বৃহস্পতিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

ডিবির সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত দুই

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সঙ্গে গোলাগুলির ঘটনায় মারা গেছে তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী ও মাদকসম্রাট মোক্তার হোসেন ওরফে কিলার মোক্তার ও তার বডিগার্ড সন্ত্রাসী মানিক। এ সময় পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন ডিবির এএসআই আজিজ। তাকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

গতকাল সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে ফতুল্লার পাগলা শাহীবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত মোক্তার পাগলা নিশ্চিন্তপুর শাহী মহল্লার মনির মিস্ত্রির ছেলে ও নিহত মানিক একই এলাকার মৃত আব্বাসের ছেলে। এদিকে এ ঘটনার পর শত শত এলাকাবাসী রাস্তায় নেমে আসেন। তারা অভিযোগ করে জানান, নিহত কিলার মোক্তার ও তার বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি ও জমি দখলের মতো অপরাধ করে আসলেও ফতুল্লা পুলিশের ভূমিকা ছিল রহস্যজনক। ফতুল্লা পুলিশের এক শীর্ষ কর্মকর্তার সঙ্গে বেশ কয়েকটি মাদক বাহিনীর সখ্য থাকায় তারা বেপরোয়া হয়ে উঠেছিল।  অভিযানে থাকা ডিবি পুলিশের এসআই মাজহারুল ইসলাম জানান, পাগলা শাহী বাজার এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী মোক্তারকে অনেক দিন ধরেই গ্রেফতারের চেষ্টা করা হচ্ছিল। গতকাল সন্ধ্যায় মোক্তার তার সহযোগীদের নিয়ে একটি টং দোকানে গোপন বৈঠক করছে— এমন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান পরিচালনা করে ডিবি পুলিশের বিশেষ দল। শাহী বাজার এলাকার ওই দোকানের ভিতর মোক্তারের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে ডিবি পুলিশের কয়েকজন সদস্য তাকে জাপটে ধরে ফেললে মোক্তারের বডিগার্ড মানিক এএসআই আজিজকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে। একটি গুলি এএসআই আজিজের পায়ে লাগলে পেছনে থাকা পুলিশ সদস্যরা পাল্টা গুলি ছুড়তে শুরু করে।

এ সময় মোক্তার ও তার সহযোগীরা দৌড়ে পালাতে থাকলে মানিক গুলিবিদ্ধ হয়ে লুটিয়ে পড়ে। এসআই মাজহার জানান, এ সময় তিনিসহ কয়েকজন মোক্তারের পিছু ধাওয়া করলে সে রাস্তার পাশের একটি ঢালে নেমে অবস্থান নেয় এবং সেখান থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে দফায় দফায় গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়তে থাকে। এক পর্যায়ে পুলিশের ছোড়া গুলিতে মোক্তার ঘটনাস্থলেই মারা যায়।

স্থানীয়রা জানায়, মোক্তার ওরফে কিলার মোক্তার হলো ফতুল্লা থানা পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। গত বছরের ২১ অক্টোবর সকালে ফতুল্লার নিশ্চিন্তপুর এলাকায় বিল্লাল নামে এক যুবককে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করে কিলার মোক্তারসহ তার সহযোগীরা। নিহত বিল্লাল ফতুল্লার উত্তর দেলপাড়া এলাকার মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে।

জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মাহামুদুল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালিয়ে ২ রাউন্ড গুলিভর্তি একটি বিদেশি রিভলবার, ৩ রাউন্ড গুলিভর্তি একটি বিদেশি পিস্তল, একটি চাপাতি ও ছোরা উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতদের লাশ শহরের ১০০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। নিহত মোক্তার ও তার সহযোগী মানিকের বিরুদ্ধে হত্যা, চাঁদাবাজি ও মাদকের প্রায় ডজনখানেক মামলা রয়েছে।

সর্বশেষ খবর