পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলেন ভারতের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী মন্ত্রিসভার অর্থমন্ত্রী ও সাবেক সিনিয়র বিজেপি নেতা যশবন্ত সিনহা। শনিবার কলকাতায় তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন, লোকসভার সাংসদ সুদীপ ব্যনার্জি, পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখার্জির হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দেন তিনি।
তৃণমূলে যোগ দিয়েই তিনি বলেন, ‘গত ১০ মার্চ নন্দীগ্রামে মমতার ওপর যে হামলা হয়েছিল, তারপরই আমি তৃণমূলে যোগ দিয়ে মমতাকে সমর্থনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।’
এদিন সকালের দিকে অসুস্থ মমতাকেও দেখতে যান যশবন্ত। তাদের মধ্যে আধা ঘন্টার বেশি সময় ধরে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনাও হয়। এদিন পুরনো দল বিজেপিকেও নিশানা করেন তিনি। তিনি বলেন, পুরনো বাজপেয়ী জমানার সাথে বর্তমানে মোদি সরকারের আকাশ পাতাল ফারাক। শিরোমণি আকালি দল, শিবসেনা, বিজেডি’এর মতো পুরনো সহযোগীরা একে একে বিজেপির সঙ্গ ছেড়ে চলে যাচ্ছে। একমাত্র নীতিশ কুমারের জেডিইউ রয়েছে।
যশবন্তের অভিমত, ‘আমাদের গণতন্ত্র আজ দুর্বল। দেশের প্রায় সব প্রতিষ্ঠানই দুর্বল হয়ে পড়েছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য প্রতিটি ক্ষেত্রই দুর্দিনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। দেশের কৃষকরা এখন উদ্বেগে রয়েছে। দেশের অন্নদাতাররা এখন দিল্লির সড়কে বসে আছেন অথচ কারো এ বিষয়ে চিন্তা নেই। দেশের ক্ষমতাসীন দলের একটাই লক্ষ্য যেভাবেই হোক নির্বাচনে জেতা।’
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে ফাইটার বলে অভিহীত করে তার একটি উদাহরণও দিয়েছেন যশবন্ত। তিনি বলেন ‘মমতা একজন ফাইটার। ১৯৯৯ সালে জঙ্গিরা ইন্ডিয়া এয়ারলাইন্সের বিমান অপহরণ করে কান্দাহারে নিয়ে যাওয়ার পর কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার এক বৈঠক চলছিল। সেখানে মমতা পণবন্দি হতেও রাজি ছিলেন। মমতা নিজেই একথা বলেছিলেন। বাকি পণবন্দিদের বিনিময়ে মমতা নিজে জঙ্গিদের কাছে পণবন্দি হতে চেয়েছিলেন। তিনি দেশের জন্য প্রাণ বিসর্জন দিতে চেয়েছিলেন।’
আসন্ন বিধানসভার নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসই ফের ক্ষমতায় আসবে বলেও মনে করেন সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘তৃণমূলই ফের ক্ষমতায় আসবে এবং ২০২৪ সালে এই বাংলা থেকেই পরিবর্তনের সূচনা হবে। এই বাংলা থেকেই গোটা ভারতে একটা বড় বার্তা যাওয়া উচিত। কারণ কেন্দ্রে মোদি-শাহ মিলে যা করছেন- ভারতবাসী তা আর বরদাস্ত করবে না।’
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার