বুধবার, ১৯ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

বাড়িতে চিকিৎসা ৯৫ শতাংশ রোগীর

♦ করোনায় আক্রান্ত মাত্র ৫ শতাংশ হাসপাতালে ভর্তি ♦ সাধারণ ও আইসিইউ শয্যা ফাঁকা হাসপাতালে

জয়শ্রী ভাদুড়ী

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণে প্রতিদিন আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। দেশে এখনো শরীরে থাকা ভাইরাসের সঙ্গে লড়ে যাচ্ছেন ৪৫ হাজার ৭০৯ জন। এর মধ্যে ৪৩ হাজার ৪৯৩ জন অর্থাৎ ৯৫ শতাংশ করোনা আক্রান্ত বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। সংক্রমণের হার কমে আসায় হাসপাতালের আইসিইউ ও সাধারণ শয্যায় কমছে রোগীর চাপ।

স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, দেশে এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৭ লাখ ৮২ হাজার ১২৯ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৭ লাখ ২৪ হাজার ২০৯ জন। করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১২ হাজার ২১১ জন। দেশে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসায় হাসপাতালে সাধারণ শয্যা রয়েছে ১১ হাজার ৯৯১টি, আইসিইউ শয্যা রয়েছে ১ হাজার ১৭১টি। হাসপাতালের সাধারণ শয্যায় বর্তমানে ভর্তি রয়েছেন ১ হাজার ৮৭৩ জন, আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৩৪৩ জন। সব মিলিয়ে বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২ হাজার ২১৬ জন, অর্থাৎ আক্রান্ত থাকা মানুষের ৫ শতাংশ। গতকাল রাজধানীর ৩ হাজার ৪৫০টি সাধারণ শয্যার মধ্যে খালি ছিল ২ হাজার ৭৫৭টি। করোনা রোগীদের জন্য বরাদ্দকৃত ৩৭৪টি আইসিইউর মধ্যে ফাঁকা ছিল ২৫১টি। কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালে ১৬৯ শয্যার মধ্যে ১৩৮ শয্যা ফাঁকা ছিল, ২৬টি আইসিইউর মধ্যে ফাঁকা ছিল ৯টি। কুর্মিটোলা হাসপাতালে ২৭৫টি শয্যার মধ্যে ১৬১টি শয্যা ফাঁকা ছিল, তবে কোনো আইসিইউ ফাঁকা ছিল না। শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে ১৭৪টি শয্যার মধ্যে ১৫৩ শয্যা ফাঁকা, ১৬টি আইসিইউর মধ্যে ফাঁক ১১টি। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৭০৫টি শয্যার মধ্যে ৪২৭টি শয্যা ফাঁকা, তবে কোনো আইসিইউ ফাঁকা নেই। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৩০ শয্যার মধ্যে ১৬৯ শয্যা ফাঁকা, ২০টি আইসিইউ শয্যার মধ্যে ১৭টি ফাঁকা। ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কভিড-১৯ হাসপাতালে ২৫০টি শয্যাতেই রোগী ভর্তি ছিল। তবে ২১২টি আইসিইউর মধ্যে ১৭২টি ফাঁকা। এ ব্যাপারে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘এখন আমাদের হাসপাতালে করোনা রোগীদের নির্ধারিত শয্যার ২ শতাংশ ফাঁকা আছে। সংকটাপন্নদের আমরা আইসিইউ দিতে পারছি। সবচেয়ে স্বস্তির কথা, মৃত্যুহার কমেছে। রোগীরা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।’ রাজধানীর বেসরকারি হাসপাতালে ১ হাজার ৮০১টি শয্যার মধ্যে ১ হাজার ৬৬০টি শয্যা ফাঁকা ছিল। আইসিইউ ৮৫৫টি শয্যার মধ্যে ফাঁকা ছিল ৬৬৫টি। আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৪০ শয্যার মধ্যে ১৩৭টি ফাঁকা ছিল, ২৬টি আইসিইউর মধ্যে ফাঁকা ছিল ২৫টি। আসগর আলী হাসপাতালে ৮১টির মধ্যে শয্যা ফাঁকা ছিল ৭১টি, আইসিইউ শয্যা ১৮টির মধ্যে ফাঁকা ছিল ১৫টি। স্কয়ার হাসপাতালে ৬৯টি শয্যার মধ্যে ৬৫টি ফাঁকা ছিল, ১৯টি আইসিইউ শয্যার মধ্যে ফাঁকা ছিল ১৭টি। এভারকেয়ার হাসপাতালে ৫৮টি শয্যার মধ্যে ৪৫টি ফাঁকা ছিল, ২১টি আইসিইউ শয্যার মধ্যে ফাঁকা ছিল ৮টি। অন্য বেসরকারি হাসপাতালগুলোরও একই অবস্থা। করোনা আক্রান্ত হয়ে বাড়িতে চিকিৎসাধীন আছেন বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত সোনিয়া শাহানাজ। তিনি বলেন, ‘আমার বাবা করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এরপর আমাদের পরিবারের চারজনের করোনা পরীক্ষায় পজিটিভ রিপোর্ট আসে। অন্য কোনো জটিলতা না থাকায় চিকিৎসকের পরামর্শে আমরা বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছি।’

সর্বশেষ খবর