পদ্মা সেতুর সঙ্গে বেনাপোল স্থলবন্দর যুক্ত হওয়ায় ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য আরও বাড়বে জানিয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেছেন, কলকাতার সঙ্গে যোগাযোগ ও বাণিজ্য সম্প্রসারণের লক্ষ্যে পদ্মা সেতুর সঙ্গে জরুরি ভিত্তিতে সড়কটি প্রশস্ত হওয়া দরকার। বন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়নও ঘটাতে হবে। তবেই দুই দেশের ব্যবসায়ীসহ বন্দর ব্যবহারকারীরা সুফল পাবেন।
গতকাল সকালে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে বেনাপোল-পেট্রাপোল ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট (আইসিপি) পরিদর্শন করেন ভারতীয় হাইকমিশনার। পরে দুপুরে বন্দর অডিটোরিয়ামে প্রশাসন ও বন্দর ব্যবহারকারীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি। ভারতীয় হাইকমিশনার বেনাপোল স্থলবন্দরে পৌঁছালে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন তাঁকে অভ্যর্থনা জানান। এ সময় হাইকমিশনারের স্ত্রী শ্রীমতী মনু ভার্মা, উপহাইকমিশনার ইন্দ্রজিৎ সাগর, বন্দরের জয়েন্ট সেক্রেটারি সরোয়ার হোসেন, বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক আবদুল জলিল, বেনাপোল কাস্টমসের যুগ্ম কমিশনার শাফায়াত হোসেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নারায়ণ চন্দ্র পাল, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বারের বন্দর সাব-কমিটির চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। ভারতীয় হাইকমিশনার বেনাপোল বন্দরের চলমান বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ পরিদর্শন করেন এবং বন্দর এলাকা ও বন্দরের কার্যক্রম ঘুরে দেখেন। এ সময় ভারতগামী ও ভারত থেকে আসা পাসপোর্ট যাত্রীদের খোঁজখবরও নেন তিনি। পরে সাংবাদিকসহ অন্যরা পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনে বিএসএফ ও ইমিগ্রেশন পুলিশের যাত্রী হয়রানি, আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে অভিযোগ করলে তিনি এসব সমস্যা দ্রুত সমাধানে আশ্বস্ত করেন। ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন থেকে পাঠানো বার্তায় বলা হয়, পেট্রাপোল-বেনাপোল সীমান্ত ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রবেশদ্বার, যেখানে স্থলভিত্তিক দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের ৭০ শতাংশের বেশি এ স্থলবন্দর দিয়ে হয়ে থাকে। ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে এ সীমান্তটি ২৪ ঘণ্টা চালু রয়েছে। যাত্রীদের চলাচলের ক্ষেত্রে পেট্রাপোল-বেনাপোল আইসিপির গুরুত্বের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত একটি নতুন প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল বিল্ডিং উদ্বোধন করা হয়েছিল। যাত্রীদের ক্রমবর্ধমান আন্তসীমান্ত চলাচলের চাহিদা পূরণের জন্য দ্বিতীয় একটি প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল বিল্ডিংও নির্মাণাধীন রয়েছে। এ ছাড়া ভারত সরকারের অনুদানে দ্বিতীয় একটি কার্গো টার্মিনাল গেট নির্মিত হতে যাচ্ছে, যা প্রতিদিনের আন্তসীমান্ত যানবাহনের যাতায়াতকে দ্বিগুণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি করার ও মানুষে-মানুষে বিনিময় প্রসারের জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে উন্নয়ন অংশীদারি ও সহযোগিতার প্রতি ভারতের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।