শনিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা
মার্কিন গবেষণা

তীব্র রোদে দুই মিনিটে মরবে করোনাভাইরাস

গরমকাল চলছে। ফলে খুব বেশিদিন আর চোখ রাঙাতে পারবে না করোনা

কেমনে মরবে করোনাভাইরাস। কী করলে নিস্তার পাওয়া যাবে এই অদৃশ্য দানবের হাত থেকে। তার সমাধান খুঁজতে মরিয়া এখন গোটা বিশ্ব। এরমধ্যে ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটিস সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ডিরেক্টরেটের প্রধান উইলিয়াম ব্রায়ান দাবি করলেন, তীব্র রোদে মিনিটদুয়েকের মধ্যেই দুর্বল হয়ে পড়ে করোনাভাইরাস। তিনি আরও জানান, শুধু তীব্র রোদই নয়, করোনাভাইরাস কার্যক্ষমতা সাময়িকভাবে হারায় গরম ও আর্র্দ্র আবহাওয়ায়ও। বৃহস্পতিবার তিনি জানান, গরমকাল চলছে। ফলে খুব বেশিদিন আর চোখ রাঙাতে পারবে না করোনাভাইরাস।

হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে ব্রায়ান জানান, মার্কিনি গবেষকরা এ ইস্যুতেই কাজ করছেন। গবেষকরা বলছেন ঘরের মধ্যে শুষ্ক ও বদ্ধ পরিবেশে জীবন্ত হয়ে ওঠে এই ভাইরাস। কিন্তু সরাসরি সূর্যের আলো পড়লে কর্মক্ষমতা হারায় করোনা। ধীরে ধীরে মারাও যায়। এ তথ্যই আশা জোগাচ্ছে। নিউমোনিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো ফুসফুসের রোগগুলোর লক্ষণ করোনাভাইরাসের রোগের মধ্যে রয়েছে, ফলে গরমে এই রোগগুলোর প্রতিকার হতে পারলে, করোনাভাইরাসের প্রতিকারও সম্ভব বলে মনে করা হচ্ছে। তবে সিঙ্গাপুরের মতো গরম জায়গায়ও সমান সক্রিয় করোনা। সেটাই ভাবাচ্ছে বিজ্ঞানীদের। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই রিপোর্টকে সমর্থন করে জানান, এই তথ্য তিনিও আগে তুলে ধরেছিলেন। কিন্তু কেউ সেভাবে বিশ্বাস করেনি। তাই রিপোর্ট প্রকাশের আগে যথাযথ তথ্য তুলে ধরা প্রয়োজন। জানা গেছে, স্টেইনলেস স্টিলের মতো জায়গায় কার্যক্ষমতা হারাতে ১৮ ঘণ্টা সময় নেয় করোনাভাইরাস। সাধারণ আর্দ্র আবহাওয়ায় এই সময় লাগে। তবে উচ্চ আর্দ্রতাজনিত আবহাওয়ায় সময় নেয় ৬ ঘণ্টা। এর সঙ্গে সরাসরি রোদ লাগলে দুই মিনিটেই মরতে পারে করোনাভাইরাস।

মার্কিন বিভিন্ন গণমাধ্যম জানায়, ১০ সপ্তাহের একটি ট্রায়াল চালাচ্ছিলেন বিজ্ঞানীরা, যাতে দেখা হচ্ছিল ঠিক কোন পথে করোনার জবাব আসে। প্রায় ২০০ কভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর ওপর এই পরীক্ষা চালানো হচ্ছিল। পরীক্ষা চালাচ্ছিলেন গ্রানাডা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। ভিটামিন ডি বা সূর্যালোকে অবস্থিত ভিটামিন মানব শরীরে কাজ করে করোনার অ্যান্টিবডি তৈরি করতে পারে কিনা। উল্লেখ্য, সূর্যালোকে উপস্থিত ভিটামিন ডি মানব শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। যেসব মানুষ রোদে বের হন, তাদের শরীরে ভিটামিন ডি’র উপস্থিতির হার বেশি। অন্যদিকে, একই বিষয়ে পরীক্ষা চালাচ্ছিলেন ডাবলিনের ট্রিনিটি কলেজের গবেষকরা। তারা বলেছেন পূর্ণ বয়স্ক মানুষ ভিটামিন ডি’র সাপ্লিমেন্ট খেলে ৫০ শতাংশ কম ফুসফুসের অসুখে আক্রান্ত হন। সাসেস্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক জেন্না ম্যাকিওশি বলছেন, যদি একজন মানুষের শরীরে প্রয়োজনীয় হারে ভিটামিন ডি উপস্থিত থাকে, তবে অন্যান্য মানুষের তুলনায় তিনি ঠা-া লাগার অসুখে তিন থেকে চারগুণ কম ভুগবেন। এই তথ্য প্রমাণিত ইতিমধ্যেই। সুতরাং বিজ্ঞানীরা মনে করছেন করোনাভাইরাস শ্বাসবাহিত ও ফুসফুসের অসুখ হওয়ায় ভিটামিন ডি এতে কার্যকর ভূমিকা নিতে পারে।

সর্বশেষ খবর