মুমিনুল হকের সরাসরি থ্রোতে রানআউট ভিনসেন্ট মাসেকেসা। জিম্বাবুয়ের শেষ উইকেটের পতন। রানআউটের সঙ্গে সঙ্গে বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন নাজমুল, মিরাজ, তাইজুল, মুশফিকরা। জায়ান্ট স্ক্রিনে ভেসে উঠেছে বাংলাদেশের জয়। স্পিন অলরাউন্ডার মেহেদি হাসান মিরাজের অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্সে বাংলাদেশ তিন দিনেই জিতে নিয়েছে চট্টগ্রাম টেস্ট। জিতেছে ইনিংস ও ১০৬ রানে। দেশের মাটিতে সাদা পোশাক ও লাল বলে টাইগাররা জিতল টানা ছয় টেস্ট হারের পর। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিলেট টেস্ট হারের পর প্রতিশোধ নিল চট্টগ্রামে। এখন নাজমুল বাহিনীর প্রস্তুতি পাকিস্তানের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টি-২০ সিরিজ নিয়ে। ঘরের মাটিতে হারের বৃত্ত ভাঙার নায়ক মিরাজ শুধু সেঞ্চুরি করেই থেমে থাকেননি, নিয়েছেন ৫ উইকেট। একই সঙ্গে রেকর্ড বুকেও নাম লিখেছেন। সাকিব আল হাসানের পর দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে ২ হাজার রান ও ২০০ উইকেট নেওয়ার মাইলফলক গড়েন টাইগার সহঅধিনায়ক মিরাজ।
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে এর আগে ২৫ টেস্ট হয়েছে। বাংলাদেশের জয় ছিল সাকল্যে দুটি। নাম পরিবর্তন হয়ে এখন হয়েছে ফ্লাইট লে. মতিউর রহমান স্টেডিয়াম। নতুন নামকরণের স্টেডিয়ামটিতে দুই দিন হাতে রেখেই জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। স্টেডিয়ামটিতে এখন পর্যন্ত তিন জয়ের দুটিই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। আফ্রিকান প্রতিনিধিদের বিপক্ষে ১১টি সিরিজ খেলেছে টাইগাররা। দুই দল চারটি করে সিরিজ জিতেছে এবং ড্র হয়েছে তিনটি। তবে জয়ের সংখ্যায় বাংলাদেশ এগিয়ে। জয় ৯টি এবং জিম্বাবুয়ের জয় ৮টি।
নাজমুল বাহিনী গতকাল খেলতে নামে ৭ উইকেটে ২৯১ রান নিয়ে। মিরাজ ব্যাট করছিলেন ১৬ রানে। মিরাজ থামেন ১০৪ রানে। ৫৩ টেস্ট ক্যারিয়ারে মিরাজের এটা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। মিরাজ তিন অঙ্কের জাদুকরী ইনিংসটি খেলেন ৫০ মাস পর। ৫২ ইনিংস আগে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে চট্টগ্রামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১০৩ রানের ইনিংস খেলেছিলেন মিরাজ। ১০৪ রানের ইনিংসটি খেলেন ১৬২ বলে ১১ চার ও এক ছক্কায়। মিরাজ ১০৪ ও বাঁ হাতি ওপেনার সাদমান ইসলামের ১২০ রানে ভর করে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে স্কোর ছিল ৪৪৪। এগিয়ে যায় ২১৭ রানে। জিম্বাবুয়ে ব্যাটিংয়ে নেমেই তাইজুল-মিরাজ-নাঈম ত্রয়ী স্পিনারের সাঁড়াশি আক্রমণে নাকাল হয়ে ৪৬.২ ওভারে অলআউট ১১১ রানে। তিন স্পিনার নেন ৯ উইকেট। প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেট নেওয়া তাইজুল নেন ২ উইকেট। ম্যাচসেরা মেহেদি মিরাজ সেঞ্চুরির পাশাপাশি নেন ৫ উইকেট। ৫৩ টেস্ট ক্যারিয়ারে ইনিংসে ১৩ বার ৫ বা ততোধিক উইকেট নিয়েছেন মিরাজ। একই টেস্টে সেঞ্চুরি ও ৫ উইকেট নেওয়া তৃতীয় ক্রিকেটার মিরাজ। এর আগে সাকিব ও সোহাগ গাজী এ রেকর্ডটি করেছিলেন। একই সিরিজে এক ম্যাচে ১০ উইকেট শিকার ও এক ইনিংসে সেঞ্চুরি করা টেস্ট ইতিহাসের সপ্তম ক্রিকেটার মিরাজ। ২ হাজার রান ও ২০০ উইকেট নেওয়া দ্বিতীয় ক্রিকেটার মিরাজ। ৫৩ টেস্টে মিরাজের উইকেট ২০৫ ও রান ২০৬৮। সাকিবের রান ৭১ টেস্টে ৪৬০৯ ও উইকেট ২৪৬টি।