রবিবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা
ইন্টার্ন চিকিৎসককে নির্যাতন

তিনবার বমি করার পরও পেটানো হয় ভেঙে দেয় পা

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

সহপাঠীদের হাতে নির্যাতনের শিকার ইন্টার্ন চিকিৎসক এ এস এম আলী ইমাম চিকিৎসা শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হলে ফিরতে পারছেন না। নির্যাতনের ঘটনা উল্লেখ করে গতকাল তিনি বলেন, ‘তিনবার বমি করার পরও আমাকে পেটানো হয়। ভেঙে দেয় পা।’ গত ১৪ জানুয়ারি রাতের এই ঘটনার দুই দিন পর গঠিত হয় তদন্ত কমিটি। মামলা হয় চকবাজার থানায়।

মামলায় যেমন কেউ গ্রেফতার নেই, তদন্তেও হয়নি কোনো অগ্রগতি। ১৭ জানুয়ারি গঠিত তদন্ত কমিটির পাঁচ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার কথা ছিল। তবে, কমিটি আরও ১০ দিন সময় বাড়িয়েছে। কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. শেখ নুরুল ফাত্তাহ রুমী বলেন, যেহেতু তদন্ত চলছে। তাই এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চাই না। একই ঘটনায় ভুক্তভোগী আলী ইমামের দায়ের করা মামলা সম্পর্কে পুলিশের বক্তব্য- ‘বিষয়টির তদন্ত চলছে।’ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ১৪ জানুয়ারির ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি ১০ ফেব্রুয়ারি প্রতিবেদন জমা  দেবেন। প্রতিবেদন পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অন্য নির্যাতনের ঘটনা সম্পর্কে তিনি বলেন, হলে শিক্ষার্থী নির্যাতনের কোনো অভিযোগ পাইনি। এর আগে যদি হয়ে থাকে, সেগুলো নিশ্চয়ই সমাধান করা হয়েছে। না হয়ে থাকলে আমরা চেষ্টা করছি, কীভাবে সেগুলো সমাধান করা যায়। 

জানা গেছে, গত ১৪ জানুয়ারি রাতে ঢামেকের শহীদ ডা. ফজলে রাব্বি হলের পুকুরপাড়ে সহপাঠীদের হাতে নির্যাতনের শিকার হন ইন্টার্ন চিকিৎসক এএসএম আলী ইমাম। তাঁর অভিযোগ, ইন্টার্নশিপের রোস্টারের কথা বলে হলের পুকুরপাড়ে ডেকে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। ভুক্তভোগী আলী ইমাম বলেন, ‘আমাকে রড দিয়ে পিটিয়ে আহত করেন আমারই সহপাঠী ঢাকা মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকিউল ইসলাম ফুয়াদ, ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার খান ও ইশমাম আহমেদ। ঘটনাস্থলেই তিনবার বমি করি। এ সময় লাঠিসোটা নিয়ে কে-৭২ ব্যাচের সৈয়দ হাসান ইভেন, শেখ সোহেল, ইবরাহীম হাওলাদার, তানভীর আহমেদ আকাশ ও কে-৭৩ ব্যাচের ফয়সাল ইরতিজা আমাকে মারধর করে। এতে আমার বাম পা ভেঙে যায়। পুরো ঘটনার সময় টিভি রুমের বাইরে দাঁড়িয়ে পাহারা দেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি আল আমিন। তবে অভিযুক্তরা তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

এদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের হল থেকে একাধিক শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গত ২৯ নভেম্বর কে-৭৬ ব্যাচের রাকিব সায়মনকে মেরে রক্তাক্ত করা হয়। বেশ কয়েকজনকে হল থেকে বের করে দেওয়া হয়। গত ১২ জানুয়ারি কে-৭২ ব্যাচের ইন্টার্ন শিক্ষার্থী শাওন ও সিফাতকে মেরে হল থেকে বের করে দেওয়া হয়। তবে এটিকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা উল্লেখ করে কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি আল আমিন বলেন- শুনেছি, রোস্টার নিয়ে ঝামেলা হয়েছিল। উভয়পক্ষে ধস্তাধস্তি হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর