শনিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

সূর্য থেকে ছুটে আসছে আগুনের গোলা

সূর্য থেকে ছুটে আসছে আগুনের গোলা

পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে বিশাল সৌরশিখা। লেলিহান সেই শিখা নাকি আজই আছড়ে পড়বে পৃথিবীর বুকে। বড়সড় ক্ষতির মুখে পড়তে পারে গোটা বিশ্বের জিপিএস সিস্টেম। এমনই বার্তা দিয়ে টুইট করে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা-নাসা। সংস্থাটি জানিয়েছে, একটি বড়সড় সানস্পট নজরে এসেছে। সানস্পটের গুরুত্ব হলো এটি নির্ধারণ করে যে, এই বিশাল সৌরশিখা পৃথিবীর কোনো ক্ষতি করতে পারে কি না। এ ছাড়াও জানা গেছে, এই সানস্পটের অবস্থানের ওপর ভিত্তি করে শিখাটি সূর্যের কেন্দ্রে এবং পৃথিবীর মুখোমুখি জায়গায় অবস্থান করছে বলে বোঝা যায়। নাসা টুইট করে জানিয়েছে, ‘সূর্য এখনই একটি বড় শিখা ছেড়ে দিল’। নাসা শিখাটিকে এক্স১ শ্রেণিভুক্ত করেছে। এই সৌরশিখার শনিবার পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রে আঘাত করার সম্ভাবনা রয়েছে। ইউএস স্পেস ওয়েদার প্রেডিকশন সেন্টার (এসডব্লিউপিসি) অনুসারে, এক্স১ শ্রেণির শিখা দক্ষিণ আমেরিকাকেন্দ্রিক এলাকাজুড়ে একটি অস্থায়ী, কিন্তু শক্তিশালী রেডিও ব্ল্যাকআউট সৃষ্টি করতে পারে। নাসা আরও জানিয়েছে সোলার ফ্লেয়ারটি প্লাজমার বিশাল সুনামি তৈরি করেছে। প্লাজমা তরঙ্গটি প্রায় ১ লাখ কিলোমিটার লম্বা ছিল এবং সূর্যের বায়ুমন্ডলের মধ্য দিয়ে ১৬ লাখ মাইল প্রতি ঘণ্টার বেশি গতিতে চলে গেছে। সে গতিতেই পৃথিবীর দিকে এগোচ্ছে এটি, অনুমান বিজ্ঞানীদের। নাসা ব্যাখ্যা করেছে যে, এক্স-ক্লাস সবচেয়ে তীব্র ফ্লেয়ারকে বোঝায়। এক্সের সঙ্গে যুক্ত সংখ্যাটি তার শক্তি সম্পর্কে ধারণা দেয়। একটি এক্স২  ফ্লেয়ার, একটি এক্স১ এর চেয়ে দ্বিগুণ তীব্র, একটি এক্স৩ তিনগুণ তীব্র ইত্যাদি। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ন্যাশনাল অ্যারোনটিকস অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা নাসার মতে, সৌর বাতাস হলো চার্জযুক্ত কণা বা প্লাজমার ঘন স্রোত, যা সূর্য থেকে বেরিয়ে এসে মহাকাশে ভেসে বেড়াতে থাকে।

নাসা জানিয়েছে যে, সৌরঝড়ের ফলে উপগ্রহ সংকেত বাধাগ্রস্ত হতে পারে। সৌরঝড়ের কারণে পৃথিবীর বাইরের বায়ুমন্ডল উত্তপ্ত হতে পারে যা উপগ্রহের ও সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে। এ ছাড়াও এই সৌরঝড় জিপিএস নেভিগেশন, মোবাইল ফোন সিগন্যাল এবং স্যাটেলাইট টিভিতে প্রভাব ফেলতে পারে। ব্যাহত হতে পারে পরিষেবা। প্রভাব পড়তে পারে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন পাওয়ার লাইন বা ট্রান্সফর্মারগুলোতে।

উল্লেখ্য, জুলাই মাসের পর ফের সেপ্টেম্বর মাসে সৌরঝড়ের মুখোমুখি হয় পৃথিবী। ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষক সঙ্গীতা আবদু জ্যোতি, আরভিন এবং ভিএমওয়্যার রিসার্চের প্রকাশিত একটি নতুন রিপোর্ট অনুসারে, এই বৃহৎ সৌরঝড় সম্পর্কে তথ্য মেলে। বলা হয়েছিল এই সৌরঝড়ের প্রভাবে তছনছ হয়ে যেতে পারে গোটা পৃথিবীর ইন্টারনেট পরিষেবা। স্তব্ধ হয়ে যেতে পারে যাবতীয় কাজকর্ম। বিশেষজ্ঞদের ভাষায় এই পরিস্থিতি ‘ইন্টারনেট এপোকালাপসি’।

এর আগে বিশাল সৌরঝড় সর্বশেষ রেকর্ড করা হয়েছিল ১৮৫৯ সালে। এরপর ১৯২১ ও ১৯৮৯ সালেও সৌরঝড় হয়। এতে হাইড্রো-কিউবেক পাওয়ার গ্রিড পুরোপুরি বসে যায়। ৯ ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল কানাডা।

সর্বশেষ খবর