রাজধানীর মুগদার উত্তর মানিকনগর এলাকায় ‘কুমিল্লাপট্টি’তে ভয়াবহ আগুনের ঘটনা ঘটেছে। আগুনে বস্তির কয়েক শ টিনশেড ঘর সম্পূর্ণ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। তবে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। গতকাল বিকাল সোয়া ৩টার দিকে মুগদা গার্মেন্ট গলির পেছনে কুমিল্লাপট্টিতে আগুনের এ ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা বিকাল পৌনে ৫টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। জানা গেছে, আগুনের কারণে আশপাশের ভবনের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তারা দ্রুত নেমে পাশের সড়কে অবস্থান নেয়। এদিকে আগুনের ঘটনার পর পট্টির ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করতে দেখা গেছে। ফায়ার সার্ভিস কন্ট্রোল রুমের ডিউটি অফিসার লিমা খানম বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিট কাজ করে। দেড় ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এটা অনেকটা বস্তি এলাকার মতো। বেশিরভাগ ঘর টিনশেড হওয়ায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ জানা যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পট্টির ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দারা বলেন, কুমিল্লাপট্টিতে বড় আকারের শতাধিক ঘর রয়েছে। এসব ঘরের মধ্যে আবার ৩০০ থেকে ৪০০ ছোট ঘর রয়েছে। বিকাল সোয়া ৩টার দিকে হঠাৎ আগুনের সূত্রপাত হয়। তাৎক্ষণিক ফায়ার সার্ভিসকে কল করা হলেও তারা আসতে অনেক বিলম্ব করেছে। এ সময়ের মধ্যে আগুন পুরো পট্টিতে ছড়িয়ে পড়ে।
সরেজমিন দেখা গেছে, পুরো কুমিল্লাপট্টিতে টিনশেড ঘর। এর মধ্যে অনেক ঘর পিলারের ওপর নির্মিত ও কিছু ঘর পাকা দেওয়ালের ওপর টিনশেড দেওয়া। পট্টির দুই পাশে কয়েকটি ভবন রয়েছে। আগুনে পট্টির সব ঘর পুড়ে গেছে। আগুন লাগার পর তাড়াহুড়ো করে সবাই বাইরে বেরিয়ে আসেন। কেউ কোনো কিছু নিতে পারেননি।বাসিন্দারা জানান, পট্টির একটি ঘরে কাঠের চুলায় রান্না করার সময় আগুনের সূত্রপাত। মুহূর্তেই আগুন পুরো পট্টিতে ছড়িয়ে পড়ে।
পট্টির বাসিন্দা আলমাছ জানান, হঠাৎ আগুন আগুন শুনে বাইরে বেরিয়ে দেখি দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেওয়া হলেও তাদের পৌঁছতে দেরি হয়। এর মধ্যে পুরো পট্টিতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক সালেহ উদ্দিন জানান, বস্তির একটি ঘরের কাঠের চুলা থেকে আগুন লেগেছে বলে শুনেছি। তবে প্রকৃত কারণ বের করতে একটি তদন্ত কমিটি করা হবে। তারাই মূল কারণ খুঁজে বের করবে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে দেরি করেছে কুমিল্লাপট্টির বাসিন্দাদের এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, পট্টির অবস্থান নিশ্চিত হতে কিছুটা সময় লেগেছে। এ ছাড়া সেখানে যাওয়ার রাস্তাগুলো অনেক সরু হওয়ায় ফায়ার সার্ভিসকে দ্রুত পৌঁছতে বেগ পেতে হয়েছে।
মুগদা থানার ওসি প্রলয় কুমার সাহা জানান, কুমিল্লাপট্টির কবরস্থানের পাশে প্রায় ১০০ ঘর কয়েকজন মালিক মিলে বস্তির আদলে তৈরি করেছেন। আগুনে অধিকাংশ ঘর পুড়ে গেছে। তবে কোনো ধরনের হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।