শেষ হতে চলল জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৬। স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো ১৩ দিনব্যাপী এ সম্মেলন আগামীকাল শেষ হচ্ছে। জলবায়ু বিশারদরা দাবি করছেন সম্মেলনে আশানুরূপ কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। তবে সম্মেলনে একটি খসড়া চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে যেখানে ২০২২ সালের শেষ নাগাদ দেশগুলোকে তাদের কার্বন- নিঃসরণ লক্ষ্যগুলোকে শক্তিশালী করার জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে।
খসড়া প্রকাশ হলেও এটিই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নয়। চূড়ান্ত খসড়া গ্লাসগোর ঐতিহাসিক জলবায়ু সম্মেলনের শেষে প্রকাশ করা হবে। এবারের সম্মেলনে পোল্যান্ড, ভিয়েতনাম ও চিলির মতো বড় বড় কয়লা ব্যবহারকারী দেশ জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সরে আসার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি একক ভূমিকা রাখে কয়লা। যুক্তরাজ্য জানিয়েছে, ১৯০টি দেশ ও সংস্থা কয়লার ব্যবহার ছাড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে অস্ট্রেলিয়া, ভারত, চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মতো বিশ্বের সবচেয়ে বড় কয়লা নির্ভরশীল দেশগুলো এই প্রতিশ্রুতিতে স্বাক্ষর করেনি। প্রতিশ্রুতিতে স্বাক্ষকারী দেশগুলো নিজেদের দেশে এবং বিদেশে নতুন কয়লা চালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিনিয়োগ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এ ছাড়া ২০৩০ সালের মধ্যে ধাপে ধাপে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন থেকে বেরিয়ে আসার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। দরিদ্র দেশগুলোর ক্ষেত্রে এই সময়সীমা ২০৪০-এর দশক।যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য এবং জ্বালানিমন্ত্রী কোয়াসি কোয়ার্টেং বলেন, ‘কয়লার অবসান আমরা দেখতে পাচ্ছি। বিশ্ব সঠিক পথে আগাচ্ছে, কয়লার ভাগ্য আটকে দিতে প্রস্তুত আর ক্লিন এনার্জি চালিত ভবিষ্যৎ গড়ার পরিবেশগত এবং আর্থিক সুবিধা আঁকড়ে ধরেছে।’
তবে নথিতে ধারণা দেওয়া হয়েছে, বিশ্ব উষ্ণায়নের মারাত্মক প্রভাবগুলো মোকাবিলায় দুর্বল দেশগুলোকে আরও সহায়তা করতে হবে।
সম্মেলনকে ছাপিয়ে আন্দোলন : এদিকে সম্মেলনের সময় যত শেষ হচ্ছে, জলবায়ু রক্ষার দাবি করা সংস্থা ও ব্যক্তিদের প্রতিবাদ তত বেড়েছে। সুইডেনের পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ সেপ্টেম্বরে ইতালির মিলানে এক সমাবেশে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এবং ভারতের নরেন্দ্র মোদির বক্তব্যকে ফাঁকা বুলির সঙ্গে তুলনা করতে বলেছিলেন ‘ব্লা, ‘ব্লা, ‘ব্লা, ‘ব্লা’। আর এরপর থেকে ক্ষুদ্র এই শব্দটি জলবায়ু আন্দোলনের একটি জনপ্রিয় স্লোগান হয়ে উঠেছে।
দুই দিন আগেও গ্লাসগোতেও তরুণদের বিক্ষোভ-সমাবেশে শব্দটি পুনরাবৃত্তি করেন থুনবার্গ। তিনি যখন বলেন যে কপ-২৬ “ব্লা-ব্লা-ব্লা” রাজনীতিকদের দুই সপ্তাহের একটি উৎসব, এর সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের কোনো সম্পর্ক নেই।’ তার এই উপহাসকে স্বাগত জানাতে ভুল করেনি সমাবেশে অংশ নেওয়া অন্যরা।