ইউক্রেনকে ক্ষয়প্রাপ্ত ইউরেনিয়ামযুক্ত গোলাবারুদ সরবরাহ করার কথা ঘোষণা করেছে ব্রিটিশ সরকার। এর কয়েক দিনের মধ্যেই গত শনিবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন ইউক্রেনের সঙ্গে সীমান্তে থাকা বেলারুশে কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র স্থাপন করার ইচ্ছের কথা ঘোষণা করেন। রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুসারে, তিনি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বক্তৃতার সময় উল্লেখ করেছেন, বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার গ্রিগোরিভিচ লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে আলোচনার কারণটি ইউক্রেনকে ক্ষয়প্রাপ্ত ইউরেনিয়াম অস্ত্র সরবরাহ করা। ব্রিটিশ উপ-প্রতিরক্ষা যুক্তরাজ্যের এ সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেছিলেন।
এদিকে রাশিয়ার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, বেলারুশের প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কো তার ভূখন্ডে রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র স্থাপনের বিষয়ে আগ্রহী। এ বিষয়ে এপির প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন সরকার বিশ্বাস করে যে, ক্রেমলিনের কাছে প্রায় ২ হাজারটি কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের বোমা, ওয়ারহেড এবং আর্টিলারি রাউন্ড যা কৌশলগত বিমান দ্বারা বহন করা যেতে পারে, তবে রাশিয়া বেলারুশে কতগুলো পারমাণবিক অস্ত্র বজায় রাখবে তা নির্দিষ্ট করেনি। যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী ব্যারোনেস গোল্ডি সম্প্রতি বলেন, ইউক্রেনকে দেওয়া চ্যালেঞ্জার দুই যুদ্ধের ট্যাঙ্কের জন্য কিছু গোলাবারুদ ক্ষয়প্রাপ্ত ইউরেনিয়াম আর্মার-পিয়ার্সিং রাউন্ড রয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতেই রুশ প্রেসিডেন্ট পারমাণবিক অস্ত্রের ঘোষণা করেন।
ক্ষয়প্রাপ্ত ইউরেনিয়াম কি?: প্রাকৃতিক ইউরেনিয়ামের মতো ক্ষয়প্রাপ্ত ইউরেনিয়ামেরও একই রাসায়নিক গঠন রয়েছে। প্রক্রিয়াটি ২৩৫ আইসোটোপকে সরিয়ে দেয় এবং প্রধানত অ-বিভাজনযোগ্য। ক্ষয়প্রাপ্ত ইউরেনিয়াম অত্যন্ত ঘন, সিসার চেয়ে ১.৭ গুণ বেশি, যা এটিকে আর্মার-পিয়ার্সিং শেল তৈরির জন্য উপযুক্ত করে তোলে। গবেষণা অনুসারে, ক্ষয়প্রাপ্ত ইউরেনিয়াম তেজস্ক্রিয় এবং বিষাক্ত উভয়ই। যদিও অতীতের গবেষণায় পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে, এ প্রভাবগুলোর কোনোটিই পৃথকভাবে উল্লেখযোগ্য ঝুঁকি নয়, কিছু বিশেষজ্ঞ এখনো উদ্বিগ্ন রয়েছেন যে, উভয়ের সমন্বয় ক্ষতিকারক প্রভাবের দিকে নিয়ে যেতে পারে।রাশিয়ার অগ্রগতির কথা স্বীকার করল ইউক্রেন : ইউক্রেন বলেছে, পূর্বাঞ্চলে বাখমুত নগরীর যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়া বাহিনী কিছুটা অগ্রগতি অর্জন করেছে। তবে তাদের প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বহু জীবনের মূল্যে এসেছে এ অর্জন। ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের ছোট্ট খনির নগরী বাখমুত। কয়েক মাস ধরে রাশিয়া বাহিনীর আক্রমণের প্রধান নিশানা এই নগরী। চলমান যুদ্ধে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে ইউরোপে সবচেয়ে দীর্ঘ ও রক্তাক্ত লড়াইক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে বাখমুত। এ নগরীর লড়াইয়ে প্রায় পাঁচ মাস ধরে আত্মরক্ষামূলক অবস্থানে থেকে লড়ে এসেছে ইউক্রেন বাহিনী। তবে তারা খুব শিগগিরই রাশিয়া বাহিনীর ওপর পাল্টা আক্রমণ শানানোর পরিকল্পনা করছে বলে জানিয়েছে।