শনিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা
ঐতিহ্য

বিখ্যাত বগুড়ার দই

আব্দুর রহমান টুলু, বগুড়া

বিখ্যাত বগুড়ার দই

বগুড়ার কথা উঠলে মহাস্থানগড়। আর এখানে এসে খাবারের কথা উঠলেই দই। কোনো বিকল্প নেই। দইয়ের স্বাদ না নিয়ে বগুড়া ছাড়া খুব কষ্টসাধ্য বিষয়। প্রিয়জন বা অতিথি আপ্যায়নে বগুড়ার দইয়ের বিকল্প নেই। বগুড়ার কোনো ভোজ উৎসবের তালিকায় দই নেই এমন কেউই ভাবতে চান না। হোক সে দরিদ্র কিংবা শহরের অতি বিলাসী পরিবার। দই মিশে আছে বগুড়ার     প্রাণে প্রাণে। বগুড়ার প্রবীণরা জানান, দইয়ের শুরুটা হয়েছিল বগুড়া শহর থেকে ২০ কিলোমিটার দক্ষিণে শেরপুর উপজেলায়। কথিত আছে, উনিশ শতাব্দীর ৬০-এর দশকের দিকে গৌর গোপাল পাল নামের এক ব্যবসায়ী প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে সরার দই তৈরি করেন। গৌর গোপালের এই দইই ধীরে ধীরে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। বগুড়ার ঐতিহ্যবাহী নবাব পরিবার ও সাতানী পরিবারের কাছে এ দই সরবরাহ করতেন গৌর গোপাল। সে সময়ে এই দইয়ের নাম ছিল নবাববাড়ীর দই। স্বাধীনতার পর বগুড়ায় দই তৈরিতে শহরের গৌর গোপালের পাশাপাশি মহরম আলী ও বাঘোপাড়ার রফাত আলীর নাম ছড়িয়ে পড়ে। সে সময় ছোট ছোট মাটির পাত্রে দই ভরানো হতো। ঘোষদের ছোট ছোট দোকান থাকলেও তখনো ফেরি করেই দই বিক্রি হতো। গৌর গোপাল ও মহরম আলীর পর বগুড়া দই ঘরের মালিক আহসানুল কবির দই তৈরি ও বাজারজাতে নতুনত্ব নিয়ে আসেন। বগুড়া দই ঘরের জেনারেল ম্যানেজার জানান, তাদের দই দেশের বাইরেও নিয়ে যাওয়া হয়। স্থানীয়ভাবে তারা যে প্যাকেটে দই দেন তা শীতকালে থাকে ৪/৫ দিন। আর গরম কালে থাকে ২/৩ দিন। উত্তরাঞ্চলে কোন বিদেশি বেড়াতে এলে তারা ফেরার সময় দই কিনে নিয়ে যান। হাতে হাতে করেই এই দই পৌঁছে যায় বিভিন্ন দেশে। বর্তমানে বগুড়া শহরের এশিয়া সুইটমিট ও দই ঘর, চেলোপাড়ার কুরানু, নবাববাড়ীর রুচিতা, কবি নজরুল ইসলাম সড়কের আকবরিয়া, বিআরটিসি মার্কেটের দইবাজার, মিষ্টিমহল, সাতমাথার দইঘর, মহরম আলী, শেরপুর দইঘর, চিনিপাতাসহ অর্ধশতাধিক শো রুমে দই বিক্রি হচ্ছে। এশিয়া সুইটমিটের দিপু আলী জানান, ওজন দিয়ে তাদের দই বিক্রি হয় না। বিক্রি হয় প্রতিপিস হিসেবে। দই তৈরির যাবতীয় দ্রব্যের দাম বেড়েছে দিগুণ, এ কারণে দইয়ের দামও বেড়েছে। তাদের শো রুমে বিভিন্ন স্বাদের দই পাওয়া যায়। মিষ্টি দইয়ের পাশাপাশি বিক্রি হয় টক বা সাদা দই।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর