জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় ও পদ্ধতি নির্ধারণে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত গ্রহণের পাশাপাশি বিশেষজ্ঞদের মতামত নেওয়া অব্যাহত রেখেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। গতকাল এ বিষয়ে আইন উপদেষ্টা ও অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে বৈঠক করেছে কমিশন। এদিকে জুলাই সনদের খসড়ার ওপর এ পর্যন্ত ২৬টি দল লিখিতভাবে নিজেদের মতামত জমা দিয়েছে। তবে চারটি দল কোনো মতামত দেয়নি। এরা হলো গণঅধিকার পরিষদ (জিওপি), রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ ও ইসলামী ঐক্যজোট।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জানিয়েছে, জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫-এর চূড়ান্ত খসড়া সম্পর্কে ২৬টি রাজনৈতিক দল খসড়ার ভুলত্রুটি ও সংযোজন-বিয়োজনের প্রস্তাবসহ নিজেদের বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেছে। এর মধ্য দিয়ে সনদ চূড়ান্ত করাসহ এর বাস্তবায়ন কৌশল নিয়ে মতপার্থক্য স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে সংবিধানের ঊর্ধ্বে জুলাই সনদকে রাখা, গণভোট, পিআর পদ্ধতি চালুসহ কয়েকটি বিষয়ে জোরালো মতবিরোধ রয়েছে। এসব মতবিরোধ নিরসনে রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। গতকাল রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে দ্বিতীয় দফা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে অংশ নেন সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এম এ মতিন, বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী, সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট ড. শরিফ ভূইয়া ও ব্যারিস্টার ইমরান সিদ্দিক। বৈঠকে ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন ও ড. মো. আইয়ুব মিয়া উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকটি সঞ্চালনা করেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
জানা যায়, ঐকমত্য কমিশনে মতামত জমা দেওয়ার বর্ধিত সময় শেষ হয়ে গেলেও গতকাল নিজেদের মতামত জমা দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও নাগরিক ঐক্য। এর আগে ২২ আগস্ট পূর্বনির্ধারিত শেষ সময়ে খসড়ার ওপর কমিশনে মোট ২৪টি দল মতামত জমা দেয়। এ দলগুলো হলো- বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এলডিপি), খেলাফত মজলিস, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম), বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, ১২ দলীয় জোট, আমজনতার দল, গণফোরাম, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), জাতীয় গণফ্রন্ট, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী), গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (বাংলাদেশ জাসদ), বাংলাদেশ লেবার পার্টি, জাকের পার্টি, ভাসানী জনশক্তি পার্টি, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি। এর আগে ১৬ আগস্ট রাতে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে সংশোধিত খসড়া পাঠানো হয়।