পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে নিউইয়র্ক। জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে অংশ নিতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আগমনকে কেন্দ্র করে এই পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ। বিএনপি ড. ইউনূসকে স্বাগত জানানোর কর্মসূচি দিয়েছে, আর আওয়ামী লীগ তাঁর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করার কর্মসূচি নিয়েছে।
জানা গেছে, জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন চলাকালীন সময়েই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে বৈঠক ঠিক হওয়ায় এক দিন আগেই নিউইয়র্কের উদ্দেশে দেশ ছাড়ছেন সরকারপ্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস। প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ড. ইউনূসের এটাই প্রথম বিদেশ সফর। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে তিনি ২৭ সেপ্টেম্বর বক্তব্য রাখবেন। পরে ওই রাতেই তার ঢাকায় রওনা হওয়ার কথা রয়েছে।
এদিকে ড. ইউনূসকে ঘিরে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ তাদের কর্মসূচি সফল করতে কয়েক দফা প্রস্তুতি সভা করেছে। বিএনপির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গত ১৬ বছরে সরকার প্রধানের বিষয়ে বিরোধিতা করা দল বিএনপি এবার স্বাগত জানাবে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে। একই সঙ্গে বিচার চাইবে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে খুন-গুম-নির্যাতন আর লুটপাটের। প্রধান উপদেষ্টাকে সাংগঠনিকভাবে স্বাগত জানানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাকির এইচ চৌধুরী। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার আমলে খুন-গুম-নির্যাতনের বিচার দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের দিন জাতিসংঘের সামনে বিএনপি অবস্থান নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে খুন-গুম-নির্যাতন আর লুটপাটের বিচার চাইবে। যুক্তরাষ্ট্র যুবদল নেতা মাসুদ রানা জানান, প্রধান উপদেষ্টাকে অভিনন্দন জানানোর জন্য নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের কাবাব কিংয়ে প্রস্তুতি সভার আয়োজন করা হয়েছে। ২২ সেপ্টেম্বরের ওই সভায় বিস্তারিত আলোচনা হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কর্মসূচির দিন আওয়ামী লীগ কোনো বাধা দিলে প্রতিহত করা হবে।
জানা গেছে, মূল অনুষ্ঠান ছাড়াও ড. ইউনূসের সঙ্গে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার প্রধান সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। এ ছাড়া, ড. ইউনূসের সঙ্গে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি, বাহরাইনের ক্রাউন প্রিন্স হামাদ বিন ঈসা আল খলিফা, নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী ডিক শফ, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুইজ্জু, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ও ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লিয়েনের সৌজন্য সাক্ষাতের কথা রয়েছে। পাশাপাশি জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস, জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক, বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট অজয় বাঙ্গা, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রধান কৌঁসুলি করিম খান, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার পরিচালক সামান্থা পাওয়ার, জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্রান্ডি, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) মহাপরিচালক গিলবার্ট এফ হংবোসহ জাতিসংঘের আরও অনেক সংস্থার প্রধান ড. ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন বলে জানা গেছে।