ভারত সরকারের ‘বিতর্কিত’ সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে দেশটির তামিলনাড়ু বিধানসভায় একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে। নতুন এ নাগরিকত্ব আইন দেশের ধর্মনিরপেক্ষতাকে ভঙ্গ করেছে অভিযোগ এনে বুধবার এ প্রস্তাব পাস করেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন দল দ্রাবিড়া মুনেত্রা কাঝাগাম (ডিএমকে) প্রধান এম কে স্টালিন। তিনি বলেন, ‘২০১৯ সালে ভারতের সংসদে পাস হওয়া নতুন নাগরিকত্ব আইন দেশের সংবিধানে বর্ণিত ধর্মনিরপেক্ষ নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এবং দেশে প্রচলিত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পক্ষেও অনুকূল নয়।’ উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে ভারতের সংসদে পাস হয় ‘সংশোধিত নাগরিকত্ব বিল’ (সিএবি)। পরে ওই বিলে রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের পর তা আইনে পরিণত হয়। এ আইনে বলা হয়েছে- বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে নির্যাতনের শিকার হয়ে আসা অমুসলিম (হিন্দু, খ্রিস্টান, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি) নাগরিকদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে ভারতে আসা শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার বিধান রয়েছে। যদিও এ আইনের বিরোধিতা করে কংগ্রেস-তৃণমূল-বসপা-সপা-ডিএমকে-সিপিআইএমসহ অ-বিজেপি দলগুলো।
তাদের অভিমত, ধর্মের ভিত্তিতে করা এ আইনকে কোনোভাবেই স্বাগত জানাবে না তারা। সিএএ ও প্রস্তাবিত জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) বিরোধিতায় আসাম, ত্রিপুরা, পশ্চিমবঙ্গ, কর্ণাটক, দিল্লি, উত্তর প্রদেশসহ ভারতের একাধিক রাজ্যে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। কোথাও কোথাও প্রতিবাদের নামে আন্দোলন সহিংস চেহারা নেয়। ওই সংঘর্ষে গোটা দেশে একাধিক মানুষের মৃত্যুও হয়। যদিও আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজ্য বিধানসভায় এ আইনবিরোধী প্রস্তাব পাস হলেও এর কোনো সাংবিধানিক বৈধতা নেই। কারণ সংবিধান অনুযায়ী এ বিষয়টি ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের আওতাধীন।