পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের আট জ্যেষ্ঠ নেতাকে দাঙ্গা চলাকালে সেনা স্থাপনায় হামলার ঘটনায় ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির এক সন্ত্রাসবিরোধী আদালত। তাদের আইনজীবী জানিয়েছেন, মঙ্গলবার গভীর রাতে লাহোরের এক কারাগারে এ রায় দেন আদালত। কারাবন্দি ইমরানের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ আনা হয়েছে। কিন্তু তার বিচার পৃথকভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। রয়টার্স জানিয়েছে, ২০২৩ সালের ৯ মে ইমরান খানের গ্রেপ্তারের পর দেশজুড়ে ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। ওই সময় রাওয়ালপিন্ডির সেনা সদর দপ্তর এবং লাহোরে এক জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তার বাসভবনসহ সরকারি ও সামরিক স্থাপনায় হামলা চালায় বিক্ষুব্ধ জনতা।
এসব ঘটনায় উসকানি দেওয়ার অভিযোগে ইমরানসহ পিটিআই নেতাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়। এই মামলাগুলোরই একটির রায় হয়েছে মঙ্গলবার, তবে ইমরান খানের বিচার এখনো চলছে এবং এই রায় তার মামলার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত নয়। সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে আছেন পিটিআইয়ের জ্যেষ্ঠ নেতা পাঞ্জাব সরকারের সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়াসমিন রশিদ, সেনেটর ইজাজ চৌধুরী, সাবেক গৃহায়ণমন্ত্রী মাহমুদুর রশিদ এবং ইমরান খানের ঘনিষ্ঠ সহচর ও পাঞ্জাবের সাবেক প্রাদেশিক গভর্নর উমর সারফরাজ চিমা। তাদের আইনজীবী বুরহান মোয়াজ্জম বলেছেন, ‘একই অভিযোগে ছয়জনকে খালাস ও আটজনকে সাজা দেওয়া বিস্ময়কর। আমরা রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করব।’ তবে একই মামলায় পিটিআইর ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মাহমুদ কুরেশিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। যদিও তিনি অন্য মামলায় এখনো আটক আছেন। ফলে এই খালাসে তার মুক্তি মিলবে কি না তা পরিষ্কার নয়। পাকিস্তানের উপ-আইনমন্ত্রী আকিল মালিক বলেছেন, আদালতের রায় ‘আইন ও সংবিধান অনুযায়ী’ হয়েছে। ২০২২ সালে অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া ইমরান খান বর্তমানে একাধিক মামলায় কারাবন্দি। দুর্নীতি, আদালত অবমাননা এবং রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য ফাঁসের মতো অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সব অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি দাবি করেছেন, এসব মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। অভিযোগের আঙুল পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দিকে উঠলেও পিটিআইকে লক্ষ্যবস্তু বানানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছে তারা। ৯ মে-র ওই সহিংসতায় শত শত কোটি রুপি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে অভিযোগ পাকিস্তান সরকারের। এই সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগে শুধু পাঞ্জাব থেকেই তিন হাজারের বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়।