শনিবার, ৮ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

বদলে যাচ্ছে চরের জীবন

♦ বাড়ছে আধুনিক নাগরিক সুযোগ-সুবিধা ♦ ছড়িয়ে পড়ছে শিক্ষার আলো তপ্ত বালুতে ফলছে সোনার ফসল ♦ বিদেশ যাচ্ছে নানা সবজি

শামীম আহমেদ

বদলে যাচ্ছে চরের জীবন

এক দশক আগেও দেশের দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের কাতারে শীর্ষে ছিল চরাঞ্চলের মানুষ। একদিকে নদীভাঙন ও বন্যায় সর্বস্বান্ত হতো চরবাসী, অন্যদিকে তপ্ত বালুচরে ফলতো না কোনো ফসল। ছিল না শিক্ষার আলো, বিদ্যুৎ বা আধুনিক কোনো সুযোগ-সুবিধা। প্রবাসী সন্তানের সঙ্গে ফোনে কথা বলতে বা প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য ছুটতে হতো শহরে। বদলে গেছে সেই দিন। নদীর তলদেশ দিয়ে বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে দুর্গম চরাঞ্চলে। গড়ে উঠছে নতুন নতুন স্কুল-কলেজ। শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হার কমছে। ঘরে বসেই মিলছে মাতৃত্বকালীন স্বাস্থ্যসেবা। চরের মানুষের হাতে হাতে এখন অ্যান্ড্রয়েড ফোন। দুর্গম চরে বসে ফ্রিল্যান্সিং করে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছেন তরুণ-তরুণীরা। উন্নত কৃষিপ্রযুক্তি ব্যবহারে তপ্ত বালুচরে এখন সারা বছরই নানা ফসল ফলছে। দেশের চাহিদা মিটিয়ে সেই ফসল যাচ্ছে মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ইতালি, সুইজারল্যান্ড, সুইডেনসহ নানা দেশে। কাজের খোঁজে শহরে আসা অনেকেই ফিরতে শুরু করেছেন নিজের শেকড়ে। ক্রমেই চাঙা হচ্ছে চরের কৃষি অর্থনীতি। শুধু প্রতি বছর বন্যা আর নদীভাঙনই এখন চরের মানুষের সামনে মূর্তিমান আতঙ্ক।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ইউনিয়ন পরিষদের ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে প্রায় ৭০টির মতো সেবা পাচ্ছে চরের মানুষ। অনলাইনে জন্ম-মৃত্যু সনদ, ভূমি পরিষেবা, পাসপোর্ট-ভিসার আবেদন, হজ নিবন্ধন, দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি পরীক্ষার আবেদন, চাকরির আবেদন, মোবাইল ব্যাংকিং, অনলাইনে বিদ্যুৎ বিল প্রদান, কৃষক ও জেলে নিবন্ধন, উপবৃত্তির আবেদন, কৃষিবিষয়ক তথ্য, ভোটার হালনাগাদ, ওয়ারিশিয়ান সনদসহ সব ধরনের প্রত্যয়নপত্র, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা ও প্রতিবন্ধী ভাতার আবেদন, কম্পিউটার কম্পোজ, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, ই-মেইল করাসহ বিভিন্ন সুবিধা মিলছে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার থেকে। কমিউনিটি ক্লিনিক হওয়ায় চরেই মিলছে স্বাস্থ্যসেবা। এদিকে ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, ধরলা, যমুনা, দুধকুমর ও পদ্মার চরের হাজার হাজার বিঘা ধু ধু বালুভূমি একসময় অনবাদি থাকলেও এখন ধান, গম, ভুট্টা, বাদাম, কাউন, পাট, মরিচ, পিঁয়াজ, মিষ্টি কুমড়া, লাউ, শসা, স্কোয়াশ, আখ, তরমুজ, বাঙ্গিসহ বিভিন্ন ফসলের বাম্পার ফলন হচ্ছে। লালমনিরহাট জেলায় তিস্তা ও ধরলার চরের হাইব্রিড মিষ্টি কুমড়া স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি