সন্তানের সামনে পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত এক ফরাসি নারীকে ধর্ষণের দায়ে দুই ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছেন দেশটির আদালত। মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্তরা হলেন আবিদ মেহলি ও শাফকাত আলি বাগগা।
গণধর্ষণ, অপহরণ, ডাকাতি ও সন্ত্রাসের অভিযোগে অভিযুক্ত করে শনিবার লাহোরের বিশেষ আদালত তাদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয়। আসামিদের আইনজীবী বলেছেন, তারা এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন।
২০২০ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ওই নারী লাহোর থেকে গভীর রাতে বেরিয়েছিলেন। তার সঙ্গে দুই সন্তান ছিল। হঠাৎ তার গাড়ির তেল ফুরিয়ে যায়। এতে তিনি গুজরানওয়ালায় আত্মীয়দের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। তারা তাকে মোটরওয়ে ইমার্জেন্সি নম্বরে ফোন করার উপদেশ দেন। তখন ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যবর্তী বয়সী দু’জন যুবক গাড়ির দরজা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে। নগদ অর্থ ও স্বর্ণালংকার কেড়ে নেণ। এরপর পাশেই এক ক্ষেতের ভেতর নিয়ে তার দুই সন্তানের সামনে তাকে ধর্ষণ করেন এবং পালিয়ে যান।
এ ঘটনা প্রকাশ পেলে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। জনগণের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত করা হয়।
পুলিশ বলেছে, এ ঘটনায় মানসিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন ওই নারী। তিনি তাদের ঘটনার শুধু মৌলিক কিছু বিষয় বর্ণনা করেছেন। পরের দিন লাহোরের সবচেয়ে সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা উমর শেখ মিডিয়ার সামনে উপস্থিত হয়ে জানান যে, এ ঘটনার জন্য দায়ী ওই নারী। তিনি প্রশ্ন রাখেন ওই নারী কেন ব্যস্ত সড়কে যাননি। কেন তিনি বাসা থেকে বের হওয়ার আগে গাড়ির জ্বালানি চেক করে বের হননি। বেশ কয়েকটি টিভিতে তিনি বারবার এই পয়েন্ট উত্থাপন করেন। তিনি বলেন, ওই নারী ফ্রান্সে বসবাস করেন। তিনি পাকিস্তানকে ফ্রান্সের মতো করে ভেবেছেন।
পুলিশের এমন বক্তব্যে জনক্ষোভ আরও তীব্র হয়। ভিকটিমকে দায়ী করার জন্য ওই কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করার দাবি ওঠে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সারা পাকিস্তানে বিক্ষোভে অংশ নেন হাজার হাজার মানুষ। তারা নারীদের জন্য ন্যায়বিচার ও উন্নত সুরক্ষা দাবি করেন। এরপর ডিসেম্বরে ধর্ষণবিরোধী নতুন আইন পাস হয়। এর অধীনে বিচার দ্রুত করার ব্যবস্থা করা হয় এবং এতে কঠোর শাস্তির বিধান আছে।
সূত্র: বিবিসি
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