শিরোনাম
রবিবার, ৮ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা
জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস আজ

মহামারীতেও থামেনি দুই মেগা প্রকল্পের কাজ

ডিসেম্বরে উৎপাদনে যাবে রামপাল, মাতারবাড়ী প্রকল্প আসবে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে

জিন্নাতুন নূর

করোনা মহামারীর মধ্যেও বিদ্যুতের দুই মেগা প্রকল্পের কাজ থেমে নেই। প্রকল্প দুটি হচ্ছে- বাগেরহাটে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার রামপাল সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রজেক্ট এবং ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াটের মাতারবাড়ী আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল ফায়ার্ড প্রজেক্ট। সরকারের মেগা প্রকল্পের মধ্যে এ দুটি প্রকল্প অন্যতম।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এরই মধ্যে রামপাল প্রকল্পের ৮০ শতাংশ এবং মাতারবাড়ী প্রকল্পের ৫৪ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, চলতি বছরের ডিসেম্বরেই রামপাল প্রকল্পের প্রথম ইউনিটটি উৎপাদনে যাবে। আর মাতারবাড়ী প্রকল্পটি ২০২৪ সালের জুলাই মাসে বিদ্যুৎ উৎপাদনে যাবে। মাতারবাড়ীতে কাজ ততটা বাধাগ্রস্ত না হলেও মহামারীর শুরু থেকে রামপাল প্রকল্পের কাজে বাধা আসে, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দফতরের সহযোগিতায় ফাস্ট ট্রাক প্রকল্পটির কাজ এগিয়ে যায়।

আজ জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস। এই দিবসকে সামনে রেখে সংশ্লিষ্টরা আশা করেন, প্রকল্প দুটি বাস্তবায়িত হলে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র দুটির আশপাশের এলাকায় বিদ্যুৎ উৎপাদনের পাশাপাশি ব্যাপক শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থান হবে। বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, কক্সবাজারের মহেশখালীতে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক প্রকল্পটি ২০১৪ সালের জুলাই মাসে গ্রহণ করা হয়। জাপান সরকারের সহযোগিতায় এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। মাতারবাড়ী প্রকল্পের নির্বাহী পরিচালক (প্রকল্প) আবুল কালাম আজাদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে আমাদের কাজ খুব একটা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না। আমরা নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যেই কাজ শেষ করতে পারব বলে আশাবাদী। এ ছাড়া প্রকল্প এলাকায় পুনর্বাসনের কাজও ৯৫ শতাংশ হয়ে গেছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ উদ্যোগে নির্মিত হচ্ছে রামপাল সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রজেক্ট। বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি (বিআইএফপিসিএল) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬ হাজার কোটি টাকা। ২০০৯ সালের জুলাই থেকে এর কাজ শুরু হয়। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রকল্পটির প্রথম ইউনিটের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ। আশা করা হচ্ছে, চলতি বছরের ডিসেম্বরে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট উৎপাদন শুরু করবে। সংশ্লিষ্টরা আরও জানান, পরিবেশগত সব আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখেই রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে। এতে আমদানি করা উন্নতমানের কয়লা ব্যবহার করা হবে। আল্ট্রা সুপার প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে স্বল্প কয়লা ব্যবহার করে অধিক বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে।

বিআইএফপিসিএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার কাজী আবাসার উদ্দিন আহমেদ বলেন, আগামী ১৬ ডিসেম্বর প্রথম ইউনিট চালু করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি। আমাদের প্রথম ইউনিটের অগ্রগতি ৮০ শতাংশের বেশি। আর ২য় ইউনিটসহ মোট অগ্রগতির কথা যদি বলতে হয়, তাহলে মোট অগ্রগতি ৬০ শতাংশের কাছাকাছি। আগামী ২০২২ সালের জুনে প্রকল্পটির ২য় ইউনিট উৎপাদনে আসবে।

তিনি আরও বলেন, মহামারীতে রামপাল প্রকল্পের কাজের গতি কমে গিয়েছিল। শুরু থেকেই এর প্রভাব পড়ে। ভারতীয় অংশের জনবল নিয়ে আমাদের সমস্যায় পড়তে হয়। তবে এটি ফাস্ট ট্রাক প্রকল্প হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে কাজ অব্যাহত রাখার জন্য তাগিদ ছিল। এ ব্যাপারে অনেক সহযোগিতাও করা হয়। এ প্রকল্পে প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য এরই মধ্যে টেন্ডার করা হয়। গত ২৯ জুলাই টেন্ডার গ্রহণ করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে এই টেন্ডারে ইন্দোনেশিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও সাউথ আফ্রিকা থেকে অংশ নেবে। যে প্রকল্প- তাতে ব্যবহার হবে সবচেয়ে আধুনিক প্রযুক্তি। এতেকরে পরিবেশ দূষণের আশঙ্কাও কম থাকবে।

সর্বশেষ খবর