জুলাই সনদ তৈরির প্রক্রিয়াটি স্বচ্ছ ও দৃশ্যমান রাখতে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এক বৈঠকে এ নির্দেশনা দেন প্রধান উপদেষ্টা ও কমিশন প্রধান প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক ও ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার। বৈঠকে ঐকমত্য কমিশনের কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করা হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে জুলাই সনদ তৈরির কাজ সম্পন্ন করতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চলছে বলে কমিশন সদস্যরা প্রধান উপদেষ্টাকে জানান। ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তাদের অনন্য ভূমিকা ও প্রচেষ্টার জন্য শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, ঐকমত্য কমিশনের প্রতিটি বৈঠক টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার হওয়ায় সবাই এ গুরুত্বপূর্ণ আলোচনাগুলো দেখতে পাচ্ছেন। দেশ-বিদেশের মানুষ ব্যাপকভাবে এ উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন। এটা একটা ঐতিহাসিক ঘটনা। গণ অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা এর মাধ্যমে প্রতিফলিত হবে। কাজেই পুরো প্রক্রিয়াটি স্বচ্ছতার সঙ্গে সম্পন্ন করতে হবে, মানুষের কাছে এভাবেই দৃশ্যমান থাকতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় পর্বের সংলাপে আটটি বিষয়ে আলোচনার পর ঐকমত্য হয়েছে বলে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেছেন কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ। এ ছাড়া আরও সাতটি বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে আলোচনা চলমান বলে জানান তিনি।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তাজউদ্দীন পরিবারের সৌজন্য সাক্ষাৎ : মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এবং বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের জন্মশতবার্ষিকী অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে তাজউদ্দীন পরিবার। গতকাল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ আমন্ত্রণপত্র পৌঁছে দেন তাজউদ্দীনের জ্যেষ্ঠ কন্যা শারমিন আহমদ এবং পুত্র তানজিম আহমদ সোহেল তাজ। এ সময় শারমিন আহমদ তার লেখা ‘তাজউদ্দীন আহমদ : নেতা ও পিতা’ বইয়ের একটি কপি প্রধান উপদেষ্টাকে উপহার দেন। ১৯২৫ সালের ২৩ জুলাই গাজীপুরের কাপাসিয়ার শাল-গজারি বনের বেষ্টনীতে ঘেরা দরদরিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তাজউদ্দীন আহমদ। তিনি ছিলেন আইয়ুববিরোধী আন্দোলনের অগ্রণী সেনা। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে গঠিত স্বাধীন বাংলাদেশের প্রবাসী সরকারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।
৯ মাস মাঠে থেকে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দেন। আত্মপ্রচারবিমুখ তাজউদ্দীন আহমদ তাঁর অবদানের জন্য কোনো কৃতিত্ব দাবি করেননি। যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে একটি সবল ও স্বনির্ভর অর্থনীতি গড়ে তুলতে প্রাণপণ চেষ্টা করেন। তিনি যে তিনটি বাজেট নিজ হাতে প্রণয়ন করেছিলেন তা আজও বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ বাজেট রূপে পরিগণিত। ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর কারাগারে আটক অবস্থায় জাতীয় অন্য তিন নেতার সঙ্গে তাকেও হত্যা করে ঘাতকরা।