হচ্ছে মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে। এ ছাড়া যাচ্ছে ২১ জেলায়। কুমড়ার ভালো দাম পাওয়ায় ও বিক্রিতে সংকট না হওয়ায় অধিকাংশ চরের জমিতেই আবাদ হচ্ছে এ ফসলের। কমে গেছে তামাকের চাষ। গাইবান্ধার ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা ও যমুনার চরে মরিচ ও ভুট্টা চাষে বিপ্লব এসেছে। এ দুটি ফসলকে গাইবান্ধার ব্রান্ডিং পণ্য ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। ময়মনসিংহ জেলার ব্রহ্মপুত্র নদের চর বোররচর ইউনিয়নে বেড়িবাঁধ দেওয়ার পর কৃষিতে বিপ্লব এসেছে। উৎপাদন হচ্ছে বিপুল পরিমাণ টমেটো আর বিষমুক্ত কাঁচামরিচ। এই মরিচ রপ্তানি হচ্ছে ইউরোপে। চলতি বছর ২০০ টন মরিচ রপ্তানির লক্ষ্য রয়েছে এখানকার ব্যবসায়ীদের। এ ছাড়া বোররচর এলাকার চারটি বাজার থেকে প্রতিদিন ৩০০ ট্রাক সবজি সরবরাহ হচ্ছে সারা দেশে। এদিকে শরীয়তপুরের পদ্মার চরের ১৩৭টি গ্রামে নদীর তলদেশ দিয়ে পৌঁছে গেছে বিদ্যুৎ সংযোগ। বিদ্যুতের ছোঁয়া পেতেই চরের কৃষি ও হাটবাজারের অর্থনীতিতে গতি ফিরেছে। গতি ফিরেছে শিক্ষায়। স্থাপিত হয়েছে পোশাক তৈরির কারখানা, চাল-তেল-মসলা কারখানা, ওয়ার্কশপসহ নানা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। কুড়িগ্রাম জেলার চার শতাধিক চরের অধিকাংশেই লেগেছে উন্নয়নের ছোঁয়া। এখানকার চরে সরকারি আবাসন প্রকল্প ও গুচ্ছগ্রামে ঠাঁই হয়েছে কয়েক শ ভূমিহীন পরিবারের। সারা বছর আবাদ হচ্ছে নানা ফসলের। চরগুলো আবাদের আওতায় আসায় ১০ বছরের ব্যবধানে দেশে সবজির ফলন প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। ২০১১-১২ অর্থবছরে দেশে শাক-সবজির ফলন হয়েছিল ১ কোটি ২৫ লাখ ৮০ হাজার টন। ২০২১-২২ অর্থবছরে সবজির ফলন হয়েছে ২ কোটি ১৬ লাখ ৭০ হাজার মেট্রিক টন। আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যানুযায়ী- সিরাজগঞ্জের কাওয়াকোলা ইউনিয়নের দুর্গম চরাঞ্চলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মাঠপর্যায়ের কর্মীদের পরামর্শে নানা ফসল উৎপাদন হচ্ছে। এগুলো চরের হাট ছাড়াও নৌকাযোগে শহরে বিক্রি হচ্ছে। নাটুয়ারপাড়া, চরগিরিশ ও কাওয়াকোলাসহ কয়েকটি চরে পাকা রাস্তা নির্মাণ হয়েছে। চরে ঝড়ে পড়া শিশুর সংখ্যা কমে গেছে। মাতৃত্বকালীন স্বাস্থ্যসেবা চরেই মিলছে। তবে চরের মানুষের সবচেয়ে বড় দুর্যোগ এখনো বন্যা। কাওয়াকোলা ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জিয়া মুন্সী জানান, বন্যায় বসতভিটাসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এ ক্ষতি থেকে রক্ষা পেলে চরাঞ্চলবাসী জাতীয় অর্থনীতিও বড় অবদান রাখতে পারবে। স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মোহাম্মদ তোফাজ্জেল হোসেন জানান, জেলার ৮৩টি ইউনিয়নের মধ্যে ২৯টি ইউনিয়ন চরাঞ্চলে অবস্থিত। প্রতিনিয়ত চরাঞ্চলের সঙ্গে শহরের কানেক্টভিটি বাড়ানোর জন্য নানা ধরনের প্রক্রিয়া চলছে। যে কারণে ধীরে ধীরে চরাঞ্চলের জীবনমান পাল্টে যাচ্ছে। মসলা জাতীয় খাদ্য বেশি উৎপাদন হওয়ায় অর্থনৈতিকভাবে চরাঞ্চলের মানুষ চাঙ্গা হচ্ছে।

