শ্রমিক লীগ দলীয় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কমিটি জমা দিয়েছে। তবে যুবলীগ এখনো পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে জমা দিতে পারেনি। গত বছরের নভেম্বর মাসে পাঁচ সহযোগী সংগঠনের সম্মেলন হলেও পদপ্রত্যাশীরা ১০ মাস অপেক্ষায় রয়েছেন। খসড়া তালিকা জমা দেওয়ার সর্বশেষ সময় ছিল গত ১৫ সেপ্টেম্বর। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা বলছেন, পাঁচ সহযোগী সংগঠনের একসঙ্গে কমিটি ঘোষণা করা হবে। অর্থাৎ এক যুবলীগের কারণেই আটকে আছে অন্যদের কমিটি ঘোষণা। গত বছরের ৬ নভেম্বর কৃষক লীগের সম্মেলনের মাধ্যমে শুরু হয় এ সম্মেলনযজ্ঞ। ৯ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয় ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন জাতীয় শ্রমিক লীগের সম্মেলন। ১২ নভেম্বর মহিলা শ্রমিক লীগের। ১৬ নভেম্বর স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ২৩ নভেম্বর যুবলীগ এবং ২৯ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয় মৎস্যজীবী লীগের সম্মেলন। এসব সংগঠনকে এক সপ্তাহ থেকে এক মাস সময় বেঁধে দেওয়া হয় পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেওয়ার জন্য। এর মধ্যে ২৩ নভেম্বর কৃষক লীগ এবং ডিসেম্বর মাসে জাতীয় শ্রমিক লীগ পূর্ণাঙ্গ কমিটি দলের হাইকমান্ডে জমা দিয়েছেন। বাকি সংগঠনগুলো কমিটি যথা সময়ে জমা দেয়নি। আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, দলের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৪ ফেব্রুয়ারি সরকারি সফরে ইতালি যাওয়ার আগে সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের মৌখিকভাবে সংগঠনগুলোর পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার নির্দেশনা দিয়ে যান। দলীয় প্রধানের নির্দেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন। তিনি ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সহযোগী সংগঠনগুলোকে কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে নির্দেশ দেন। তাতেও কাজ হয়নি। অতি সম্প্রতি আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্পাদকমন্ডলীর সভায় গত ১৫ সেপ্টেম্বর কমিটি জমা দানের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। যুবলীগের দুই শীর্ষ নেতার দাবি, ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের পর অনেক যাচাই-বাছাই করে কমিটি করতে গিয়ে দেরি হচ্ছে। এর মধ্যে আবার উপনির্বাচন, ঢাকা সিটি নির্বাচন, করোনা, বন্যার নানা সমস্যা ছিল। যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মইনুল হোসেন খান নিখিল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘সিটি নির্বাচন, করোনা, বন্যাসহ নানা কারণে আমাদের কমিটি করতে দেরি হয়েছে। আশা করি খুব শিগগিরই খসড়া তালিকা দলের হাইকমান্ডের কাছে জমা দিতে সক্ষম হব।’ কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, গত ২৯ নভেম্বর আমরা সাংগঠনিক নেত্রী আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কাছে কমিটির খসড়া তালিকা জমা দিয়েছি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, সিটি করপোরেশন নির্বাচন, বন্যা, করোনার কারণে এখনো কমিটি অনুমোদন পায়নি। আশা করছি দ্রুতই কমিটি অনুমোদন পাব। স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজাল বাবু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমরা খসড়া কমিটি চূড়ান্ত করে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিয়েছি। মৎস্যজীবী লীগের সাধারণ সম্পাদক লায়ন শেখ আজগর নস্কর বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমরা গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ১১১ সদস্যের কমিটি আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের হাতে তুলে দিয়েছি। তারা অনুমোদন করলেই আমরা জোরালোভাবে কাজ শুরু করব।’ জাতীয় শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক কে এম আজম খসরু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমরা খসড়া তালিকা আমাদের সাংগঠনিক নেত্রী আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে তুলে দিয়েছি। যাচাই-বাছাই শেষে চূড়ান্ত অনুমোদন করলেই তা গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হবে। সাংগঠনিক কাজ পুরোদমে শুরু করব।’ মহিলা শ্রমিক লীগের সভাপতি সুরাইয়া আক্তার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমরা প্রস্তাবিত কমিটি আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছে জমা দিয়েছি। এখন প্রস্তাবিত কমিটি নিয়েই কাজ করছি। দলের হাইকমান্ডের অনুমোদনের অপেক্ষায় আছি।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর