গরু পাচারের অভিযোগে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করা হল ভারতে। শুক্রবার ঘটনাটি ঘটে দেশটির হিমাচল প্রদেশ রাজ্যের সিরমাউর জেলায়। স্থানীয় বাসিন্দারে গণপ্রহারে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আরও চার পাচারকারী। চারজনকেই আটক করেছে পুলিশ।
পচাড় জেলা পুলিশের ডিএসপি জোগেশ রোলটা ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দিতে গিয়ে বলেন, ‘এদিন সকালে পাঁচ গরু পাচারকারীকে স্থানীয় বাসিন্দারা ধরে ফেলে তাদের পেটাতে থাকে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় নোমান (২৮) নামে এক পাচারকারীর। বাকি চারজনকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
ডিএসপি আরও জানিয়েছেন, ‘পাচারকারীরা একটি ট্রাকে করে পাঁচটি গরু এবং ১০টি ষাঁড় পাচার করছিল। স্থানীয় বাসিন্দারাই গবাদি পশু ভর্তি ওই গাড়িটি দাঁড় করিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। কিন্তু সমস্যা হতে পারে এই ভয়ে ট্রাকটিকে নিয়ে পালাতে গেলে ট্রাকটি অন্য একটি গাড়ির পিছনে ধাক্কা মারে। সেটি দুমড়ে মুচড়ে যায়। কিন্ত স্থানীয় বাসিন্দারা ও পুলিশ ওই ট্রাকটির পিছন ধাওয়া করতে থাকে। এরপর লাওয়াসা চৌকি স্কোয়ারের কাছে ট্রাকটিকে দাঁড় করিয়ে চালক কয়েকটি গরুকে গাড়ি থেকে নিচে ফেলে দেয়। ঘটনাস্থলেই একটি গরুর মৃত্যু হয়, গুরুতর আহত হয় অন্য ৫ টি গরু। এরপরই সরাহন-চন্ডীগড় জাতীয় সড়কের ওপরেই ট্রাকটিকে ফেলে রেখে গভীর জঙ্গলে গা ঢাকা দেয় পাচারকারীরা।
পাচারকারীদের ধরতে জঙ্গলে অভিযান চালায় পুলিশও। কয়েকঘন্টা অভিযানের পর স্থানীয় বাসিন্দাদের সাহায্যে পাঁচ পাচারকারীকে আটক করে পুলিশ’।
কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দারা সংখ্যায় বেশি থাকার কারণে ওই পাঁচ গরু পাচারকারীকে ধরে প্রচন্ড পেটাতে থাকে। এরপর ঘটনাস্থলেই জ্ঞান হারান নোমান। পরে সরাহান হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষনা করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। নোমানরে বাসা উত্তরপ্রদেশের শাহারানপুর জেলার রামপুর গ্রামে। নোমানের ঘনিষ্ঠ আত্মীয় ইমরান আসগর ভারতীয় দন্ডবিধির ৩০২ ধারায় পচাড় থানায় একটি খুনের মামলা দায়ের করেছে। অন্য চার অভিযুক্তরা হলেন ট্রাক চালক মহম্মদ নিশু (৩৭), গুলফাম (২৪), গুলজার (২২) এবং সলমান (২০)। এরা প্রত্যেকেই রামপুর গ্রামের বাসিন্দা। তাদের বিরুদ্ধে পশুদের ওপর নিষ্ঠুর আচরণের জন্য পশু আইন মামলায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। গরু বহনকারী ট্রাকটিকেও আটক করেছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, গতমাসের শেষদিকে উত্তরপ্রদেশের দাদরিতে গরুর মাংস খাওয়ার গুজবে মহম্মদ আকলাখ (৫০)-কে পিটিয়ে হত্যা করে একদল উন্মত্ত জনতা। ওই ঘটনার পর ভারত জুড়ে প্রচুর সোরগোল হয়। ঘটনার নিন্দা জানায় দেশটির বিজ্ঞজনেরা। এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে অনেক সাহিত্যিক তাদের সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরস্কার ফিরিয়ে দেন।
বিডি-প্রতিদিন/ ১৭ অক্টোবর, ২০১৫/ রশিদা