বুধবার, ৮ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা
ইফতার আয়োজন

বসুন্ধরায় ঐতিহ্যবাহী ইফতারের সমাহার

নিজস্ব প্রতিবেদক

বসুন্ধরায় ঐতিহ্যবাহী ইফতারের সমাহার

ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) রোজাদারদের জন্য ইফতার নিয়ে বিশেষ আয়োজন শুরু হয়েছে। রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী বাহারি ও ব্যতিক্রমী ইফতারের সব খাবার এখানে পাওয়া যাচ্ছে। নামকরা বিখ্যাত সব ক্যাটারিং প্রতিষ্ঠান তাদের তৈরি মজাদার খাবার নিয়ে হাজির হয়েছে। প্রতিদিন দুপুর ২টা থেকে মাগরিব পর্যন্ত রোজাদারদের সেবায় আইসিসিবি কর্তৃপক্ষ এ আয়োজন করেছে। রাজধানীর কুড়িল বিশ্বরোডসংলগ্ন দেশের বৃহৎ এ সম্মেলন সিটিতে রয়েছে পরিবার, বন্ধুদের নিয়ে বিশেষ ইফতার পার্টির সুযোগ। যে কেউ চাইলে প্রতিদিন সন্ধ্যায় আইসিসিবির হলে বসেই মজাদার ইফতারি করতে পারবেন। রমজানজুড়ে আইসিসিবিতে পাওয়া যাবে সবার পছন্দের সব খাবার আইটেম। রোজাদারদের জন্য এখানে অজু-নামাজের বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে। রয়েছে পর্যাপ্ত গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থাও। রমজানের প্রথম দিনে গতকাল বসুন্ধরায় ২ নম্বর হলে গিয়ে দেখা গেছে, বিশাল পরিসরে আয়োজন করা হয়েছে ইফতার বাজার। প্রথম দিনেই বিকাল ৩টায় শুরু হয়েছে ভিড়। প্রথম রমজানে ভিন্নস্বাদের ইফতারি নিতে এসেছেন কালাচাঁদপুরের বাসিন্দা আকরাম হোসেন। তার সঙ্গে কথা বললে জানালেন প্রথম দিনে বাসার সবার জন্য ভিন্নস্বাদের ইফতারি নিতে এলাম। নিজের কেনা বিভিন্ন ইফতারি সামগ্রীর মধ্যে দেখালেন হালিম, শাহি পরোটা, গরুর ভুঁড়ি, শাহি জিলাপি, চিকেন টিক্কা, বিফ শিককাবাব। দামও তুলনামূলক নাগালের মধ্যে রয়েছে বলে তিনি বললেন। ইফতারের এ আয়োজনে অংশ নিয়েছে দেশের স্বনামখ্যাত ক্যাটারিং প্রতিষ্ঠান। ৫৫টি স্টল রয়েছে এখানে। এর মধ্যে রয়েছে বসুন্ধরা ফুড অ্যান্ড বেভারেজ, ইব্রাহীম ক্যাটারিং, দিলাব, খান কিচেন, র‌্যাঙ্কন হসপিটালিটি, বাঁধনস হোম রেসিপি, রংধনু রসুই, মিডনাইট রেস্টুরেন্ট, স্কাই থাই ফুড, মাস্টার শেফ সুবরত আলীসহ রাজধানীর বিখ্যাত সব প্রতিষ্ঠান। