খুলনা নগরীর ডাকবাংলা মোড়ে জাতীয় পার্টির মহানগর এবং জেলা কার্যালয়ে ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল সন্ধ্যা ৬টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যা ৬টার দিকে নগরীর হাদিস পার্ক এলাকা থেকে ৫০-৬০ জন মিছিল নিয়ে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়। হঠাৎ করেই তারা জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে ঢুকে ভাঙচুর চালায় এবং কার্যালয়ের সামনে থাকা সাইনবোর্ড, প্যানা-ব্যানারে আগুন দেয়। এদিকে এ ঘটনার সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন, জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে ছাত্র আন্দোলনের দুই সমন্বয়ককে হুমকির প্রতিবাদে শিববাড়ি মোড় থেকে হাদিস পার্ক পর্যন্ত মিছিল করেন ছাত্ররা।
কিন্তু জাতীয় পার্টির কার্যালয় ভাঙচুরের সঙ্গে তারা জড়িত নন। স্থানীয় জনগণ ক্ষুব্ধ হয়ে ওই কার্যালয়ে ভাঙচুর করতে পারে। জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি শফিকুল ইসলাম মধু জানান, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমাদের কোনো দ্বন্দ্ব নেই। ৫০-৬০ জন ছেলে জাতীয় পার্টির কার্যালয় ভাঙচুর করে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। এর প্রতিবাদে রবিবার সন্ধ্যায় জাতীয় পার্টির কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ ও মিছিল কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
নেতা-কর্মীশূন্য ঢাকা অফিস : কয়েক দিন ধরেই মুখোমুখি অবস্থানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মী ও জাতীয় পার্টির সদস্যরা। ছাত্র-জনতার মিছিলে হামলার অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বিজয়নগর জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে।
কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় গতকাল শনিবার বিজয়নগরে সমাবেশ করার ঘোষণা দিলেও পুলিশের নিষেধাজ্ঞায় বিক্ষোভ-মিছিল ও সমাবেশ স্থগিত করে জাতীয় পার্টি। গতকাল সরেজমিনে বিজয়নগর জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গিয়ে কোনো নেতা-কর্মীর দেখা মেলেনি। পার্টি অফিস ঘিরে রয়েছে পুলিশের কড়া নিরাপত্তা ও উৎসুক মানুষের আনাগোনা। আগুন দেওয়া ভবনটি খালি পড়ে আছে। উৎসুক জনতা ভবনটির সামনে দিয়ে যাচ্ছেন আর নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছেন, কেউ কেউ আবার ছবিও তুলে রাখছেন। পার্টি অফিসের সামনে রয়েছে পুলিশের কড়া নিরাপত্তা। লোকজন ভিড় জমালেই সরিয়ে দিচ্ছে পুলিশ।
এদিকে পুলিশের পক্ষ থেকে রাজধানীর পাইওনিয়ার রোড, কাকরাইলসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় যেকোনো ধরনের সভা, সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রা ও বিক্ষোভ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। যে কারণে এসব পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। গতকাল বনানীতে দলের চেয়ারম্যানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দেখা গেছে নেতা-কর্মীদের ভিড়। সমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজধানীসহ আশপাশ থেকে আসা নেতা-কর্মীরা দিনভর বনানী কার্যালয়ে পার্টির চেয়ারম্যানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। এ সময় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মীর আবদুস সবুর আসুদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য রেজাউল ইসলাম ভূইয়া, মোস্তফা আল মহমুদসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। মীর আবদুস সবুর আসুদ বলেন, ‘জাতীয় পার্টি সব সময় আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, যে জন্য আমরা কাকরাইলে সভাবেশ স্থগিত করেছি।’ তিনি জানান, সমাবেশকে কেন্দ্র করে আগত নেতা-কর্মীরা দিনভর পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। আগত নেতা-কর্মীদের দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি জানান, পরবর্তী কর্মসূচি জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে দেওয়া হবে।