সম্প্রতি সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা তুলে দেয় ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। এ নিয়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে প্রতিবেশী পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে। এই উত্তেজনার মধ্যেই কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতের বিপক্ষে প্রথম সংসদীয় পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতারা। কাশ্মীরের ‘মানবিক সংকট’ অবসানের আবেদন একটি সংসদীয় প্রতিবেদন যুক্ত করেছে সিনেট প্যানেল। খবর দ্য হিন্দুর।
বার্ষিক ফরেন অ্যাপ্রোপ্রিয়েশনস অ্যাক্ট-২০২০ সামনে রেখে সিনেটের ফরেন রিলেশনস কমিটি তাদের প্রতিবেদনে কাশ্মীরের ‘মানবিক সংকট’ অবসানের আহ্বান যুক্ত করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিনেটর ক্রিস ভন হোলেন এই সংশোধনী প্রস্তাব করেছেন।
ক্রিস হোলেন কংগ্রেসনাল প্রতিনিধি দলের সঙ্গে চলতি সপ্তাহে নয়াদিল্লি সফর করেন। সফরে প্রতিনিধি দলটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কাশ্মীর পরিস্থিতির পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র-ভারত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, বাণিজ্য সম্পর্ক এবং প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম বিক্রি নিয়ে আলোচনা করে।
গুরুত্বপূর্ণ রিপাবলিকান নেতা এবং প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত জ্যেষ্ঠ সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম প্রতিবেদনটি সিনেটে উত্তাপন করেন।
ওই প্রতিবেদন বলা হয়, ‘কমিটি অন অ্যাপ্রোপ্রিয়েশনস কাশ্মীরের বর্তমান মানবিক সংকটের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করছে এবং সেখানকার টেলিযোগাযোগ ও ইন্টারনেট পরিষেবা পুরোপুরি চালু, অবরুদ্ধ অবস্থা ও কারফিউ প্রত্যাহার এবং সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ তুলে নেওয়া ঘিরে আটক বন্দিদের মুক্তি দিতে ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।’
দ্য হিন্দুর মতে, গত ২৬ সেপ্টেম্বর জমা দেওয়া ওই প্রতিবেদনে কাশ্মীর ইস্যুতে যে কড়া ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে তা বিস্ময়কর। কারণ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ওই সময় যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছিলেন। হাউস্টনে ট্রাম্পের সঙ্গে ‘হাউডি মোদি’ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ এবং নিউইয়র্কে দুজনের দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের কয়েকদিন পর এই প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়।
ক্রিস হোলেন দ্য হিন্দুকে বলেন, ‘দ্বি-দলীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে নেওয়া এই প্রস্তাব কাশ্মীর পরিস্থিতি সম্পর্কে সিনেটের গভীর উদ্বেগের প্রকাশ এবং সেখানকার মানবাধিকার পরিস্থিতি যে আমরা গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছি সেই বার্তা দেওয়া হয়েছে। ভারত সরকার এই উদ্বেগ গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছে সেটা আমরা দেখতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘মোদির সঙ্গে দেখা করে ব্যক্তিগতভাবে এই উদ্বেগ প্রকাশের বিষয়ে আশাবাদী ছিলাম, কিন্তু তার সঙ্গে দেখা করতে পারিনি।’
ভারত সরকারের আচরণের প্রতিক্রিয়ায় তারা এমন উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কিনা সেটা পরিষ্কার নয়। কারণ সরেজমিন পরিস্থিতি পরিদর্শনে শ্রীনগর যেতে সিনেটর ক্রিস হোলেনের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছিল ভারত সরকার।
বিডি প্রতিদিন/কালাম