শনিবার, ১৪ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

২০ হাজার বছরের পুরনো ক্যালেন্ডার

২০ হাজার বছরের পুরনো ক্যালেন্ডার

কবে থেকে ক্যালেন্ডার ব্যবহার করছে মানুষ? হিসাব রাখছে সন-তারিখের? রহস্যজনক এক গুহা ঘুরে এসে চাঞ্চল্যকর তথ্য জানালেন ইতিহাস গবেষকরা। আল্পসের গুহায় মিলেছে সেই হদিস। তেমনটাই দাবি করেছেন ইংল্যান্ডের গবেষকরা। তাদের অনুমান, প্রায় ২০ হাজার বছর আগে গুহাবাসী মানুষ প্রথম ক্যালেন্ডার ব্যবহার করা শুরু করে। প্রসঙ্গত, গত মাসখানেক আগে ইউরোপের আল্পস পর্বতমালায় একটি গুহার সন্ধান পান গবেষকরা। সেখানে আদিম মানুষের আঁকা গুহা চিত্র বিশ্লেষণ করেই তেমনটা দাবি করেছেন তারা। গোটা বিষয়টি ক্যামব্রিজ আর্কেওলজি জার্নালে প্রকাশিতও হয়েছে। প্রত্নতত্ত্ববিদরা জানিয়েছেন,

গুহাচিত্রে কিছু ডট চিহ্ন মিলেছে। এ ছাড়া দেখা গেছে ইংরেজি ণ-র মতো অক্ষর। মূলত, দিনের হিসাবে রাখতেই এ চিহ্নগুলো ব্যবহার করা হতো বলে দাবি করেছেন গবেষকরা।

নানা ধরনের সাইন এ গুহার গায়ে আঁকা। মানবজাতির ইতিহাসে এ একটা বড় ধরনের আবিষ্কার। গুহাগাত্রে যা আঁকা রয়েছে, তা থেকে তাদের শিকার ধরার খবরও মিলেছে।

প্যালিওলিথিক গুহায় আগেও অনেক কেভ আর্টের সন্ধান মিলেছে। সেই কেভ আর্টের মধ্যে হাতের ছাপ, হাতে আঁকা নানা চিহ্নের হদিস মিলেছে। এগুলোকে ননফিগারেটিভ মার্ক বা অ্যাবস্ট্র্যাক্ট আর্টও বলা হয়। এসব নিয়ে বহুদিন ধরেই গবেষণা চলছে।

বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছেন পোর্টল্যান্ডে স্টেট ইউনিভার্সিটির নৃতত্ব গবেষক মেলানি চাং। তার কথায়, ‘আপার প্যালিওলিথিক যুগের মানুষের সন-তারিখের বোধ খুব ভালো ছিল না। ঋতু পরিবর্তনের পার্থক্যটা বুঝতে পারত তারা। সেই কারণেই গুহার গায়ে নানা ধরনের চিহ্ন বা সংকেত ব্যবহার করত এ যুগের মানুষ। এ সংকেতগুলোর একটি নির্দিষ্ট অর্থ রয়েছে।’ এর দুই-তিন ধরনের অর্থ বের করা উচিত নয় বলে দাবি করেছেন গবেষক চাং। তিনি আরও জানিয়েছেন, বছরের একটা নির্দিষ্ট সময় যে বৃষ্টি বেশি হয় বা বরফ পড়ে, এটা সেই যুগের মানুষ বুঝে গিয়েছিল। সংকেতের মাধ্যমে সেই হিসাবেই রাখা হতো বলে অনুমান।’

তবে প্রত্নতত্ত্ববিদদের দাবি, আল্পসের গুহার গায়ে পাওয়া আদিম মানুষের হাতে আঁকা চিহ্ন মানব সভ্যতার প্রাচীনতম নিদর্শন। এর আগে ২০ হাজার বছরের প্রাচীন কোনো গুহা চিত্র উদ্ধার হয়নি। গবেষণা বলছে, এ চিহ্নমালা থেকে বোঝা যাচ্ছে, বরফযুগে হান্টার-গ্যাদারারসরা একটা সিস্টেমেটিক ক্যালেন্ডার ব্যবহার করতেন।

সর্বশেষ খবর