ডাকাতের হুমকিতে ভয়ে থানায় ঢুকছে না পুলিশের এক সাব-ইনস্পক্টর। দু'দিন ধরে লাপাত্তা হয়ে আছেন তিনি। ইতোমধ্যে রুলবুক মেনে তার নামে 'নিখোঁজ' ডায়েরিও করেছে বসিরহাট থানা।
অপরাধ জগতে বাদুড়িয়ার শ্রীকাটি গ্রামের উত্তরপাড়ার বাসিন্দা ফিরোজ আহমেদের নামডাক বহু দিনের। উত্তর ২৪ পরগনার একাধিক থানায় ডাকাতি, ছিনতাই, মাদক পাচারসহ নানা অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। একবার পুলিশের চোখে মরিচের গুঁড়ো ছিটিয়ে প্রিজন ভ্যান থেকে পালানোর চেষ্টাও করেছিলেন। আপাতত ধরা পড়ে আছেন দমদম সেন্ট্রাল জেলে।
ফিরোজের স্ত্রীর সঙ্গে প্রেম হয় সাব-ইনস্পেক্টরের। ফিরোজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত করার সময় থানায় যাতায়াতের সময় পরিচয় গভীর সম্পর্কে রূপ নেয়। আটচল্লিশের সংসারী উর্দিধারী ঠিক করে ফেলেন, বিয়ে করবেন ২৭ বছর বয়সী এই নারীকে। সাব-ইনস্পেক্টরের বক্তব্য, শ্বশুরবাড়ির লোকজন ওকে মারধর করত। হুমকি দিত। ওর জীবনের করুণ কাহিনী শুনেই আকৃষ্ট হয়ে পড়ি। গত জুনেই জেলে থাকা স্বামীকে ডিভোর্স দেয় ও। দুই পরিবারের মত নিয়ে জানুয়ারিতে আমরা রেজিস্ট্রি করি।
হুগলির চন্দননগরে এই পুলিশ সদস্যের পরিবারে আছেন স্ত্রী আর বছর ষোলোর ছেলে। অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে ছুটি নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়েটা সেরে ফেলেন। তিনি বলেন, আমার প্রথম স্ত্রীও এই বিয়েতে আপত্তি করেননি। আইন মেনেই সব হয়েছে। কিন্তু ফিরোজের সঙ্গী-সাথীরা বসিরহাট থানায় ফোনে হুমকি দিতে শুরু করলেন। দু'জনকেই জানে মেরে ফেলার কথা বলা হচ্ছে।
এদিকে, জেলার পুলিশকর্তাদের একাংশের মতে, তদন্তকারী অফিসার হিসাবে অভিযুক্তের স্ত্রীকে বিয়ে করে বসাটা উচিত কাজ হয়নি। আর এক অংশ আবার বলছে, কে কাকে বিয়ে করল, সেটা দেখা আমাদের কাজ নয়। দু'জনেই প্রাপ্তবয়স্ক। নিয়ম-কানুন মেনেই বিয়ে হয়েছে। তবে আইনশৃঙ্খলার অবনতি যাতে না হয়, সেটা দেখতে হবে।
চিন্তিত নববধূও। এটি তার তৃতীয় বিয়ে। প্রথম পক্ষের স্বামী ছিলেন দর্জি। দ্বিতীয় পক্ষ ডাকাত। তৃতীয় পক্ষ পুলিশ। তার কথায়, ভুল লোককে সঙ্গী করে জীবনে অনেক কষ্ট পেয়েছি। এবার একজন সৎ মানুষকে বিয়ে করতে পেরে আমি খুশি।