ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর মসনদে খুব অল্প সময়ের জন্য। দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র ৪৫ দিনের মাথায় পদত্যাগের লিজ ট্রাস। এতে ব্রিটেনের ২০০ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে স্বল্পমেয়াদী প্রধানমন্ত্রীর তকমা পেয়ে যান তিনি। ক্ষমতায় আসার পর করপোরেট কর কমানোর মতো বিতর্কিত সিদ্ধান্ত ও অর্থনৈতিক অস্থিরতার দায়ে দলীয় এমপিদের ক্ষোভের পর ২০ অক্টোবর বাধ্য হয়েই পদত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি।
ক্ষমতায় আসার পর তিনি ব্রিটেনের মানুষকে করছাড়ের সুবিধা দিয়েছিলেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রিত্ব ছেড়ে সেই করদাতাদেরই বোঝা বাড়ালেন লিজ ট্রাস। এখন থেকে আজীবন সোয়া কোটি টাকারও বেশি ভাতা হিসেবে তুলতে পারবেন তিনি।
ব্রিটেনের করদাতাদের অর্থ থেকে প্রতি বছর অন্তত ১ লাখ ১৫ হাজার ব্রিটিশ পাউন্ড (১ লাখ ২৯ হাজার মার্কিন ডলার), যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ ৭২ হাজার টাকা তুলতে পারবেন লিজ ট্রাস।
বৃহস্পতিবার ব্রিটানের প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন লিজ ট্রাস। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার ঠিক ছ’সপ্তাহের মাথায় ইস্তফার ঘোষণা দেন তিনি। তার আগে আর কোনও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে এত অল্প সময়ে প্রধানমন্ত্রিত্ব ছাড়তে হয়নি। একই সঙ্গে লিজ ট্রাসের মতো আর কাউকে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কয়েক সপ্তাহের মধ্যে নিজের দলেরই সদস্যদের বিরোধিতার মুখেও পড়তে হয়নি। ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির ১৩ জন এমপি সরব হয়েছিলেন লিজ ট্রাসের ইস্তফার দাবিতে। তবে ৪৫ দিনের প্রধানমন্ত্রী হয়েও লাভবানই হলেন লিজ ট্রাস। ব্রিটেনের আইন অনুযায়ী, ১ কোটি ৩০ লাখ ৭২ হাজার টাকা তুলতে পারবেন লিজ ট্রাস।
ব্রিটেনের এই আইনের নাম পাবলিক ডিউটি কস্ট অ্যালাওয়েন্স (পিডিসিএ)। ১৯৯০ সালে ব্রিটেনের তৎকালীন নারী প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচার ইস্তফা দেওয়ার পর তার উত্তরসূরী জন মেজর এই নিয়ম চালু করেন। তারপর থেকে ব্রিটেনের বহু প্রধানমন্ত্রীই এই অর্থ পেয়েছেন এবং নিয়েছেন।
এই আর্থিক ব্যয়ভারের ব্যাখ্যা দিয়ে ব্রিটেনের প্রশাসন জানিয়েছে, জনমানসে এই ব্যক্তিত্বদের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। সে কথা মাথায় রেখেই তাদের জনহিতকর কাজ এবং সেক্রেটারি রাখার খরচবাবদ সরকারের পক্ষ থেকে এই ভাতা দেওয়া হয়।
এই অর্থ সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হলেও তার ভার কিন্তু বহন করতে হয় দেশটির জনগণকেই। সূত্র: নিউ ইয়র্ক টাইমস, সিএনএন, বিজনেস ইনসাইডার
বিডি প্রতিদিন/কালাম