শিরোনাম
সোমবার, ২২ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

পিঁয়াজ আমদানিতে কৃষি মন্ত্রণালয়ে বাণিজ্যের চিঠি

নিজস্ব প্রতিবেদক

রোজার ঈদের পর ৪০ টাকার পিঁয়াজ বাড়তে বাড়তে ৮০ টাকায় উঠেছে। কোরবানির ঈদ সামনে রেখে মসলাজাতীয় পণ্যটির দাম আরও বাড়ার শঙ্কা রয়েছে। দাম নিয়ন্ত্রণে আমদানির অনুমতির কথা প্রায় প্রতিদিনই উঠে আসছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীদের বক্তব্যে; কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। পিঁয়াজ আমদানির অনুমতি মিলছে না-দামও কমছে না।

মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, ভোক্তার স্বার্থে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সংস্থাগুলোর হাতে থাকলেও পিঁয়াজ কৃষিপণ্য হওয়ায় এটি আমদানির জন্য কৃষি মন্ত্রণালয়ের অনুমতি লাগে। এ কারণে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মাধ্যমে বাজারে মনিটরিং বাড়িয়েও পিঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। অন্যদিকে ভোক্তার তুলনায় কৃষিপণ্য উৎপাদন ও কৃষকের স্বার্থের বিষয়টি কৃষি মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রাধান্য পাওয়ায় তারা আমদানির অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে ‘ধীরে চলো নীতি’ অনুসরণ করছেন। আর এই সুযোগে পিঁয়াজের দাম  বেড়ে যাচ্ছে। পিঁয়াজ নিয়ে গতকাল দুই মন্ত্রীর দুই ধরনের বক্তব্যে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়েছে। পণ্যটির দাম নিয়ন্ত্রণে কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক ও বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি পৃথক পৃথক অনুষ্ঠানে কথা বলেছেন। রাজধানীর একটি স্কুলে গুণীজন সংবর্ধনা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, বর্তমান বাজার বিবেচনায় আমরা পিঁয়াজ আমদানির জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে কৃষি মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছি। ইমপোর্ট পারমিট বা আইপি যেহেতু কৃষি মন্ত্রণালয় দিয়ে থাকে তাই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য তাদের বলা হয়েছে। বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের দেশে পিঁয়াজ উৎপাদন পর্যাপ্ত হয়েছে। কিন্তু বেশি মুনাফা লাভের আশায় অনেকে পিঁয়াজ মজুদ রেখে সংকট তৈরি করে বাজারকে অস্থিতিশীল করা হয়েছে। ভোক্তা পর্যায়ে পিঁয়াজের দাম কয়েক দিনের ব্যবধানে বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন যেহেতু ভোক্তাদের বাজারে পিঁয়াজ কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে- তাই আমদানি করা ছাড়া উপায় নেই বলেও জানান তিনি। অন্যদিকে সচিবালয়ে এক অনুষ্ঠান শেষে কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, পিঁয়াজের দাম বেশি হওয়ায় সীমিত আয়ের মানুষের কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু আমরা  শেষ পর্যন্ত চাষির স্বার্থটা দেখতে চাচ্ছি। কারণ, গত বছর কৃষকরা দাম কম পাওয়ায় এ বছর পিঁয়াজের উৎপাদন কমেছে। আমরা উচ্চপর্যায়ে, নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে আলোচনা করছি। গভীরভাবে বাজার পর্যবেক্ষেণ করছি। দুই-দিন দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে পিঁয়াজ আমদানি করা হবে কি না। পিঁয়াজ নিয়ে দুই মন্ত্রণালয়ের এমন বিপরীতমুখী অবস্থান বজায় থাকলে কৃষক ও ভোক্তা উভয়ের দুর্ভোগ বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তারা পণ্যটির দাম নিয়ন্ত্রণে দুই মন্ত্রণালয়ের সমন্বিত উদ্যোগের কথা বলছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুত বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, এই মুহূর্তে কৃষকের হাতে খুব বেশি পিঁয়াজ নেই। ফলে আমদানি বন্ধ রাখলে কোরবানির ঈদের আগে পণ্যটির দাম আরও বাড়বে। এতে ভোক্তার দুর্ভোগ বাড়বে। কৃষকেরও খুব বেশি লাভ হবে না। এ কারণে কৃষি মন্ত্রণালয়ের উচিত সীমিত পরিসরে হলেও পণ্যটির আমদানির অনুমতি দিয়ে বাজার স্থিতিশীল রাখা।

সর্বশেষ খবর