পশ্চিমবঙ্গের ভাগীরথী নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১৫ জনের লাশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। কয়েকজন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।
শনিবার রাতে রাজ্যটির বর্ধমান জেলার কালনা খেয়াঘাটে এই নৌকাডুবির ঘটনাটি ঘটে। কালনার খেয়াঘাট সংলগ্ন এলাকায় ভবা পাগলার মেলা দেখে নদীয়া জেলার শান্তিপুরে নিজেদের বাসায় ফিরছিলেন যাত্রীরা। এরপর মাঝ গঙ্গাতেই নৌকাটি ডুবে যায়। অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই করার জন্যই নৌকাটি শেষ পর্যন্ত টাল সামলাতে না পেরেই সেটি পানিতে তলিয়ে যায় বলে স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন। তাদের অভিযোগ করেছেন মেলা দেখে বাসায় ফেরার সময় নৌকাটিতে প্রায় ৭০ জনের মতো যাত্রী উঠলেও পুলিশের তরফে কোন আপত্তি করা হয়নি। এরপর কালনার খেয়াঘাট ছেড়ে মাঝপথে আসতেই নৌকাটি উল্টে যায়।
শনিবার রাতে ওই দুর্ঘটনার পরই স্থানীয় বাসিন্দাদের সহায়তায় প্রায় ৫০ যাত্রীকে উদ্ধার করা গেলেও কম আলোর কারণে উদ্ধারকাজ বন্ধ রাখা হয়। রবিবার সকাল হতেই ফের উদ্ধারকাজ শুরু হয়। উদ্ধারকাজে সহায়তা করে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দল, ফায়ার সার্ভিস, রাজ্য পুলিশ পরে নামানো হয় ডুবুরিকেও। কিন্তু সন্ধ্যা পর্যন্ত মাত্র একটি লাশ উদ্ধার করতে সক্ষম হয় উদ্ধারকারী দল। এরপর রবিবার সারারাত ধরেই উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় জেলা প্রশাসন। অবশেষে সোমবার সকাল পর্যন্ত ১৫ টি লাশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। নিখোঁজদের সন্ধানে এখনও অভিযান চালানো হচ্ছে।
এদিকে স্বজন হারানোর বেদনায় খেয়াঘাটে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্বজনদের ছবি নিয়ে অনেকেই ভিড় জমিয়েছেন খেয়াঘাটে।
উদ্ধারকাজে প্রশাসনিক ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে রবিবারই শান্তিপুরের দিকে নৃসিংহপুর খেয়াঘাটে নোঙর দেওয়া একাধিক নৌকা ও লঞ্চে অগ্নিসংযোগ ঘটায় উত্তেজিত মানুষ। পরিস্থিতি সামাল দিতে এলে পুলিশকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে তারা। একসময় পুলিশকে লক্ষ্য করে ইঁট ছুঁড়তে থাকে। জনতার ছোঁড়া ইটের হামলায় আহত হন পুলিশের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা।
অন্যদিকে, রবিবার থেকে কালনা-শান্তিপুর খেয়াঘাটে নৌকা চলাচল বন্ধ রাখায় দুর্ভোগে পড়েছেন নিত্যযাত্রী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ।
বিডি-প্রতিদিন/ ১৬ মে, ২০১৬/ আফরোজ