নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেছেন, যারা ঢাকাকে ভালোবাসে না তারাই ঢাকাকে বসবাসের অযোগ্য করছে। ঢাকা মায়ের মতো। মাকে সুস্থ রাখা সবার দায়িত্ব। অনেক বেশি মানুষের এই দেশ। তার রাজধানী অনেক বেশি পরিকল্পিত হওয়ার কথা ছিল। সেই পরিকল্পনাও রয়েছে। কঠোর রাজনৈতিক ইচ্ছায় আজ যদি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হয়, ৩-৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভালোবাসার মায়াবী শহরে পরিণত হবে ঢাকা।
তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমরা আমাদের এই নগরীর বায়ু, পানি বা বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মতো সব সম্পদ ধনী মানুষের জন্য করতে গিয়ে ঢাকাকে বসবাসের অযোগ্য করে তুলছি। এখনো পরিবর্তনের অসংখ্য সুযোগ রয়েছে, যেগুলো এই শহরকে মায়াবী শহরে পরিণত করতে পারে। হাতিরঝিল হবার আগে কেউ ভাবেনি এই জায়গাটা এত সুন্দর একটা জায়গা। আমাদের সড়ক যতটুকু আছে তা যদি সবার জন্য ব্যবহার করতাম, অর্থাৎ গণপরিবহন ভিত্তিক ও পদচারীবান্ধব করতাম, এই সড়কের সক্ষমতা ৮-১০ গুণ বাড়ানো যেত। সেটার পন্থা ডিটেইল এরিয়া প্লানসহ বিভিন্ন পরিকল্পনায় বিস্তারিত দেওয়া আছে। কিন্তু সেটা করছি না। আমরা অগ্রাধিকার দিচ্ছি বড় বড় মেগা প্রকল্পে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, যেটা ব্যক্তিগত গাড়ির জন্য। আন্ডারগ্রাউন্ডে বানাচ্ছি সাবওয়ে, যেটা প্রতি কিলোমিটারে খরচ হবে আড়াই হাজার কোটি টাকা। কিন্তু এই সড়ককে গণপরিবহন ও ফুটপাত নির্ভর করতে হাজার কোটি টাকাও লাগবে না। তখন অধিকাংশ মানুষ সবচেয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে আধুনিক বাসে চলতে পারত। যানজট, বায়ুদূষণ, শব্দদূষণ সবই কমত। আনিসুল হক সাহেব এটা শুরু করেছিলেন, কেউ এগিয়ে নিল না। শুধুই প্রতিশ্রুতি দিল। ইকবাল হাবিব বলেন, করোনার মধ্যেও সাড়ে ৩ লাখ নতুন মটরসাইকেল নামানো হয়েছে। ৩৫-৩৮ হাজার নতুন ব্যক্তিগত গাড়িযুক্ত হয়েছে। চারটি শত কোটি টাকার প্রকল্পে সিগনালিং সিস্টেম আধুনিকায়ন করার জন্য অর্থ বিনিয়োগ করেও শুধু চাঁদাবাজি টিকিয়ে রাখতে হস্তচালিত ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থা চালিয়ে রাখা হয়েছে। এখনো খালগুলো উদ্ধার করার প্রকৃত প্রকল্প নিতে পারিনি। চেষ্টাটা না করার কারণে সব সামর্থ্যকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আত্মাহূতির পথে এগোচ্ছি আমরা।