শনিবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

প্রেসক্রিপশন

রাশিদা বেগম এখন দাদি।

নাতি আফনানকে নিয়ে তিনি ভালোই কাটাচ্ছেন। কিছু দিন যাবৎ নামাজ পড়তে ও বসে সবজি কাটতে অসুবিধাবোধ করছেন। কারণ উঠতে বসতে রাশিদা বেগমের হাঁটুতে ব্যথা হয় এবং মাঝে মাঝে ফুলে উঠে।

তিনি এমন একটি হাড়ক্ষয় জনিত রোগে আক্রান্ত হয়েছেন যাকে সাধারণ মানুষ হাঁটু ব্যথা বলে থাকে। আর চিকিৎসা বিজ্ঞানে একে ‘অষ্টিও আর্থ্রাইটিস আবনি’ বলা হয়। হাঁটু ব্যথা শুধু ক্ষয়জনিত রোগেই নয়, বিভিন্ন কারণে হাঁটু ব্যথা হতে পারে। তবে সবচেয়ে বেশি হাঁটু ব্যথা সাধারণত অস্থিক্ষয়ের জন্যই হয়ে থাকে। জোড়ার ভিতর আঠালো এক প্রকার পদার্থ থাকে যা জোড়াকে নড়াচড়া করতে সহজ করে দেয়। অনেক ক্ষেত্রে এই তরল পদার্থ শুকিয়ে গেলেও এই রোগ দেখা দেয়। এ সমস্যা একদিনে তৈরি অস্বাভাবিক ক্রিয়া-বিক্রিয়ার ফলে আস্তে আস্তে রোগের প্রতিক্রিয়া রক্ষণ পায়। এটাকে প্রাথমিক পর্যায়ে হালকা গরম হওয়া, ফুলে যাওয়া, ব্যথা হওয়া থাকে শুরু হয়ে এবং পরবর্তীতে হাঁটু নড়াচড়া করলে প্রচুর ব্যথা হয় রোগীর নামাজ পড়তে, পায়খানা ব্যবহার করতে এবং দৈনন্দিন কাজ করতে অসুবিধা হয়। এছাড়া হাড় ও জোড়ার অন্যান্য রোগে, আঘাত পেলে খেলোয়াড়দের খেলাধুলার সময় ভুল অবস্থানের জন্য হাঁটুতে আঘাত পেলে বা মচকালে অনেক সময় কোমরের অসুবিধার জন্য হাঁটুতে ব্যথা হতে পারে। তরুণদের তুলনায় বয়স্কদের হাঁটু ব্যথা বেশি হয় এবং মহিলাদের সাধারণত ৪০ বছরের পর ঋতুচক্র বন্ধ হয়ে গেলে হরমোনের তারতম্যের জন্য অস্থির কণিকা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে এ রোগ দেখা দিতে পারে।

চিকিৎসা : যেহেতু এ রোগের প্রধান কারণ ক্ষয়জনিত সমস্যা তাই এর প্রধান চিকিৎসা হাড় ক্ষয় বন্ধ করার থেরাপি দিতে হবে। এসব থেরাপি আধুনিক ও নিরাপদ। তার মধ্যে পিআরপি, টিআরপি, ইন্ট্রাআর্টিকুলার অত্যাধুনিক। এ সময় এমনকি সারা জীবন রোগীকে কিছু উপদেশ মানতে হয়। যেমন ডায়াবেটিস থাকলে নিয়ন্ত্রণে রাখা, শরীরের ওজন কমানো, উঁচু কমোড বা পায়খানা ব্যবহার করা, হাঁটু গেড়ে না বসা, নির্দেশিত ব্যায়াম করা। অনেক ক্ষেত্রে শল্যচিকিৎসার প্রয়োজন হলে শল্য চিকিৎসার আগে ও পরে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হয়।

ডা. মো. সফিউল্যাহ প্রধান

 ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞ, ডিপিআরসি হাসপাতাল, ঢাকা।

ফোন : ০১৯৮৯০০০২২২

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর