বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ২৪ মে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির চার সদস্যের প্রতিনিধিদল বৈঠক করেন। ওই বৈঠকের পর প্রধান উপদেষ্টার পক্ষে প্রেস সচিব শফিকুল আলম সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন। সেখানে তার বক্তব্যে আগামী নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ না থাকায় হতাশ হয়েছে বিএনপি। গতকাল বিকালে রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান তিনি।
ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ২৪ মে প্রধান উপদেষ্টার আহ্বানে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল সাক্ষাৎ করে। একই দিনে আরও দুটি দল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। আমরা আপনাদের সামনে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছি। পরের দিন আরও ২০টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তিনি সাক্ষাৎ করেন। রাজনৈতিক দলসমূহের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার আলোচনা প্রসঙ্গে তার প্রেস সচিবের মাধ্যমে সরকারের যে বক্তব্য পাওয়া গেছে, তাতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনো রোড ম্যাপের ঘোষণা না থাকায় আমরা হতাশ হয়েছি। তিনি বলেন, বিএনপি এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দল কোনো সময়ই প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ চায়নি এবং এখনো চায় না। কিন্তু আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে ডিসেম্বর, ২০২৫ এর মধ্যে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ দাবি করে এসেছি।
বিএনপির এই নেতা বলেন, যেহেতু সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া, তাই সংস্কার ও নির্বাচন প্রক্রিয়া দুটো একই সঙ্গে চলতে পারে। পতিত ফ্যাসিবাদী শক্তি এবং ব্যক্তি অর্থাৎ দল এবং মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচার প্রক্রিয়া চলমান থাকবে।
তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে অনুষ্ঠিত আলোচনায় আমরা উপরোক্ত বিষয়গুলো উপস্থাপন করেছিলাম। আমরা লক্ষ্য করেছি, শনিবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের সভা শেষে উপদেষ্টা পরিষদের বিবৃতিতে যে বক্তব্য জাতির সামনে উপস্থাপন করা হয়েছে তা অস্পষ্ট ও বিভ্রান্তিকর। উপদেষ্টা পরিষদের দায়িত্ব পালনে আমরা প্রথম থেকে অদ্যাবধি সর্বোচ্চ সহযোগিতা প্রদান করে আসছি। সরকার পরিচালনায় নিরপেক্ষতার ঘাটতির কারণে এবং দুর্বলতার কারণে জনমনে সংশয় ও সন্দেহের উদয় হওয়া স্বাভাবিক। বিভিন্ন মহলের অযৌক্তিক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দাবি-দাওয়া এবং এখতিয়ারবহির্ভূত বক্তব্য সরকারের স্বাভাবিক কাজের পরিবেশ বিনষ্ট হওয়ার যে অভিযোগ সরকারের পক্ষ থেকে উত্থাপন করা হয়েছে, সেটা মূলত সরকারের নিজস্ব অর্জন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বৈঠকে আমরা ইতিবাচক বার্তা চেয়েছিলাম কিন্তু সেটি সরকার করেনি। ডিসেম্বরের পর নির্বাচন করার কোনো উপযুক্ত সময় নয়। কারণ, ফেব্রুয়ারি মাসে রমজান, এসএসসি পরীক্ষা এবং দুর্যোগ দেখা যায়। সংস্কারের উসিলা করে নির্বাচন বিলম্ব করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, সালাহউদ্দিন আহমেদ, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সেলিমা রহমান ও মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।