শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

অগ্নিঝুঁকিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, আতঙ্কে শিক্ষার্থীরা

রাশেদ হোসাইন, জবি

ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। এতে রাজধানীতে বসবাসরত মানুষের কাছে রীতিমতো আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। তা ছাড়া অগ্নিকাণ্ডের জন্য রাজধানীর পুরান ঢাকা সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা। আর এ এলাকায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় অবস্থিত। প্রায় ১৮ হাজার শিক্ষার্থীর এই বিদ্যাপীঠে অগ্নি নির্বাপণের নেই কোনো সুব্যবস্থা। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, পুরান ঢাকার কোথাও এমনকি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়েও অগ্নি নির্বাপণের কোনো ব্যবস্থা নেই। দুর্ঘটনা ঘটলে সবাই বেঁচে যাবে এমন কোনো ব্যবস্থা এখানে নেই।  তবে আমাদের নতুন ক্যাম্পাসে সব ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তাছাড়া এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সব পদক্ষেপ নেবে।

সরেজমিন দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনসহ কোনো একাডেমিক ভবনেই অগ্নি নির্বাপণের সুব্যবস্থা নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ে অগ্নি নির্বাপক সিলিন্ডার রয়েছে মাত্র ১১টি এবং এর সবই মেয়াদোত্তীর্ণ। যার মধ্যে নতুন একাডেমিক ভবনে ৫টি, বিজ্ঞান অনুষদ ভবনে ৩টি এবং প্রশাসনিক ভবনে ৩টি সিলিন্ডার রয়েছে। কলা ভবন, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, রফিক ভবন, অবকাশ ভবনে নেই কোনো সিলিন্ডার। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ভবনেই জরুরি নির্গমন পথ নেই। কলা ভবন, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ২টি ভবন এবং অবকাশ ভবন থেকে নামার জন্য রয়েছে একটি মাত্র সিঁড়ি। এ ছাড়া নতুন একাডেমিক ভবন ও বিজ্ঞান অনুষদ ভবনে একাধিক সিঁড়ি থাকলেও সুবিশাল স্থাপনা হিসেবে তা অপ্রতুল। একাডেমিক ভবনগুলোর মধ্যে অগ্নি নিরাপত্তা ঝুঁকির শীর্ষে রয়েছে নতুন একাডেমিক ভবন (নিউ বিল্ডিং)। নির্মিতব্য ১৪ তলা এই ভবনের ৯ম তলা পর্যন্ত একাডেমিক কার্যক্রম চালু রয়েছে। ভবনটির নিচ তলায় ২টি, ২য়, ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলায় ১টি করে মোট ৩টি অগ্নি নির্বাপক সিলিন্ডার রয়েছে। এ ছাড়া বাকি ছয় ফ্লোরে কোনো ধরনের অগ্নি নিরোধক ব্যবস্থা নেই। ভবনটির জন্য তিনটি সিঁড়ি থাকলেও নির্মাণ কাজের অজুহাতে একটি সিঁড়ি বন্ধ করে রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। উন্মুক্ত বাকি দুই সিঁড়ির মধ্যে একটি কোনো কোনো ফ্লোরে কলাপসিবল (কেচি) গেট দিয়ে আটকানো। যার ফলে শুধু একটি সিঁড়ি দিয়ে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের যাতায়াত করতে হয়। জরুরি নির্গমন পথ না থাকা এবং ভবনের মাঝ বরাবর একমাত্র সিঁড়ি থাকায় অগ্নিকান্ডের মতো দুর্ঘটনায় মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। এ ছাড়া অবকাশ ভবনের নিচে ক্যান্টিন আছে। সেখানে লাইনের গ্যাসে রান্না করা হয়। দীর্ঘদিন গ্যাস লাইন সংস্কার না হওয়ার কারণে অনেক লিকেজ সৃষ্টি হয়েছে। তাই যে কোনো সময় অগ্নিকা  ঘটতে পারে। জানা যায়, ২০১৬ সালের ১৭ মে নতুন একাডেমিক ভবনের ষষ্ঠ তলায় অগ্নিকাে র ঘটনা ঘটে। এ সময় একাডেমিক কার্যক্রম না চলায় কোনো ধরনের হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী আবু সালেহ আতিফ বলেন, ঢাকায় প্রতিনিয়ত যে অগ্নিকা  ঘটছে তাতে নিজের মধ্যে ভয় বিরাজ করছে। কখন কী ঘটে যায়। তাছাড়া পরিবারের সবাই দুশ্চিন্তায় আছে। তাই সবার নিরাপত্তার কথা ভেবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।  বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নত করার বিষয়ে বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডিন শওকত জাহাঙ্গীর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে অগ্নি নির্বাপণের যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের পক্ষ থেকে নতুন একাডেমিক ভবনে জরুরি নির্গমন পথ নির্মাণের জন্য উপাচার্য বরাবর লিখিত আবেদন করব। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী সুকুমার চন্দ্র সাহা বলেন, অগ্নি নিরাপত্তার জন্য মন্ত্রণালয় থেকে টেন্ডার পেয়েছি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর