ফিলিপাইনের ম্যানিলা উপকূলে ১৪ লাখ লিটার জ্বালানি তেল নিয়ে একটি ট্যাংকার ডুবে গেছে। শক্তিশালী টাইফুন গায়েমির কারণে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যে ট্যাংকারটি ডুবে যায় এবং সেখান থেকে তেল ছড়িয়ে পড়ছে, যা পরিবেশগত বিপর্যয়ের আশঙ্কা বাড়াচ্ছে।
ফিলিপাইনের কোস্টগার্ডের মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল আরমান্দো বালিলো এক ব্রিফিংয়ে বলেন, আমরা সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছি। তেল ছড়িয়ে পড়া আটকাতে আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা ট্যাংকার থেকে তেল ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে প্রাণান্ত চেষ্টা করছে।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, এমটি টেরা নোভা নামে ট্যাংকারটি ফিলিপাইনের পতাকা বহন করছিল এবং ১৪ লাখ লিটার তেল নিয়ে ইলোইলো শহরে যাচ্ছিল। ম্যানিলা থেকে প্রায় সাত কিলোমিটার দূরে সেটি ডুবে যায়। ট্যাংকারটি থেকে ইতোমধ্যে কয়েক কিলোমিটার দূর পর্যন্ত তেল ছড়িয়ে পড়েছে।
অ্যাডমিরাল আরমান্দো আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, যদি ট্যাংকারে থাকা সব তেল ছড়িয়ে পড়ে, তবে এটি হবে ফিলিপাইনের ইতিহাসে তেল ছড়িয়ে পড়ার বৃহত্তম ঘটনা।এ দুর্ঘটনায় ম্যানিলা শহর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিরাট ঝুঁকি রয়েছে বলে জানান তিনি।
পরিবহন সচিব জেইমি বাতিস্তা জানিয়েছেন, দুর্ঘটনাকবলিত ট্যাংকারের ১৭ ক্রুর মধ্যে ১৬ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং নিখোঁজ ক্রুর সন্ধানে অভিযান চলছে। তবে শক্তিশালী বাতাস ও বড় বড় ঢেউয়ের কারণে উদ্ধার প্রচেষ্টা ব্যাহত হচ্ছে।
গত কয়েক দিন টাইফুন গায়েমি ও মৌসুমি আবহাওয়ার কারণে ম্যানিলা ও আশপাশের এলাকাগুলোতে ভারী বৃষ্টি হয়েছে। এমটি টেরা নোভা ডুবে যাওয়ার সঙ্গে বিরূপ আবহাওয়ার কোনো সম্পর্ক ছিল কি না তা তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন ফিলিপাইনের কোস্টগার্ড।
ফিলিপাইনের ইতিহাসে এযাবৎকালের সবচেয়ে বড় তেল ছড়িয়ে পড়ার ঘটনা ঘটেছিল ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে। ওই সময় আট লাখ লিটার জ্বালানি তেল নিয়ে মিন্দোরো উপকূলে একটি ট্যাংকার ডুবে যায়। সেই দুর্ঘটনায় সামুদ্রিক পানি ও পার্শ্ববর্তী সৈকতগুলো দূষিত হয়ে প্রাকৃতিক পরিবেশের ক্ষতি হয় এবং মৎস্য শিকার ও পর্যটন শিল্পে ব্যাপক প্রভাব পড়ে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে, এমটি টেরা নোভা ট্যাংকারের ডুবে যাওয়ার ঘটনায় আরও বড় পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে এবং ফিলিপাইনের কোস্টগার্ডের দ্রুত পদক্ষেপের উপর পরিস্থিতির উন্নতি নির্ভর করছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল