৮ জানুয়ারি, ২০২০ ১৭:১০

এটা আন্দোলন নয়, এটা দাদাগিরি আর গুন্ডামি: মমতা

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

এটা আন্দোলন নয়, এটা দাদাগিরি আর গুন্ডামি: মমতা

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (ক্যা), জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) সহ কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের 'শ্রমিক বিরোধী নীতির' বিরুদ্ধে বুধবার ভারত জুড়ে হরতালের ঘোষণা দেওয়ায় বামদের নিশানা করেছেন পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাশীল ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী তথা রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। 

এদিন দুপুরে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সাগর এলাকায় গণমাধ্যম এর প্রশ্নের উত্তর হরতালের নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মমতা। তিনি বলেন, "হরতাল, আন্দোলন, অবরোধের নাম করে কোথাও বাস যাত্রীদের মারা হচ্ছে, কোথাও পাথর ছোড়া হচ্ছে, কোথাও ডান্ডাগিরি করা হচ্ছে। ট্রেন লাইনের নিচে বোমা রাখা হচ্ছে। এতে যদি কোন ক্ষতি হতো সাধারণ মানুষেরই হত। এটা দাদাগিরি, এটা আন্দোলন নয়। এটা গুন্ডামি। আমি এটাকে ধিক্কার জানাচ্ছি।"
 
মমতার প্রশ্ন "প্রতিবছর চারটি করে হরতাল ডাকতে হবে কেন, আন্দোলন করতে পারেনা। কারণ আন্দোলন করা অনেক কঠিন। আন্দোলনটা  রাস্তায় পড়ে থাকতে হয়। জীবন, আদর্শ দিয়ে আন্দোলন করতে হয়-যেটা আমরা করছি। আমি ২৬ দিন ধরে কৃষিজমি আন্দোলন করেছিলাম, একটা বাস-ট্রামে হাত দেওয়া হয়নি, এটাকে আন্দোলন বলে। আজকে আমাদের দলের তরফ থেকে এবং সরকারের তরফ থেকে আমরা ক্যা, এনআরসি, এনপিআর নিয়ে আন্দোলন করা হচ্ছে। জহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের উপরে হামলা হয়েছে, তার নিন্দা জানিয়েছি। আমরা আমাদের প্রতিনিধি দলও পাঠিয়েছি। আমরা শিক্ষার্থীদের সমর্থন করেছি। কিন্তু আমরা একটা অনুরোধ জানাবো সিপিএম যেন ঘোলা পানিতে মাছ না ধরে।" 

মমতার অভিমত, "ভারতবর্ষের অর্থনীতি কথা মাথায় রাখা উচিত। এমনিতে মানুষের আয় কমে গেছে। অর্থনীতিতে ধ্বস নেমেছে। সেখানে কোথায় সাধারন মানুষকে সাহায্য করবে তা না করে হরতাল করা হচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষের কষ্ট হয়। কেন এভাবে দেশের ক্ষতি করা হচ্ছে?"   

তিনি আরও জানান, "আমি এই ইস্যুকে সমর্থন করি কিন্তু তার জন্য শান্তিপূর্ণ পথ আছে। কিন্তু গায়ের জোরে হরতাল বা আন্দোলন বাংলায়  করতে দেওয়া হয়নি, হবেও না।"  

মমতার প্রশ্ন "তারা তো দিল্লিতে গিয়ে গুন্ডামী করতে পারে, তাদের তো দিল্লিতে পার্টি অফিস আছে, সেখানে কি কিছু করেছে? সেখানে ক'টা মিছিল করেছে?  ক'টা হরতাল করেছে? গত ৩৪ বছরে এরা কিছু করেনি, তার উপরে আমরা যা তৈরি করেছি, সেটাও গুন্ডামি করে ভেঙে দিচ্ছে। আসলে উন্নয়নকে চোখে সহ্য করতে পারছে না।" 

মমতা কটাক্ষ করে বলেন, "এভাবে আন্দোলনের নামে গুন্ডামি করতে করতেই তারা সাইনবোর্ডে এসেছে। বাংলার সিপিআইএম'এর থেকে কেরালা সিপিআইএম অনেক ভালো, তাদের একটা ইডিওলজি আছে কিন্তু বাংলার সিপিএমের সর্বনাশ করা ছাড়া কিছু নেই।" 

সরকারের সম্পত্তি নষ্টকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশ প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা নেবে বলেও এদিন জানান মমতা ব্যানার্জি। তিনি বলেন "আমি সিপিএমের মতো গুলি পন্থায় বিশ্বাস করিনা,  আমি মারপিট পন্থায় বিশ্বাস করি না। আইন আইনের পথেই চলবে, আর যারা এই সমস্ত সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করছে সরকার আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।" 

অন্যদিকে, হরতালকে সফল বলে দাবি করে বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান তথা সিপিএম নেতার বিমান বসু বলেন "সরকারি বাস চলছে কিন্তু লোক তেমন নেই। হাওড়া থেকে যে ফেরি সার্ভিস চলাচল করে, সেখানে একটিতে ৩ জন যাত্রী, অন্যটিতে ৫ জন যাত্রী ছিলেন। সরকারি বাস কম চলার কারণে, বেসরকারি বাসে কিছু লোক আছে। কিন্তু অন্য দিন যে পরিমাণে লোক থাকে, বা বাদুড়ঝোলা হয়ে যত মানুষ যায় সেই চেহারা আজ কোথাও দেখা যায়নি" 

 

বিডি-প্রতিদিন/ সিফাত আব্দুল্লাহ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর