শনিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

শূন্য কার্বন নির্গমনের লক্ষ্য প্রত্যাখ্যান ভারতের

আজ স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে শুরু হচ্ছে জলবায়ু নিয়ে সম্মেলন কপ২৬

শূন্য কার্বন নির্গমনের লক্ষ্য প্রত্যাখ্যান ভারতের

স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে আজ থেকে শুরু হচ্ছে জলবায়ু নিয়ে কপ-২৬ সম্মেলন। আর ইতালির রোমে আগামীকাল থেকে শুরু বিশ্বের প্রভাবশালী দেশগুলোর সংগঠন জি-২০ সম্মেলন। দুই সম্মেলনের মুখ্য আলোচনার বিষয় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ঠেকানো। এসব সম্মেলনের আগে সুইডিশ জলবায়ু কর্মী গ্রেটা থার্নবার্গ গতকাল লন্ডনে ‘বড় অর্থায়ন’ এবং জীবাশ্ম জ্বালানি বন্ধের দাবি করা বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে যোগ দিয়ে সংহতি প্রকাশ করেন -এএফপি

‘নেট জিরো’ বা কার্বন নিঃসরণের লক্ষ্য ঘোষণার আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে গ্রিন হাউস নিঃসরণে বিশ্বে তৃতীয় অবস্থানে থাকা দেশ ভারত। কাল থেকে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে শুরু হচ্ছে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন। তার আগে এই অবস্থান ব্যক্ত করল ভারত। নেট-জিরো বিষয়টি হলো কার্বন-ডাই অক্সাইড নির্গমনের একটি অবস্থা। এটি কার্বন-ডাই অক্সাইডের নির্গমনকে তার অপসারণের সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রেখে বা সমাজ থেকে নির্গমন নির্মূল করে অর্জন করা যেতে পারে। পরিবহন, শক্তি উৎপাদন, কৃষি এবং শিল্পের সঙ্গে যুক্ত কার্বন-ডাই অক্সাইডমুক্ত প্রক্রিয়ার প্রসঙ্গে এ শব্দটি ব্যবহৃত হয়। দেশটি জানিয়েছে, কার্বন নিঃসরণ কমাতে এবং বৈশ্বিক তাপমাত্রার বিপজ্জনক বৃদ্ধি এড়াতে একটি যথাযথ উপায় বের করা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

কাল থেকে গ্লাসগোতে শুরু হচ্ছে কোপ২৬ জলবায়ু সম্মেলন। ২০০টি দেশের প্রতিনিধিরা এ সম্মেলনে যোগ দেবেন। ২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তির অধীনে আলোচিত বৈশ্বিক উষ্ণতাবিষয়ক বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা জোরদারে আলোচনা করবে ১২টি দেশ। এই সম্মেলনে কার্বন নিরপেক্ষ হওয়ার ঘোষণা দেওয়ার জন্য চাপের মুখে রয়েছে ভারত। দেশটি ঠিক কীভাবে জলবায়ু পরিবর্তনকে গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছে, সে বিষয়ে আলোচনার জন্য এ সম্মেলনে যোগ দেবেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ২০৫০ সালের মধ্যে বা তার কাছাকাছি সময়ে কার্বন নিরপেক্ষ হওয়ার পরিকল্পনা ঘোষণা করতে যাচ্ছে সম্মেলনে অংশ নিতে যাওয়া বাকি দেশগুলো। তবে ভারতের পরিবেশ সচিব আর পি গুপ্তা সাংবাদিকদের বলেন, ‘নেট জিরো ঘোষণা জলবায়ু সংকটের সমাধান নয়। শূন্য কার্বন নিঃসরণে পৌঁছানোর আগে বায়ুমন্ডলে কী পরিমাণ কার্বন নিঃসরণ হবে সেই বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ’ বলেন তিনি। 

এদিকে কার্বন নিঃসরণ শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে ২০৫০ সালের একটি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন। পরিকল্পনা অনুযায়ী, এই সময়ের মধ্যে দেশগুলো এমন পরিমাণে গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গত করবে যা বন, ফসল, মাটি এবং ‘কার্বন ক্যাপচার’ প্রযুক্তি দ্বারা শোষিত হতে পারে।  সিএনএন

তাদের পাশাপাশি চীন এবং সৌদি আরব ২০৬০ সালের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। কিন্তু সমালোচকদের মতে, বাস্তব পদক্ষেপ ছাড়া এগুলো মূলত অর্থহীন।

ভারত সরকারের গণনার উদ্ধৃতি দিয়ে গুপ্তা জানান, এখন থেকে শুরু করে ২০৫০ সাল পর্যন্ত বায়ুমন্ডলে ৯২ গিগাটন কার্বন নিঃসরণ করবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের ক্ষেত্রে এ পরিমাণ ৬২ গিগাটন কার্বন। এ ছাড়া এ সময়ের মধ্যে চীন নিঃসরণ করবে ৪৫০ গিগাটন কার্বন। 

ভারতের পরিবেশমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব বলেন, ২০১৫ প্যারিস চুক্তিতে উল্লিখিত লক্ষ্যগুলো অর্জনের পথে ছিল ভারত। এমনকি পরিকল্পনাগুলো সংশোধনের অবকাশও রয়েছে তাদের।

২০০৫ সালের তুলনায় ২০৩০ সালে জিডিপি-প্রতি কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ ৩৩ থেকে ৩৫ শতাংশ কমিয়ে আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিল ভারত। ২০১৬ সালের মধ্যে দেশটির কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ ২৪ শতাংশ কমেছে। কিছু পরিবেশ বিশেষজ্ঞের মতে, প্রয়োজনীয় অর্থ এবং নতুন প্রযুক্তির অ্যাক্সেসের ভিত্তিতে গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণের পরিমাণ ৪০ শতাংশ কমিয়ে আনতে পারে ভারত। আলজাজিরা, সিএনএন

সর্বশেষ খবর