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানই মজাদার সব আইটেম নিয়ে হাজির হয়েছে। রংধনু রসুই স্টলে রয়েছে ভিন্নস্বাদের নানারকম আইটেম। এর মধ্যে দইবড়া প্রতি পিস ৬৫, গার্লিক নান পিস ৭০, প্লেন নান ৪০, প্লেন পরোটা ৪০, মাংস দিয়ে তৈরি বিশেষ খাবার লাহুরি চানা কেজি ৩৫০, চিকেন রোল পিস ১১০, চিকেন সাসলিক ৭০, চিকেন গার্লিক ১৭০, বিফ শিককাবাব ১৬০, চিকেন টিক্কা ১৭৫, বটি কাবাব ১৫০, রোল চিকেন রোস্ট ৬৫০, বিফ বট ১২০০ টাকা কেজি। হালিম বিক্রি হচ্ছে খাসি বড় বাটি ৮০০, গরুর বড় বাটি ৬০০ টাকা। ইব্রাহীম ক্যাটারিংয়ে তৈরি বিভিন্ন আইটেমের মধ্যে রয়েছে শাহি মাটন হালিম ৩০০ টাকা বড় বাটি, মাটন কাচ্চি বিরিয়ানি ৩৫০, শাহি মোরগ-পোলাও দুই পিস ৩৫০, বিফ তেহারি ফুল ৩০০, শাহি পরোটা ৫০, লুচি ৩০, কিমা পরোটা ৮০, লেগ রোস্ট ১২০০, আস্ত চিকেন মোসাল্লাম ৬০০, চিকেন বারকিউ ১২৫, বিফ কালো ভুনা ১২০০ কেজি, বিফ কিমা ভুনা ১২০০, পনির সমুচা ৩০ টাকা। রয়েছে বিভিন্ন প্রকার শরবত। এর মধ্যে জাফরানি বাদাম পেস্তা দুধের শরবত কেজি ৪০০, শাহি বোরহানি ২৫০, শাহি লাবাং ৩০০, শাহি জিলাপি ৪০০, রেশমি জিলাপি ৬০০, মালাবিয়া অ্যারাবিয়ান ৫০ টাকা। প্রতিষ্ঠানগুলো অত্যন্ত স্বাস্থ্যসম্মতভাবে তৈরি খাবার নিয়ে গ্রাহকদের চাহিদামাফিক সরবরাহ করছে। তুলনামূলক সস্তা দামেই পাওয়া যাচ্ছে এসব ইফতারি আইটেম। বিখ্যাত খাবারের তালিকায় আরও থাকছে দইবড়া, বিফ তেহারি, আস্ত খাসি। শুধু দেশীয় নয়, পাওয়া যাচ্ছে অ্যারাবিয়ান বিভিন্ন খাবার। আছে বিফ লিভার ভুনা, মাটন রেজালা, মোরগ মোসাল্লাম, বিফ কালিজিরা, বিফ নেহারি। আরবীয় খাবার নিয়ে এসেছে র‌্যাঙ্কন হসপিটালিটি। প্রতিষ্ঠানটিতে রয়েছে বিফ জিব ৭৫০ টাকা কেজি, লাজাম মানডি ৭৭০ টাকা কেজি, চিকেন খাবসা ৭৫০ টাকা কেজি, চিজ ফাটাইয়ার ৬০ টাকা পিস, স্পিনিক ৬০ টাকা পিস। ইব্রাহীম ক্যাটারিংয়ের কর্ণধার হাজী ইব্রাহীম মিয়া বলেন, ‘আমাদের এখানে তুলনামূলক কম দামে ইফতারি সামগ্রী পাওয়া যাচ্ছে। প্রতিদিন খাবার পরীক্ষা করে স্টলে নিয়ে আসা হয়। কোনো প্রকার বাসি খাবার এখানে বিক্রি করার কোনো সুযোগ নেই। সারা দিন বিক্রি হওয়ার পর যা অতিরিক্ত থাকবে তা আর বিক্রি করা হবে না। আমরা রোজাদারদের সেবা করতে এসেছি।’ দিলাব স্টলের কর্মী বলেন, ‘আমরা শুধু ব্যবসা নয়, মানুষকেও সেবা দিচ্ছি। সেবা দিয়ে মুনাফা করব। কিন্তু মুনাফা খুব বেশি হচ্ছে না, তুলনামূলক কম দামেই সব বিক্রি করছি।’

সর্বশেষ খবর