শিরোনাম
শনিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

গুয়ান্তানামোয় ভয়ংকর সিআইএ

বিবস্ত্র করে মারধর, কুকুরের মতো শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা, ছাদের সঙ্গে হাত বেঁধে ঝুলিয়ে রাখা, শ্বাসরোধ করতে নাকে-মুখে পানি ঢালা, জোর করে খাওয়ানোর মতো আরও ভয়ংকর যে সব নির্যাতন চলত মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র বন্দীশিবিরে সে সবেরই বিস্তারিত বর্ণনা এই প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে তুলে ধরেছেন সাবেক আল-কায়েদা সদস্য ও গুয়ান্তানামো বে কারাগারের বন্দী মজিদ খান। বৃহস্পতিবার গুয়ান্তানামোয় মার্কিন ঘাঁটির সামরিক আদালতে হাজির হয়ে মজিদ খান ২০০৩ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত তার ওপর চলা সিআইএ’র নির্যাতনের বর্ণনা দিয়েছেন। সেই কাহিনি তুলে ধরা হয়েছে দ্য নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকার প্রতিবেদনে। সিআইএ’র সেই কঠোর জিজ্ঞাসাবাদ কৌশলের মুখে পড়ে দিনের পর দিন কতটা যন্ত্রণাদায়ক অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে তা নিয়েই আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন ৪১ বছর বয়স্ক মজিদ খান। যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোরের সাবেক এই বাসিন্দা পরবর্তীতে হয়েছিলেন জঙ্গি গোষ্ঠী আল-কায়েদার দূত। টুইন টাওয়ারে ৯/১১ এর সন্ত্রাসী হামলার পর মজিদ সিআইএ’র জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়েন। সাবেক এই আল-কায়েদা সদস্য তার বিরুদ্ধে আনা সন্ত্রাস, ও খুনসহ আরও কিছু অভিযোগ স্বীকার করেছেন। শুনানি শেষে শুক্রবার যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে রায় ঘোষণা করার কথা রয়েছে সামরিক আদালতের। রায়ে তার ২৫ থেকে ৪০ বছরের কারাদন্ড হতে পারে। নির্যাতনের বর্ণনা দিতে গিয়ে মজিদ জানান, ছাদের সঙ্গে তাকে হাত বেঁধে দীর্ঘ সময় ঝুলিয়ে রাখা হতো। লম্বা সময় ধরে ঘুমাতেও দেওয়া হতো না। জাগিয়ে রাখতে দিনের পর দিন ঢালা হতো বরফ পানি। মাথা ঠেসে ধরে রাখা হতো পানির নিচে। পানি থেকে ওপরে তোলা মাত্র নাকে-মুখে আবার ঢালা হতো পানি। সিআইএ’র নির্যাতন নিয়ে ২০১৪ সালে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছিল সেনেট ইন্টেলিজেন্স কমিটি। সেই প্রতিবেদনেও উঠে এসেছিল মজিদ খানের ওপর নির্যাতনের বিবরণ। কমিটি সে সময় জানিয়েছিল, মজিদ খাবার খেতে না চাইলে সিআইএ’র জিজ্ঞাসাবাদকারীরা তার পায়ুপথ দিয়ে খাবার ঢুকিয়ে দিতেন। নাকে নল ঢুকিয়েও খাবার খাওয়ানো হতো।

 সিআইএ’র বন্দীশিবিরে প্রার্থনা করারও সুযোগ মিলত না বলে জানিয়েছেন মজিদ। তিনি জানান, বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে ২০০৬ সালের সেপ্টেম্বরে তাকে কিউবার গুয়ান্তানামো বে কারাগারে নেওয়া হয়। তার আগে প্রায় তিনবছর সিআইএ’র অন্য গোপন বন্দীশিবিরগুলোতে রাখা হয়েছিল তাকে। মজিদ বলেন, গুয়ান্তানামোয় বন্দী থাকার ছয়বছর পর্যন্ত তিনি কখনো দিনের আলো দেখেননি।

সর্বশেষ খবর