তাহসিন আজিম ঢাকার একটি নামকরা স্কুলের শিক্ষার্থী। তার বাবা পেশায় একজন ব্যবসায়ী এবং ঢাকায় তাদের বহুতল ভবনও আছে। ফলে পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে যথেষ্ট পরিমাণ টাকা হাতখরচের জন্য দেওয়া হয়। নিজের প্রয়োজন পূরণের পরও অনায়াসে সে টাকা থেকে নিয়মিত কিছু দান করা যায়।
তাহসিন আজিম দান করতে পছন্দ করে এবং নিজের হাতখরচ ও টিফিনের টাকা থেকে নিয়মিত কিছু টাকা দান করে। তার প্রশ্ন হলো, যেহেতু এই টাকা তার উপার্জনের নয়, তাই তা দান করলে সে সওয়াব পাবে কি না?
প্রাজ্ঞ আলেমরা বলেন, মা-বাবা ও অভিভাবকরা যে টাকা সন্তুষ্টির সঙ্গে দেন এবং যাতে কোনো ধরনের প্রতারণা থাকে না, তা দান করলে শিশু ও তাকে অর্থ প্রদানকারী অভিভাবক উভয়ে সমান সওয়াব পাবে। আল্লাহর অনুগ্রহ ও বদান্যতার প্রতি এটাই মুমিনের প্রত্যাশা। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিস থেকে অনুরূপ ধারণাই পাওয়া যায়।
তিনি বলেন, নবী (সা.) বলেছেন, ‘যদি কোনো নারী তার স্বামীর ঘর থেকে অপচয় না করে কোনো খাবার দান করে, তাহলে সে নারী এ দানের সওয়াব পাবে, তার স্বামীও সওয়াব পাবে এবং খাবার সংরক্ষণকারীও সওয়াব পাবে। স্বামী সওয়াব পাবে উপার্জনের, স্ত্রী সওয়াব পাবে দান করার।’
(সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৪৪০; সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১০২৪)
কোনো কোনো বর্ণনায় ‘দান করে’ বাক্যের পরিবর্তে ‘খরচ করে’ বাক্য ব্যবহার করা হয়েছে, যা অধীন ব্যক্তির জন্য আরো বড় পরিসরে যেকোনো নেক কাজে অর্থ ব্যয়ের অবকাশ দেয়।
তবে ফকিহ আলেমরা বলেন, এমন দান গ্রহণযোগ্য হওয়ার শর্ত হচ্ছে, এমন দান ও ব্যয়ের মাধ্যমে মূল মালিকের সম্পদ নষ্ট না করা। যেমন স্ত্রী-পরিবার এত বেশি ব্যয় করা যে পিতা ও স্বামীর সম্পদে ঘাটতি তৈরি হয়ে যায়, অথবা তা স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি হয়। যদি এমন কোনো খাতে ব্যয় করার ইচ্ছা করে, যাতে বেশি পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হয়, তবে অর্থ প্রদানকারীর অনুমতি নিতে হবে। চাই সে স্বামী, পিতা বা অন্য কোনো অভিভাবক হোক। (ফাতহুল বারি : ৩/৩০৩)
আল্লাহ সর্ববিষয়ে সবচেয়ে ভালো জানেন।