বুধবার, ১৫ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

বুড়িগঙ্গা উদ্ধারসহ ৭ প্রকল্প অনুমোদন

নিজস্ব প্রতিবেদক

বুড়িগঙ্গা নদী পুনরুদ্ধার ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়নসহ সাত প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৩২৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে খরচ করা হবে ২ হাজার ৯৭১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ৩৫৪ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। গতকাল রাজধানীর শেরেবাংলানগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। এদিকে ঢাকার চারপাশে নদীগুলোতে পানির প্রবাহ ঠিক রাখতে মাস্টারপ্ল্যান তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘চলতি অর্থবছর ৩২টি একনেক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ২৫৮টি প্রকল্পের বিপরীতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫৭ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা। গত অর্থবছর অনুমোদন হয়েছিল এর প্রায় অর্ধেক। তাই শুরু থেকেই আমাদের প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করতে হবে।’ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ প্রসঙ্গে মুস্তফা কামাল বলেন, গৃহস্থালি ও শিল্পবর্জ্যের কারণে রাজধানীর চারপাশের নদীগুলোর পানি মাত্রাতিরিক্ত দূষিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী রাজধানীর চারপাশের নদীসমূহের নাব্যতা বৃদ্ধি ও দূষণরোধে এলজিআরডি মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে মাস্টারপ্ল্যান করার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী নদীসমূহের বর্জ্যদূষণ রোধে সমন্বিত বর্জ্য শোধনাগার করার বিষয়টিও বিবেচনায় রাখার জন্য সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ দেন। একনেকে অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হলো— বুড়িগঙ্গা নদী পুনরুদ্ধার প্রকল্প, এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ১২৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা; মিলিটারি ফার্ম আধুনিকায়ন প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৩ কোটি ৬৪ লাখ টাকা; ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক অবকাঠামো উন্নয়নসহ নর্দমা ও ফুটপাথ নির্মাণ প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ২৫ কোটি ৮৭ লাখ টাকা; হরিশপুর বাইপাস মোড় থেকে বনবেলঘরিয়া বাইপাস মোড় পর্যন্ত নাটোর শহরের প্রধান সড়কের মিডিয়াসহ পেভমেন্ট প্রশস্তকরণ প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৮ কোটি ৩৩ লাখ টাকা; ল্যান্ড অ্যাকুইজিশন অ্যান্ড ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ফর ইমপ্লিমেন্টেশন অব গজারিয়া ৩৫০ মেগাওয়াট কোল ফায়ার্ড থারমাল পাওয়ার প্লান্ট প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৫০৪ কোটি ২৩ লাখ টাকা; ভোলা জেলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় মেঘনা নদীর ভাঙন থেকে শাহবাজপুর গ্যাসফিল্ড রক্ষা (দ্বিতীয় পর্যায়) প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ২১৬ কোটি ৮৭ লাখ টাকা এবং মোবাইল গেম ও অ্যাপ্লিকেশনের দক্ষতা উন্নয়ন প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ২৮১ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।

বুড়িগঙ্গা পুনরুদ্ধার : বুড়িগঙ্গা নদী পুনরুদ্ধারে ১ হাজার ১২৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘বুড়িগঙ্গা নদী পুনরুদ্ধার’ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে নিউ ধলেশ্বরী-পুংলী-বংশাই-তুরাগ নদী পুনঃখনন করা হবে, যেন বুড়িগঙ্গাসহ ঢাকা মহানগরীর চারপাশে বহমান নদীগুলোতে পানিপ্রবাহ বজায় থাকে। ২০১০ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৩ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে প্রকল্পটির ব্যয় ছিল ৯৪৪ কোটি টাকা। একনেক সভায় প্রকল্পের মেয়াদ ২০২০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়। সভায় জানানো হয়, পলি পড়ার কারণে বুড়িগঙ্গা, তুরাগ ও শীতলক্ষ্যা নদীর ধারণক্ষমতা কমে গেছে। এর ফলে শুষ্ক মৌসুমে নদীর প্রবাহ থাকে না এবং নাব্যতা কমে যায়। উৎসমুখে পলি পড়ে নদী ভরাট হয়ে যায়। প্রকল্পটির আওতায় নদীগুলো খনন করে সারা বছর নৌযান চলাচলের ব্যবস্থা করা হবে। বুড়িগঙ্গায় অবৈধ জবরদখলকৃত জমিও উদ্ধার করা হবে।

সর্বশেষ খবর