মিংক, যার পশম বিশ্বের অন্যতম দামী ফ্যাশন-পণ্য, ডেনমার্কে করোনা সংক্রমণ বাড়ার একটি কারণ হয়ে ওঠায় গণহারে মারা হয় সংক্রামিত মিংকদের। এই পদক্ষেপ সরকারের সমালোচনার কারণ হয়ে উঠছে।
ফ্যাশন দুনিয়ায় মিংকের পশমের চাহিদা সব সময়েই বেশি। কিন্তু ফ্যাশন নয়, অনেকটা বেজির মত দেখতে এই প্রাণী করোনা সংকটে অন্য কারণে ডেনমার্কের শিরোনামে। সম্প্রতি লক্ষ্য করা গেছে বিশেষ ধরনের জিনগত পরিবর্তনের ফলে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত মিংক থেকে সংক্রমিত হচ্ছে মানুষ।
এই খবর প্রকাশিত হবার পর ডেনিশ কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেয় লাখ লাখ মিংক মেরে ফেলার। কিন্তু গত সপ্তাহে ডেনিশ কৃষিমন্ত্রী মোগেন্স ইয়েনসেন স্বীকার করেন যে এই নির্দেশের কোনো আইনি ভিত্তি ছিল না। বুধবার এই খবর প্রকাশিত হবার পর থেকেই বিরোধী দলগুলো সোচ্চার হয়ে ওঠে। পদত্যাগ ঘোষণা করেন কৃষিমন্ত্রী ইয়েনসেন।
তিনি বলেন, ‘‘সংসদে আমার প্রয়োজনীয় সমর্থন নেই, ফলে আমাকে পদত্যাগ করতেই হবে।’’
এছাড়া ডেনমার্কের বিরোধী দলগুলোর মধ্যে থেকে উঠে আসছে প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডরিকসেনের পদত্যাগের দাবিও। বিরোধিনেতা ইয়াকব এলেমান-ইয়েনসেন বলেন, ‘কৃষিমন্ত্রী যা করেছেন, প্রধানমন্ত্রীও তা-ই করুন, আমি চাই। আমি চাই যে, প্রধানমন্ত্রী কোনো ভুল করলে তা স্বীকার করুন, কারণ এই দায়িত্ব তাঁরই ছিল।’
এলেমান-ইয়েনসেনের পাশে রয়েছে তার দল লিবারেল পার্টি ছাড়াও ডেনিশ পিপলস পার্টি। আদৌ সরকার বেআইনি আদেশ দিয়েছে কি না, তা জানতে নিরপক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন এই দলগুলো ছাড়াও অন্যান্য সংসদ সদস্যেরা। কিন্তু নিরপেক্ষ তদন্ত প্রকরিয়ার জন্য ডেনিশ সংসদে এবিষয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রয়োজন, যা নিয়ে সংশয় দেখা যাচ্ছে।
অরহুস বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সমীক্ষা জানাচ্ছে যে, জুলাই মাসে সাধারণ মানুষের মধ্যে সরকারের ওপর আস্থা ছিল ৭৫ শতাংশ। এই সংখ্যাই সাম্প্রতিক মিংক-বিতর্কের ফলে এসে ঠেকেছে পঞ্চাশের আশেপাশে। অন্যদিকে, ডেনিশ কর্তৃপক্ষ বলছে যে, সংক্রামিত মিংকদের মেরে ফেলা হলেও সংক্রমণের সন্দেহের তালিকায় রয়েছে আরও ২৫টি মিংক-খামার। সে বিষয়ে কী করা হবে, তা বলেননি তারা। সূত্র : ডয়চে ভেলে।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক