ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের ক্ষত এখনও শুকোয়নি। তারমধ্যেই গোটা পশ্চিমঙ্গকে রাজ্যকে তছনছ করে দিয়ে গেল আম্ফান। বুধবার রাতে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, “আম্ফানের তাণ্ডবে ধ্বংস হয়ে গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। ঝড়ের পুরোটাই পশ্চিমবঙ্গের উপর দিয়ে গিয়েছে। এটা করোনার থেকেও বড় বিপর্যয়।”
তাণ্ডব চলার মধ্যেই নবান্নের কন্ট্রোল রুমে বসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গভীর উদ্বেগের সঙ্গে জানালেন, এই ঘূর্ণিঝড় সর্বনাশ করে দিয়েছে।
স্থানীয় সময় বুধবার রাত সোয়া ৯টার দিকে তিনি বলেন, “দুই চব্বিশ পরগনা পুরো ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। কত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে আন্দাজ করা যাচ্ছে না।”
নবান্নের অর্ধেকটা ভেঙে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তিনি বলেন, “এত বছর কলকাতায় আছি, এমন দুর্যোগ কখনও দেখিনি। মনে হচ্ছে স্বজন হারিয়েছি।”
ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক হিসাব পেতে তিন-চার দিন লেগে যাবে বলে জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার বিকালে টাস্ক ফোর্সের বৈঠক ডেকেছেন মমতা। মমতা জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত ১০-১২ জনের মৃত্যুর খবর এসেছে। তবে সঠিক সংখ্যা কত তা পরে জানানো হবে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, রাজ্যে একাধিক ব্রিজ ভেঙে পড়েছে। প্রচুর বাড়ি, নদীবাঁধ ভেঙে গেছে।
বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে গিয়েছে। ৬ মাস আগে বুলবুলের পর বাঁধের মেরামত হয়েছিল, সেই সব নদীবাঁধও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই সময়ে রাজনীতি না করে মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিতে পুরো পরিস্থিতিকে দেখার আবেদন জানিয়েছেন মমতা। তার কথায়, “কেন্দ্রের সরকারের কাছে আমাদের আবেদন থাকবে এটাকে রাজনৈতিকভাবে না দেখে মানবিকতার সঙ্গে দেখতে।”
রামকৃষ্ণ মিশনসহ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর উদ্দেশে মমতার আবেদন, মানুষের সাহায্যে তারা যেন এগিয়ে আসে।
বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সুন্দরবনে আম্ফান আছড়ে পড়লে পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করে। সন্ধ্যা ৭টা বেজে ২০ মিনিটে কলকাতায় আম্ফানের গতিবেগ ছিল সর্বোচ্চ, ঘণ্টায় ১৩৩ কিলোমিটার। সোয়া ৮টার পর পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলেও, এখনও বিপদ কাটেনি বলে সতর্ক করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি বলেছেন, রাতে কেউ বাড়ির বাইরে বের হবেন না। পুনর্বাসনের কাজ কীভাবে করা হবে তা নিয়েও উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বললেন, “ভাবতেই পারছি না পুনর্বাসনের কাজটা কীভাবে করব।” সূত্র: কলকাতা২৪
বিডি প্রতিদিন/কালাম