বৃহস্পতিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা
কৃষি সংবাদ

মাটিতে লবণাক্ততা শনাক্তে ‘ডুয়েল এম-৩৮’

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

মাটিতে লবণাক্ততা শনাক্তে ‘ডুয়েল এম-৩৮’

মাটির লবণাক্ততা শনাক্তে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার শুরু করেছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ও কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের গবেষকরা। যার সাহায্যে স্বল্প সময়ে নির্ণয় করা যাবে মাটির লবণাক্ততার পরিমাণ ও বিস্তৃতি। প্রাকৃতিক বিপর্যয় এড়াতে ‘ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ইন্ডাকশন’ প্রযুক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছেন গবেষকরা। এতে কৃৃষিতে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে। জানা যায়, জলাবদ্ধতা পরিবর্তনের কারণে খুলনাসহ উপকূলীয় এলাকাগুলোকে গ্রাস করেছে লবণাক্ততা। মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের জরিপ মতে, ২০০৯ সালে খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরার লবণাক্ত জমির পরিমাণ ছিল ১০ লাখ ৫৬ হাজার হেক্টর। সংস্থার প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শচীন্দ্র নাথ বিশ্বাস জানান, দশ বছরে জমিতে লবণের মাত্রা বেড়েছে ২৫ শতাংশ। এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে কৃষি ব্যবস্থাপনায়। আগামী কয়েক দশকের মধ্যে লবণাক্ততায় বিপন্ন হবে প্রায় ৩ কোটি মানুষের জীবন-জীবিকা। গবেষকরা জানান, এমন বাস্তবতায় মাটিতে লবণাক্ততা নির্ণয়ে ‘ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ইন্ডাকশন’ প্রযুক্তির আওতায় অত্যাধুনিক ‘ডুয়েলএম-৩৮’ মেশিন ব্যবহার করা হচ্ছে। এটি মূলত বিশেষ ধরনের স্ক্যানার। মাটির ১.৮ মিটার গভীর পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকার মাটি দ্রুততম সময়ের মধ্যে স্ক্যান করে লবণাক্ততা নিরূপণ ও ম্যাপিং করতে সক্ষম। এর মাধ্যমে মাটির বিন্যাস করে রবি ও খরিপ-১ মৌসুমে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি করতে পারলে কৃষিতে সাফল্য মিলবে। গবেষণা প্রকল্পের মুখ্য গবেষক প্রফেসর ড. মো. এনামুল কবীর বলেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য লবণাক্ত এলাকাগুলোতে মাটির বিন্যাস অনুযায়ী রবি ও খরিপ-১ মৌসুমে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি করা। খুলনার দাকোপ উপজেলায় প্রথমবারের মতো লবণাক্ততা নির্ণয়ের পর বিকল্প ফসল হিসেবে সূর্যমুখী, ভুট্টা, গম, গার্ডেন পি (কলাই জাতীয়), সরিষা চাষ করা হয়েছে। এতে কৃষকদের মধ্যে আগ্রহ বেড়েছে।’ জানা যায়, লবণাক্ততার কারণে দীর্ঘদিন যেসব মাটিতে আবাদ করা যায়নি, পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সেখানেও চাষের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও বাংলাদেশের কয়েকটি কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-গবেষকদল প্রকল্পের ওইসব এলাকা পরিদর্শন করেছে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান বলেন, উপকূলীয় এলাকায় কৃষি ক্ষেত্রে প্রধান সমস্যা লোনা পানি ও লোনা মাটি। নতুন প্রযুক্তির ব্যবহারে জমির ধরন অনুযায়ী ফসল বিন্যাসের মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধি করা যাবে। এতে কৃৃষিতে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে।

সর্বশেষ খবর