নানান রকম সবজিতে ভরে গেছে চরের বিস্তীর্ণ এলাকা   -বাংলাদেশ প্রতিদিন

ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা ও যমুনা নদীবেষ্টিত গাইবান্ধা জেলার চার উপজেলার চর-দ্বীপচরের শত শত বিঘা জমিতে গত পাঁচ বছরে মরিচ ও ভুট্টা চাষে বিপ্লব ঘটে গেছে। এর পাশাপাশি মিষ্টিকুমড়া চাষের হারও বেড়ে চলেছে চরগুলোতে। মোট উৎপাদনের প্রায় অর্ধেকই উৎপন্ন হচ্ছে ফুলছড়ি উপজেলার যমুনা নদীর চরগুলোয়। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর থেকেই চরগুলোয় শুরু হয় চাষাবাদ। ফুলছড়ি উপজেলায় মরিচ চাষ বেশি হওয়ায় এখানে জেলার একমাত্র মরিচের হাট বসছে। প্রতি হাটে ২ হাজার মনের বেশি মরিচ বিক্রি হয় বলে জানিয়েছেন হাট ইজারাদার। ফুলছড়ি উপজেলার গলনাচরের কৃষক মজিদ মিয়া বলেন, বিঘাপ্রতি কাঁচামরিচ উৎপাদনে ব্যয় হয় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। বিঘায় ৫০ মনের মতো কাঁচামরিচ উৎপন্ন হয়। ব্যয় বাদে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকার মতো আয় হয়। গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মো. খোরশেদ আলম জানান, গাইবান্ধার সাতটি উপজেলায় যে পরিমাণ মরিচ, ভুট্টা চাষ হয় তার প্রায় অর্ধেকই উৎপন্ন হয় ফুলছড়ি উপজেলার চরাঞ্চলে। উপযোগী আবহাওয়া ও চরের উর্বর মাটিতে দিন দিন মরিচ ও ভুট্টার চাষ বাড়ছে। কৃষি বিভাগ কৃষকদের পরামর্শসহ সব ধরনের কারিগরি সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। প্রণোদনার আওতায় বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে। লালমনিরহাট, রংপুর, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার বুকচিরে বয়ে যাওয়া তিস্তার তিন শতাধিক ধু ধু বালুচরে সবুজের বিপ্লব ঘটছে। বেলে দোআঁশ মাটিতে চাষিরা স্বল্প খরচে ফলাচ্ছেন সোনার ফসল। লালমনিরহাটের ২৬ হাজার ৬৩ হেক্টর চরের জমির মধ্যে আবাদ হচ্ছে ২১ হাজার ৯৪৮ হেক্টরে। চরাঞ্চল ঘুরে দেখা গেছে, আদিতমারী উপজেলার নদী তীরবর্তী মহিষখোচা ইউনিয়নের বালাপাড়া, কুটিরপাড়, কালমাটি, আনন্দবাজার, কালীগঞ্জের রুদ্রেশ্বর, কাকিনা, মহিষামুরি, ইশোরকুল চরে হাসছে নানা ফসল। এখানকার প্রধান ফসল ভুট্টা হলেও চাষ হচ্ছে পিঁয়াজ-রসুনও। নদী গবেষক ড. তুহিন ওয়াদুদ বলছেন, বৈশ্বিক মন্দার এ প্রেক্ষাপাটে চরের কৃষক সংগ্রাম করেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে। যদি নদীটি বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে খনন করা যেত তাহলে কৃষকের পাশাপাশি সব পেশার মানুষ তিস্তার সুফল পেত। এদিকে প্রায় আট বছর পর আবারও তিস্তা-ধরলার দুর্গম চরাঞ্চলে চাষ করা হাইব্রিড জাতের মিষ্টি কুমড়া রপ্তানি হচ্ছে মালয়েশিয়া আর সিঙ্গাপুরে। এর আগে ২০১৪ সালে বেসরকারি সংস্থা প্র্যাকটিক্যাল অ্যাকশন বাংলাদেশের উদ্যোগে চরে চাষ করা মিষ্টি কুমড়া পৌঁছেছিল বিদেশের ভোক্তাদের পাতে। এবার কৃষি বিভাগের দিকনির্দেশনা ও এমফোরসি প্রকল্পের সহায়তায় দুটি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান কৃষকদের খেত থেকে সরাসরি মিষ্টি কুমড়া কিনে মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে পাঠাচ্ছেন।

ইতোমধ্যে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ২৪ কোটি টাকার মিষ্টি কুমড়ার অর্ডার পেয়েছেন। এ কারণে চাষিদের কাছ থেকে তারা সরাসরি মিষ্টি কুমড়া কিনে প্যাকেটজাত করছে। লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক হামিদুর রহমান বলেন, আপাতত দুই দেশে মিষ্টি কুমড়া রপ্তানি হলেও চরাঞ্চলের উৎপাদিত মিষ্টি কুমড়ার চাহিদা দেশের বিভিন্ন জেলায় রয়েছে। এতে করে চাষিরাও লাভবান হচ্ছে। এদিকে ময়মনসিংহ শহর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরের একটি ইউনিয়ন বোররচর। একটা সময় ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে কষ্টের সীমা ছিল না এ জনপদের মানুষের। ২০০৩ সালে বেড়িবাঁধ হওয়ার পর পাল্টে যায় এখানকার মানুষের ভাগ্য। উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারে কৃষিতে বিপ্লব ঘটে। বর্তমানে বিপুল পরিমান টমেটো ছাড়াও নানা সবজি উৎপন্ন হচ্ছে এখানে। এ চরে উৎপাদিত বিষমুক্ত মরিচ দুটি প্রতিষ্ঠান ইতালি, সুইজারল্যান্ড, সুইডেনসহ কয়েকটি দেশে রপ্তানি করছে। চলতি বছর তাদের ২০০ টন মরিচ রপ্তানির লক্ষ্য রয়েছে। বেড়িবাঁধ নির্মাণ করায় শরীয়তপুরের পদ্মাপাড়ের মানুষজন ভাঙন আতঙ্ক থেকে মুক্তি পেয়েছে। চরের ১৩৭টি গ্রামের বাসিন্দাদের নদীর তলদেশ দিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। নড়িয়া উপজেলার নওপাড়া মুন্সিকান্দি গ্রামের বাসিন্দা ফজলুল হক ব্যাপারী (৪০) কিশোর বয়স থেকে নদীতে মাছ শিকার ও কৃষিশ্রমিকের কাজ শুরু করেন। ১০ বছর আগে ঢাকায় পাড়ি জমান। গাড়ির গ্যারেজে শুরু করেন শ্রমিকের কাজ। গ্রামে বিদ্যুৎ আসায় ২০২১ সালে গ্রামে ফিরে এসে অটোপার্সের দোকান দিয়ে বসেন। নড়িয়ার চরআত্রা এলাকার বদরুল আলম গাজীপুরে একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। বিদ্যুৎ আসায় তিনি এলাকায় ফিরে ছোট একটি পোশাক তৈরির কারখানা খুলেছেন। একইভাবে চাল, তেল, মসলা তৈরির কারখানা স্থাপন করেছেন অনেকে। পুরো চরাঞ্চলের অর্থনীতিতে গতি সঞ্চারিত হয়েছে। কুড়িগ্রামের প্রধান নদী ধরলা, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও দুধকুমর। সব মিলে জেলায় ছোট-বড় প্রায় সাড়ে চার শতাধিক চর রয়েছে। এক সময় চরগুলোয় শুধুই ধু ধু বালুচর দেখা যেত। ছিল না আবাদ। ছিল না শিক্ষার আলো। বর্তমানে বদলে গেছে চিত্র। অধিকাংশ চরে লেগেছে উন্নয়নের ছোঁয়া। বিভিন্ন ফসল উৎপাদন, উন্নত যোগাযোগব্যবস্থা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন, বিদ্যুৎ সংযোগ, কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন, নদীভাঙন প্রতিরোধে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন উন্নয়ন এখন দৃশ্যমান। নদীর ভেসে ওঠা চরের কৃষকরা এখন ফলাচ্ছেন নানা রকমের সবজি। কোনো কোনো চরে বোরোর পরে অন্য ফসলের আবাদ হচ্ছে। সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেদুল হাসান জানান, সদর উপজেলার দুর্গম চরসহ প্রত্যেক চর এখন বিদ্যুৎ সংযোগের আওতায় চলে এসেছে। চরে প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলেও সম্প্রতি আমরা চরভগবতীপুরে একটি হাইস্কুল নির্মাণ করেছি। নদী ভাঙনরোধে কাজ করছি। উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান এ বি এম আবুল হোসেন জানান, চরগুজিমারি একটি দুর্গম চর হিসেবে খ্যাত ছিল। এখন তা বোঝার উপায় নেই। এখানে তিনটি আবাসন প্রকল্পে প্রায় ২০০ পরিবার বসবাস করছেন। এ ছাড়া গাবুরজান চরে গুচ্ছগ্রাম নির্মাণ করায় সেখানেও শতাধিক পরিবারের মাথা গোঁজার ঠাঁই হয়েছে।

প্রতিবেদন তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, ময়মনসিংহ, শরীয়তপুর, সিরাজগঞ্জ ও কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর