সোমবার, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

জুনে আসনের সীমানা নির্ধারণ

জনশুমারির রিপোর্টের অপেক্ষায় থাকবে না ইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগামী জুনের মধ্যে সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের কাজ শেষ করতে চায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সেই হিসাবে সীমানা নির্ধারণের জন্য মাত্র সাড়ে চার মাস সময় পাচ্ছে ইসি। এই স্বল্প সময়ের মধ্যে সংসদীয় আসনের সীমানায় বড় পরিবর্তন করাও সম্ভব নয়। তাই পুরনো সীমানা বহাল রেখে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের চিন্তা করছে নির্বাচন কমিশন। কেননা সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের নতুন আইনেও পুরনো সীমানা বহাল রেখে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সুযোগ রয়েছে। তবে আগামীকাল মঙ্গলবার সীমানা নির্ধারণসংক্রান্ত বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। বৈঠকে নীতিগত কিছু সিদ্ধান্ত আসতে পারে। এদিকে গত বছরের জুলাইয়ে জনশুমারির প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ হলেও এখন সেই প্রতিবেদন চূড়ান্ত হয়নি। ইসি চূড়ান্ত প্রতিবেদন ছাড়া সীমানায় বড় পরিবর্তন করতে পারছে না। তাই জনশুমারির চূড়ান্ত প্রতিবেদনের জন্য ইসি অপেক্ষা না করে জুনের মধ্যে সীমানা নির্ধারণের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করার পরিকল্পনা নিয়েছে। যদিও বিদ্যমান সীমানায় ১৫০টি আসনে ভোটারের ভারসাম্য নেই। ৩৭টি আসনে আঞ্চলিক অখন্ডতা রক্ষা হয়নি। এক উপজেলাকে খন্ড-খন্ড করে বিভিন্ন আসনে দেওয়া হয়েছে। সীমানা নির্ধারণের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর বলেছেন, আগামী জুনের মধ্যে সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ চূড়ান্ত করা হবে। জনগণ ও জনপ্রতিনিধিদের মতামত নিয়ে এ কাজ সম্পন্ন করা হবে। গতকাল আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। মো. আলমগীর বলেন, পরিসংখ্যান ব্যুরো থেকে জনসংখ্যার চূড়ান্ত রিপোর্ট আমরা এখনো পাইনি। আমাদের অপেক্ষা করা একটু কঠিন হয়ে যাচ্ছে। আমাদের কাজ শুরু করতে হবে। সীমানা পুনর্নির্ধারণের ক্ষেত্রে জনসংখ্যা হচ্ছে তিন নম্বর গুরুত্ব। প্রথম গুরুত্ব হচ্ছে প্রশাসনিক, যদি কোনো প্রশাসনিক পরিবর্তন না হয়ে থাকে তাহলে তো আমাদের পরিবর্তন করার প্রয়োজন নেই। যদি কোনো ভৌগোলিক পরিবর্তন না হয়ে থাকে, তাহলেও করার প্রয়োজন নেই। তিনি বলেন, এক্ষেত্রে শুধু একটাই ফ্যাক্টর আছে, সেটা হলো জনসংখ্যা। এখন জনসংখ্যার জন্য মাইগ্রেশনের কাছে যে পরিবর্তনটা আসে, সেক্ষেত্রে কিছুটা পরিবর্তন আসে। জনসংখ্যাকে তো আর সমবণ্টন করা যায় না। একটা মেলাতে গেলে আরেকটি মেলে না। আপনি যদি প্রশাসনিক অখন্ডতা ঠিক রাখেন, তাহলে দেখা যায় যে, প্রশাসনিক ও ভৌগোলিক অখন্ডতা ঠিক রাখলে জনসংখ্যার হিসাব মেলানো কঠিন হয়ে যায়। কারণ এটা কখনই মেলানো সম্ভব নয়। এমনকি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেখবেন কোথাও কোথাও পৌনে ৩ লাখ লোক আছে। আবার কোথাও কোথাও প্রায় ১১-১২ লাখ লোকও আছে। তিনি বলেন, আগামী মঙ্গলবার যে সভাটি করছি, ওই সভায় আমাদের মেইন ফোকাসগুলো ঠিক করা হবে। ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, প্রায় ছয় মাস হলো জনশুমারির প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশের; আমরা চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করার অপেক্ষায় রয়েছি। কবে নাগাদ সেই প্রতিবেদন চূড়ান্ত হবে তাও বলা যাচ্ছে না। তবে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সঙ্গে ইসি যোগাযোগ রাখবে নিয়মিত। কেননা চূড়ান্ত প্রতিবেদন ছাড়া সীমানায় বড় পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, জনশুমারির প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী অনেক জেলায় জনসংখ্যার ভারসাম্য নেই। কুমিল্লা ও ময়মনসিংহ জেলায় রয়েছে ১১টি করে সংসদীয় আসন। নতুন শুমারিতে কুমিল্লার জনসংখ্যা ৫৩ লাখ ৮৭ হাজার এবং ময়মনসিংহের জনসংখ্যা ৫১ লাখ। ৪০ লাখ জনসংখ্যার টাঙ্গাইলে আছে ৮টি আসন। অন্যদিকে গাজীপুরে ৫২ লাখ ৬৩ হাজার এবং নারায়ণগঞ্জে ৩৯ লাখ জনসংখ্যায় উভয় জেলায় সংসদীয় আসন পাঁচটি করে। একইভাবে চুয়াডাঙ্গায় ১২ লাখের বেশি জনসংখ্যায় আসন রয়েছে দুটি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর