শিরোনাম
রবিবার, ১৮ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

এখনো পর্যটন কেন্দ্র মুখর

প্রতিদিন ডেস্ক

এখনো পর্যটন কেন্দ্র মুখর

ঈদ পরবর্তী পঞ্চম দিন গতকালও ছিল পর্যটন কেন্দ্রগুলো মুখর। বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে এদিনও দেখা গেছে প্রচন্ড ভিড়। নারী-পুরুষ-শিশু নির্বিশেষে মানুষ এসব স্থানে ভিড় জমিয়েছেন। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো বিবরণ-

নাটোর : দেশের সর্ববৃহৎ বিল চলনবিল। বর্ষা  মৌসুম ও ঈদকে কেন্দ্র  করে চলনবিলে ভ্রমণ পিপাসুদের ঢল নেমেছে। ঈদুল আজহার ছুটিতে বিভিন্ন বয়সী হাজার হাজার মানুষ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগে ছুটে আসছেন এখানে। বর্ষাকালে বিলের ভিতরের গ্রামগুলো দেখতে দ্বীপের মতো মনে হয়। ডুবন্ত সড়কে হেঁটে বেড়ানোসহ বিলের পানিতে সাঁতার কাটা ও নৌকা ভ্রমণ করে সময় কাটান দর্শনার্থীরা। তারা কক্সবাজারের আমেজ উপভোগ করেন চলনবিলে। নাটোরের সিংড়া উপজেলার পূর্ব-দক্ষিণ অংশ জুড়ে চলনবিল। বাংলাদেশের বৃহত্তর বিল এটি। ৯টি উপজেলার ছোট বড় বিলের সমন্বয়ে গঠিত চলনবিল। প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগে হাজার হাজার মানুষ এখন ছুটে আসছেন। দেশের অন্যান্য বিল থেকে এ বিলের পার্থক্য হলো এটি খরস্রোতা। চলন নাম অনুসারেই এটির নামকরণ চলনবিল। পাবনা, নাটোর, সিরাজগঞ্জ, নওগাঁ জেলার অংশজুড়ে এ বিলের বিস্তৃতি। বর্ষা মৌসুমে অসংখ্য খাল দিয়ে এ বিলে পানি প্রবেশ করে। বর্ষাকালে জলরাশির বুকে নৌকায় পাল তুলে ঘুরতে মন কার না চায়। তাইতো অবসর পেলেই মানুষ ছুটে আসে এখানে। বিশেষ করে শুক্রবার দর্শনার্থীদের আগমনে মুখরিত হয়ে ওঠে। দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসে। নাটোর, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, রাজশাহী এমনকি রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ভ্রমণ পিপাসুরা ছুটে আসছেন চলনবিলে। বর্ষায় এ সড়ক দিয়ে যেমন মাইক্রো, বাইক, অটোসহ ছোট যানবাহন চলাচল করে তেমনি ডুবন্ত রাস্তার ওপর দিয়ে নৌকা চলে যা সত্যিই মনোমুগ্ধকর। তাছাড়া চলনবিল সিংড়ায় পর্যটকদের চাহিদা মেটাতে গড়ে উঠেছে চলনবিল পর্যটন পার্ক। শিশুদের জন্য বিভিন্ন রাইড রয়েছে। যেখান থেকে অপরূপ চলনবিলকে উপভোগ করা যায়।

অপরদিকে চলনবিলে ঘাসি দেওয়ান (রহ.) এর মাজার রয়েছে। যেখানে প্রতি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাউলদের গানের আসর বসে। শুক্রবারে মানত করতে আসে হাজার হাজার ভক্ত। বর্তমানে আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে চলনবিল।

মানিকগঞ্জ : ঈদের আনন্দ যেন শেষ হচ্ছে না। রাস্তাঘাট, খোলা জায়গা, ব্রিজ, কালভার্টসহ সর্বত্রই লোকজনের পদচারণা। মানিকগঞ্জে বিনোদনের তেমন কোনো জায়গা নেই। বিভিন্ন উৎসবে তাই জেলার লোকজন জড়ো হন বেউথা ব্রিজে। এবার ও ঈদের দিন থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত দর্শনার্থীদের ভিড় লেগেই আছে বেউথা ব্রিজে। গতকাল দুপুরের পর থেকে ব্রিজটি বিনোদন পিপাসুদের আগমনে আরও মুখরিত হয়ে ওঠে। হরিরামপুর থেকে পরিবারের লোকজন নিয়ে হ্যালোবাইকে এসেছেন মোখলেছুর রহমান। তিনি বলেন, এখানে মুক্ত বাতাস ছাড়া দেখার কিছুই নেই। বিনোদনের জায়গা না থাকার কারণেই এখানে এত লোকের ভিড়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কলেজ শিক্ষক বলেন, ঈদ উপলক্ষে ব্রিজে নারী, শিশু, বৃদ্ধসহ প্রচুর লোকজনের সমাগম ঘটেছে। কিন্তু নিরাপত্তা নেই। সব সময় বেপোরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চলছে। যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাছাড়া ব্রিজের ওপর যত্রতত্র মোটরসাইকেল পার্কিং করে রাখার কারণে লোকজনের চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। ঈদ, পূজা, পয়লা বৈশাখসহ বিভিন্ন উৎসবের সময় ব্রিজের ওপর মোটরসাইকেলসহ সকল প্রকার যানবাহন পার্কিং বন্ধ রাখা উচিত। নিরাপত্তার বিষয়ে সদর থানার ওসি রকিবুজ্জামান বলেন, ঈদের দিন থেকেই ব্রিজ ও এর দুই পাশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সব বিনোদন পিপাসুরা স্বাচ্ছন্দ্যে এবং নিরাপদে থাকেন। মানিকগঞ্জ পৌরসভার মেয়র গাজী কামরুল হুদা সেলিম বলেন, খুব শিগগিরই একটি পার্কের ব্যবস্থা করা হবে।

বান্দরবান : ঈদুল আজহার পর থেকে পর্যটনের ভরা মৌসুম শুরু হয়। টানা ছুটিতে প্রতি বছর এই সময় বান্দরবানে হাজার হাজার পর্যটকের আগমন ঘটে। কিন্তু এবার চিত্র ভিন্ন ভরা মৌসুমেও পর্যটক শূন্য বান্দরবান।

প্রতি বছর ঈদের আগে বান্দরবানে বুকিং হয়ে যায় হোটেল-মোটেল, গেস্ট হাউসগুলো। কিন্তু এবার ঈদের ভিন্ন চিত্র। হাতে গোনা পর্যটক বাদে বান্দরবানে কোনো পর্যটকের দেখা মিলছে না। মূলত ডেঙ্গু আতঙ্ক বন্য ও পাহাড়ে টানা কয়েটি খুনের ঘটনায় পর্যটকদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হওয়ায় এর প্রভাব পড়েছে পর্যটন খাতে এমনটাই বলছেন ব্যাবস্যায়ীরা। সম্প্রতি সময় বন্যায় সড়ক প্রায় এক মাস জেলার সঙ্গে সারা দেশর যোগাযোগ বন্ধ ছিল এতে পর্যটন ব্যবসায় ব্যাপক ক্ষতি হয়। সেই ক্ষতিটা কাটিয়ে ওঠার আশায় ছিলেন ঈদের টানা ছুটিতে ব্যবসায়ীরা।

তবে পুলিশ সুপার জাকির হোসেন জানান, পর্যটকরা যাতে নিরাপদে ভ্রমণ করতে পারে সে লক্ষ্যে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়াও ট্যুরিস্ট পুলিশ রয়েছে, তারা সার্বক্ষণিক টহল দিচ্ছে। আর এখানে এসে কোনো পর্যটক যাতে কোনো ধরনের হয়রানির শিকার না হয় সেই দিক সজাগ দৃষ্টি রাখা হয়েছে।

 

সৌন্দর্যের লীলা ভূমি বান্দরবান। নীলঘিরি, নীলা চল, মেঘলা, চিম্বুক পাহাড়সহ অসংখ্য পর্যটন স্পট রয়েছে এখানে। পাহাড়ের সঙ্গে মেঘের মিতালী সব কিছুই যেন অসাধারণ। বর্ষা মৌসুম হওয়ায় পাহাড়ের সৌন্দর্যও বেড়েছে দ্বিগুণ।

বান্দরবানে পর্যটন ব্যবস্যার ওপর নির্ভরশীলরা মনে করছেন শিগগিরই খরা কেটে গিয়ে আবার পর্যটকেরা বান্দরবানমুখী হবে। পর্যটকের পদচারণায় আবার মুখরিত হবে বান্দরবান।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর