শনিবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

ফের উত্তাল আমেরিকা

পুলিশের হাতে নিহত দুই কৃষ্ণাঙ্গ

ফের উত্তাল আমেরিকা

দুটি পৃথক ঘটনায় কৃষ্ণাঙ্গ দুই ব্যক্তির ওপর পুলিশি অত্যাচারের খবরে আবারও উত্তাল হয়ে উঠল আমেরিকা। প্রথম ঘটনাটি ঘটেছিল গত ২৩ মার্চ রশেস্টারে। অভিযোগ, ৪১ বছরের কৃষ্ণাঙ্গ ড্যানিয়েল প্রুডকে নগ্ন অবস্থায়, হাতকড়া এবং মাথায় কাপড় পেঁচিয়ে রাস্তার ওপর অত্যাচার চালিয়েছিলেন সাত পুলিশকর্মী। সেই ঘটনার ভিডিও সম্প্রতি সামনে আসার পর নতুন করে বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, একজন অফিসার প্রুডের মাথা চেপে ধরে আছেন হাত দিয়ে। একজন অফিসার হাঁটু দিয়ে তাঁর পিঠ চেপে ধরেছেন। অফিসারদের চাপে প্রুডের শ্বাস আটকে যায় এবং তিনি বমি করতে থাকেন। তাতে বিরক্ত হয়ে আরেক অফিসার মাথা চেপে ধরেন দুই পা দিয়ে। ভিডিওতে প্রুড বলতে থাকেন, ‘আপনারা আমাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করছেন’। সেটাই এখনো পর্যন্ত তার শেষ উচ্চারিত শব্দ, যা আরও ইন্ধন জুগিয়েছে বিক্ষোভে। কারণ, তার ১১ মিনিট পর যখন প্রুডকে হাসপাতালে  নিয়ে যায় পুলিশ, তখন তিনি অচেতন। হাসপাতালে পাঁচ দিন পর প্রুডের মৃত্যু হয়। তার পরিবারকে পুলিশ  বলেছিল মাদকাসক্ত অবস্থায় নগ্ন হয়ে রাস্তায় ঘুরতে দেখে তাকে আটক করেছিল পুলিশ। ড্রাগ ওভারডোজেই ড্যানিয়েল প্রুড মারা গেছেন। কিন্তু প্রুডের পরিবার পুলিশের কথায় বিশ্বাস না করে তথ্যপ্রমাণ জোগাড়ের চেষ্টা চালিয়েছিল। অবশেষে ওই দিনের ভিডিও ফুটেজ মেলার পরই বিক্ষোভ চাগাড় দিয়েছে। পরিস্থিতির চাপে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার বিকালে পদক্ষেপ নেন রশেস্টারের মেয়র লাভলি ওয়ারেন। অভিযুক্ত সাত অফিসারকেই বরখাস্ত করেছেন তিনি। মেয়রের সাফাই, ওই ঘটনা সম্পর্কে স্থানীয় পুলিশপ্রধান ল্যারন সিঙ্গলট্যারি তাকে ভুল তথ্য দিয়ে বলেছিলেন, প্রুড বেশি মাদক সেবন করে পুলিশি হেফাজতে মারা গেছেন। ঘটনার প্রকৃত তথ্য পুলিশপ্রধান ল্যারনের কাছে তলব করে মেয়র লাভলি প্রুড পরিবারের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। দোষীদের শাস্তি এবং ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি।

দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটেছে কলাম্বিয়া ডিস্ট্রিক্টে আমেরিকার রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির কাছে। বৃহস্পতিবার পুলিশের প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, এক শ্বেতাঙ্গ পুলিশ অফিসার এক কৃষ্ণাঙ্গ তরুণকে গুলি করছেন। ঘটনাটি ঘটেছিল গত বুধবার। ডিওন কে নামের ১৮ বছরের ওই তরুণ রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়লে তাকে ওইভাবেই ফেলে রেখে এবং অন্যদের তাকে নজরে রাখতে বলে ওই অফিসার পিস্তল খুঁজতে শুরু করেছেন। পরে অফিসারকে বলতেও শোনা গেছে, ভিডিওতে তিনি বন্দুকটি খুঁজে পেয়েছেন। পরে রক্তপাতে মৃত্যু হয় ডিওনের। পুলিশের দাবি, ডিওন স্থানীয় ছিনতাইবাজ দলের সদস্য। তার এবং তার সঙ্গীদের গাড়ি করে পালানোর খবরেই তারা পিছু নিয়েছিল। পুলিশকে দেখেই পিস্তল ছুড়ে ফেলে দিয়ে পালাতে গিয়েছিল ডিওন। কিন্তু নিরস্ত্র, পলায়নরত ডিওনকে পুলিশের গুলি করে হত্যার খবর মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে ওয়াশিংটন ডিসি-তে। অবধারিতভাবেই রাজধানীর আবহাওয়া উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর