শনিবার, ১৯ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

সামান্য অজুহাতেই গাজায় বোমাবর্ষণ ইসরায়েলের

সামান্য অজুহাতেই গাজায় বোমাবর্ষণ ইসরায়েলের

একটু সুযোগ পেলেই ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায় ইসরায়েল। গতকাল জেরুজালেমে ইসরায়েলি বাহিনীর ছোড়া কাঁদানে গ্যাস তুলে নিয়ে তাদের দিকেই তা ছুড়ে মারে ফিলিস্তিনিরা -এএফপি

যুদ্ধবিরতি মুলতবি। গাজা লক্ষ্য করে দিনভর রকেট হামলা এবং বিমান হামলা চালাল ইসরায়েল। ইসরায়েলের সেনা দাবি করেছে, হামলা অব্যাহত থাকবে। গাজায় হামাসের একটি দফতর এবং একটি রকেট লঞ্চিং প্যাড ধ্বংস করা হয়েছে। এখনো হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে গতকাল জেরুজালেমে আল আকসা মসজিদে হাজার হাজার মুসলমান জুমার নামাজের জন্য জড়ো হলে বাধা দেয় ইসরায়েলি বাহিনী। পরে সংঘর্ষ শুরু হলে ১০ জন ফিলিস্তিনিকে আটক করে নিয়ে যায় ইসরায়েল।

তাৎপর্যপূর্ণভাবে, ইসরায়েলে নেতানিয়াহু সরকারের পতনের পর এটা ফিলিস্তিনের ওপর ইসরায়েলের দ্বিতীয় বিমান হামলা। দুই বছরে চারবার নির্বাচন এবং দীর্ঘ রাজনৈতিক টানাপোড়েন কাটিয়ে ১২ বছর পর সদ্য ইসরায়েলের মসনদে বসেছে নতুন সরকার। বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে হারিয়ে সবে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন নাফতালি বেনেট। আর ক্ষমতায় এসেই কট্টোর ইহুদিদের ‘জাতীয়তাবাদী’ মিছিলের অনুমতি দেন তিনি। গত মঙ্গলবার পূর্ব জেরুজালেমসহ ফিলিস্তিনের অধিকৃত ভূখে  অনুষ্ঠিত ইহুদি দক্ষিণপন্থীদের ওই মিছিলের পর থেকেই উত্তপ্ত ইসরায়েল।

উল্লেখ্য, গত মে মাসে জেরুজালেমের আল আকসা মসজিদে ইহুদি ও মুসলিম সম্প্রদায়ের অনুগামীদের মধ্যে সংঘাত শুরু হয়। তারপর তা ক্রমে ভয়াবহ আকার নেয়। রমজানের নামাজ পড়তে জেরুজালেমের আল আকসা মসজিদে জড়ো হয়েছিলেন হাজার হাজার মুসলমান। সেখানে গুলি চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। তারপর থেকেই সংঘাতের সূত্রপাত। প্রায় ১১ দিন ধরে হামাস ও ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মধ্যে যুদ্ধ হয়। অবশেষে মিশরের হস্তক্ষেপে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছিল দুই পক্ষ। কিন্তু সেটা আর টিকবে কি না, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সর্বশেষ সূত্রপাত বৃহস্পতিবার সকালে। ইসরায়েলের অভিযোগ, হামাস আগুনের গোলাভর্তি বেলুন ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে পাঠিয়েছিল। এর আগেও একাধিকবার হামাস এ কাজ করেছে। আগুনের গোলা ভরা বেলুন ইসরায়েলের খেত জ্বালিয়ে দিয়েছে। আর এ অভিযোগ এনেই গাজা স্ট্রিপ লক্ষ্য করে দিনভর একের পর এক রকেট এবং বিমান হানা চালানো হয়। ইসরায়েলের সেনা টুইট করে জানিয়েছে, আক্রমণ আপাতত চলবে। হামাসের বেশ কিছু পরিকাঠামো ধ্বংস করা গেছে বলেও তাদের দাবি। এদিকে ইসরায়েলের হামলার পর হামাসের সদস্যরা প্রকাশ্যে মেশিনগান থেকে গুলি ছুড়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ইসরায়েলের বাহিনী সতর্ক সংকেত হিসেবে সাইরেন বাজিয়েছে। ইসরায়েলের আক্রমণ নিয়ে হামাস অবশ্য এখনো পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, নতুন করে এ সংঘাত ফের যুদ্ধের আবহের দিকে যেতে পারে। হামাস পাল্টা আক্রমণ করলে ইসরায়েলের আক্রমণও বাড়বে। ফের সাধারণ মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা তৈরি হবে। ফলে নতুন করে যুদ্ধবিরতির প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন। উল্লেখ্য, গত মাসে সংঘর্ষে শিশুসহ কমপক্ষে ২৬০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আর ইসরায়েলি নিহত হয়েছে ১৩।

সর্বশেষ খবর