মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নারী এমপি (সংরক্ষিত আসন-চট্টগ্রাম) খাদিজাতুল আনোয়ার সনিকে নিয়ে তোলপাড় হয়েছে। সেখানে তার একটি সংবর্ধনা সভা নিয়ে মঙ্গলবার রাতে ঘটনার সূত্রপাত। অনুমতি ছাড়া সভা করায় স্থানীয় পুলিশ এসে সভা ভন্ডুল করে দেয়। খবর ছড়িয়ে পড়ে, এমপি সনিসহ আয়োজকদের আটক করে ওমান পুলিশ এবং কিছু সময় পরে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয় এমপি সনিকে। তবে এমপি সনি বলেছেন, আটকের কোনো ঘটনা ঘটেনি। সভাও করতে দেয়নি ওমান পুলিশ। আমরা ওমান পুলিশের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছি। মঙ্গলবার রাতের এ ঘটনার পর এমপি সনিকে গতকাল ওমানে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে এবং মেয়েকে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে। তিনি বিভিন্ন সময় সাক্ষাৎ করেছেন ফটিকছড়ির প্রবাসীদের সঙ্গে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, আমরা কোনো কিছু জানি না। আমরা জানি না এ রকম কোনো সংসদ সদস্য সেখানে বেড়াতে গেছেন। কোনো ব্যক্তি যদি যান, সেটি ব্যক্তিগত উদ্যোগে। সরকারিভাবে আমরা কাউকে পাঠাইনি এ মুহূর্তে। এমপি খাদিজাতুল আনোয়ার সনি গণমাধ্যমকে জানান, গত ৩১ জুলাই তিনি পারিবারিক সফরে ওমানে গিয়েছেন। সঙ্গে মেয়েসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা আছেন। তার আগমন উপলক্ষে সেখানে ওমান আওয়ামী লীগ, ওমান যুবলীগ ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের পক্ষ থেকে একটি সভার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানস্থলে ১৫০ জনের ধারণক্ষমতা ছিল। কিন্তু অনুষ্ঠানে ৩ শতাধিক লোক হাজির হয়। এ ধরনের সভা করতে আয়োজকরা পূর্বে অনুমতি নেননি। ফলে পুলিশ গিয়ে সভা বন্ধ করে দেয়। পরে আমরা তাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করি। এতে গ্রেফতারের কোনো ঘটনা ঘটেনি। জানা যায়, ওমানের রাজধানী মাসকাটের বাণিজ্যিক কেন্দ্র রুয়িতে অবস্থিত ‘হাফা হাউস’ নামের একটি হোটেলে এমপি খাদিজাতুল আনোয়ার সনিকে সংবর্ধনা দেওয়ার আয়োজন করা হয়। আয়োজক হিসেবে ব্যানারে ‘বাংলাদেশ কমিউনিটি’র কথা উল্লেখ করা হলেও এতে আওয়ামী লীগ, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, চট্টগ্রাম সমিতিসহ কয়েকটি সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। অনুমোদন ছাড়া সভার খবর পেয়ে সেখানে হাজির হয় স্থানীয় পুলিশ। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে অনেকে আশপাশে পালিয়ে যায়। পরে কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ওমান পুলিশ। এদের প্রায় সবাই সংবর্ধনা সভার আয়োজক।
ওমানে বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্র জানায়, রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ আয়োজনে ওমান কর্তৃপক্ষের কড়াকড়ি আছে। এ জন্য বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা এ ধরনের কোনো আয়োজন না করার জন্য আগেই সতর্ক করেছিলেন। সব আয়োজন শুধু ঘরোয়াভাবে সীমাবদ্ধ রাখার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে দূতাবাস।