শনিবার, ২৩ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা

মার্কিন পণ্যে পাল্টা শুল্ক বসাল ইইউ

বাণিজ্যযুদ্ধের খুব কাছাকাছি ট্রাম্পের যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ। কিছুদিন আগে ইউরোপ, কানাডা ও চীনের ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর কর আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। এবার যুক্তরাষ্ট্রের ওপর পাল্টা ২৮০ কোটি ইউরো মূল্যের শুল্ক বসিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। বারবন হুইস্কি, মোটরসাইকেল, কমলার রসসহ ইউরোপে রপ্তানি হয় এমন বেশকিছু মার্কিন পণ্যে গতকাল থেকে এ শুল্ক কার্যকর হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। এর মধ্যে তামাক, হার্লি ডেভিডসন মোটরসাইকেল, ক্র্যানবেরি ও পিনাট বাটারসহ বেশির ভাগ পণ্যে বসছে ২৫ শতাংশ শুল্ক। জুতা, কয়েক ধরনের পোশাক ও ওয়াশিং মেশিনসহ কিছু পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য নিয়ে উত্তেজনার মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন পাল্টা এ শুল্ক আরোপ করল। বৃহস্পতিবার ডাবলিনে আয়ারল্যান্ডের পার্লামেন্টে দেওয়া ভাষণে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট জঁ ক্লদ জাঙ্কার বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপের ওপর যে শুল্ক আরোপ করেছে তা ‘সব ধরনের যুক্তি ও ইতিহাসবিরোধী’। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের প্রতিক্রিয়া হবে স্পষ্ট ও যথাযথ। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভারসাম্য ফেরাতে এবং এর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে যা যা করা দরকার আমরা করব।’ গত মার্চে আমদানি করা ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম পণ্যের ওপর যথাক্রমে ২৫ ও ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। বাণিজ্য নিয়ে মতবিরোধের জেরে যুক্তরাষ্ট্র জুনের প্রথম দিন থেকেই ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কানাডা, মেক্সিকোসহ ঘনিষ্ঠ মিত্রদের ওপর এ শুল্ক কার্যকর করে। এ নিয়ে শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোট জি-৭-এর সম্মেলনেও অন্য বিশ্বনেতাদের সঙ্গে ট্রাম্পের মতানৈক্য দেখা যায়। যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের পাল্টায় মার্কিন পণ্যে শুল্ক আরোপের হুঁশিয়ারি আগেই দিয়ে রেখেছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন, মেক্সিকো ও কানাডা। জি-৭ সম্মেলনে বাণিজ্য বিরোধ নিয়ে সুরাহা না হওয়ায় ইউরোপ পাল্টা এ ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হয় বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন। ট্রাম্প প্রশাসনের কট্টর বাণিজ্যনীতির কারণে ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যেও সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে। এরই মধ্যে দেশ দুটি একে অন্যের কোটি কোটি ডলারের রপ্তানি পণ্যে শুল্ক বসিয়েছে। বেইজিং তার ‘ব্যবসার ধরন’ বদলাতে রাজি না হলে চীনের আরও ২০০ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি পণ্যে নতুন করে ১০ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়ে রেখেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের এসব পদক্ষেপকে ‘তীব্র চাপ ও ব্ল্যাকমেইলিং’ হিসেবে আখ্যায়িত করে চীন ‘পাল্টা ব্যবস্থা’ নেওয়ার কথা জানিয়েছে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, চীন ও মেক্সিকোর সঙ্গে বিশাল বাণিজ্য ঘাটতিকেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিজ দেশের অর্থনীতির বিকাশে সবচেয়ে বড় বাধা বলে মনে করেন। ট্রাম্পকে অবশ্য এ নিয়ে একেবারেই চিন্তিত মনে হচ্ছে না। বিশ্ববাজারের প্রতিকূল পরিস্থিতির শঙ্কা সত্ত্বেও এর আগে তিনি বলেছিলেন, ‘বাণিজ্যযুদ্ধ ভালো এবং এতে সহজেই জয়ী হওয়া যাবে।’ বিবিসি

সর্বশেষ খবর