ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে সম্মতি দিয়ে প্যারিসে চলমান বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে ঐতিহাসিক চুক্তি হয়েছে।
শনিবার ২১তম কনফারেন্স অব পার্টিজ বা কপ২১ এ পর প্রায় ২০০ দেশের প্রতিনিধি এই চুক্তিতে সম্মতি দেন। এর ফলে সব দেশ প্রথমবারের মতো কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হলো। খবর বিবিসির
প্যারিসে দুই সপ্তাহ ধরে আলোচনার পর সম্মেলনের সভাপতি ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যরঁ ফাবিউস শনিবার সম্মেলনে প্রতিনিধিদের সামনে একটি চুক্তির খসড়া উপস্থাপন করেন। যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত, জার্মানিসহ বিশ্বের সব শিল্পোন্নত দেশ এই চুক্তিতে সম্মত হওয়ার পর ফাবিউস ‘প্যারিস এগ্রিমেন্ট’ গ্রহণের জন্য সম্মেলনের প্রতিনিধিদের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, “কক্ষের মধ্যে তাকিয়ে আমি দেখছি, প্রতিক্রিয়া ইতিবাচক। আমি কোনো আপত্তি দেখছি না। প্যারিস এগ্রিমেন্ট গৃহীত হল।” তার এ ঘোষণা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সম্মেলনে উপস্থিত প্রতিনিধিরা দাঁড়িয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন এবং হাততালি দিয়ে অভিবাদন জানান।
এই চুক্তি অনুযায়ী ২০২০ সাল থেকে কার্বন নিঃসরণের লাগাম টানবে দেশগুলো। এই চুক্তিকে জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক অর্থনীতিকে কয়েক দশকের মধ্যে রূপান্তরের জন্য ‘ঐতিহাসিক’ পদক্ষেপ হিসেবে অভিহিত করছেন অনেকে।
চুক্তির চূড়ান্ত খসড়া উপস্থাপন করে ফাবিউস বলেছিলেন, এটা ‘ন্যায়সঙ্গত’, আইনি বাধ্যবাধকতামূলক এবং এতে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের সীমা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ‘বেশ কম’ বেঁধে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
চুক্তিতে আরও বলা হয়েছে, উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সহায়তার জন্য ধনী দেশগুলোকে ২০২০ সালের পর থেকে প্রতিবছর ১০ হাজার কোটি ডলার দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এছাড়া প্রতিশ্রুতি ঠিকমত পালন হচ্ছে কি না পাঁচ বছর অন্তর তা পর্যালোচনার বিধান থাকছে।
প্রসঙ্গত, বিশ্বের ক্রমবর্ধমান উষ্ণতা বৃদ্ধির লাগাম টানতে কার্বন নিঃসরণ কমানোর বিষয়ে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে গত ৩০ নভেম্বর জাতিসংঘের আয়োজনে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে জলবায়ু সম্মেলন শুরু হয়। শুক্রবার এই সম্মেলন শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তের আলোচনায় চুক্তির আশা টিকে থাকায় শনিবারও বৈঠক চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
বিডি-প্রতিদিন/১৩ ডিসেম্বর, ২০১৫/মাহবুব